মৃত কুনকি। —নিজস্ব চিত্র।
স্যালাইন চলছিল দিন তিনেক ধরে। ক্রমাগত ওষুধও। তবে শেষ রক্ষা হল না। মঙ্গলবার রাতে শেষ তক মারাই গেল ৭২ বছরের সিংহেশ্বরী। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে অবসর নিয়েছিল কুনকি সিংহেশ্বরী। দমনপুর রেঞ্জের চেকো বিটে বুধাবর সকাল থেকেই তাই শোকের মেঘ। বনকর্তা থেকে আম-কর্মী, মাহুতের কোয়ার্টার কিংবা কর্মী আবাস জটলায় সিংহেশ্বরীর ছলে যাওয়ার কথা। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৭০ সালে বিহারের সহারা থেকে সিংহেশ্বরীকে কিনেছিল বনবিভাগ। প্রথমে তার ‘পোস্টিং’ ছিল জলদাপাড়া। কুনকি হয়ে ওঠার প্রশিক্ষণর সেখানেই। তার পর ঠিকানা বদলে যায় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে। বনকর্মীরা জানাচ্ছেন, জঙ্গলটা হাতের তালুর মতো চিনত সে। শুঁড় দুলিয়ে বুঝে যেত সামনে বিপদ নাকি নিছকই আটপৌরে হরিণের পাল। কেজি চারেক চাল দু-কেজি ডাল, নুন-গুড় সঙ্গে কলাগাছ ছিল তার নিত্য খাদ্যতালিকায়। ২০০৩ সালে সরকারী নিয়মে ষাট বছর পূর্ণ হওয়ায় অবসর নেয় সিংহেশ্বরী। সেই থেকে চেকোবিট ছিল তার আস্তানা। অবসর নিলেও পেনশন হিসবে দৈনিক বরাদ্দ নিয়মিত পেত ওই কুনকি। সিংহেশ্বরী মারা যাওয়া মন মরা হয়ে পড়েছে মাহুত সুভাষ রাভা। বলছেন, ‘‘কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে জানেন!’’ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিএফডি অপূর্ব সেন বলেন, “এর আগেও বার কয়েক অসুস্থ হয়েছিল সিংহেশ্বরী। সে যাত্রায় ফেরানো গিয়েছিল তাকে। এ বার আর হল না।’’