বৃষ্টি নেই, কুলিকে এসে ফিরছে পাখি

বৃষ্টির দেখা নেই রায়গঞ্জে। পক্ষিনিবাসের কুলিক নদীর খালে জল শুকিয়েছে। এই আবহাওয়ায় নিজেদের মানিয়ে নিতে না পেরে সম্প্রতি কিছু পরিযায়ী পক্ষিনিবাসে এসে ফিরে গিয়েছে। এ বছর পক্ষিনিবাসে পরিযায়ী পাখিদের টানতে পাম্প বসিয়ে পক্ষিনিবাসের নদীখালে কৃত্রিমভাবে জল সরবরাহের কাজে নেমেছে বন দফতর। গত এক সপ্তাহ ধরে রাতভর দফায় দফায় বেশ কয়েকবার নদী খালে পাম্প দিয়ে জল দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৪ ০১:৫২
Share:

বৃষ্টির দেখা নেই রায়গঞ্জে। পক্ষিনিবাসের কুলিক নদীর খালে জল শুকিয়েছে। এই আবহাওয়ায় নিজেদের মানিয়ে নিতে না পেরে সম্প্রতি কিছু পরিযায়ী পক্ষিনিবাসে এসে ফিরে গিয়েছে। এ বছর পক্ষিনিবাসে পরিযায়ী পাখিদের টানতে পাম্প বসিয়ে পক্ষিনিবাসের নদীখালে কৃত্রিমভাবে জল সরবরাহের কাজে নেমেছে বন দফতর। গত এক সপ্তাহ ধরে রাতভর দফায় দফায় বেশ কয়েকবার নদী খালে পাম্প দিয়ে জল দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই নদীখালে হাঁটুজল রয়েছে। আগামী সপ্তাহে বন দফতরের তরফে ফের একই কায়দায় নদীখালে জল সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বিপর্ণ দত্ত বলেন, “অনাবৃষ্টি জেরে পক্ষিনিবাসের নদীখালের জল শুকিয়ে গিয়েছিল। নদীখালে জল না থাকলে নির্দিষ্ট সময়ে পরিযায়ী পাখিরা পক্ষিনিবাসে আসবে না। পাম্পমেশিন বসিয়ে নদীখালে জল সরবরাহের কাজ শুরু করা হয়েছে।”

Advertisement

পক্ষিনিবাসের তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নদী-খাল রয়েছে। গত ছয় মাস ধরে অনাবৃষ্টি ও তিন সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা প্রবল দাবদাহের জেরে কুলিক নদীর জল কোথাও হাঁটু, আবার কোথাও গোড়ালি সমানে এসে ঠেকেছে। পরিযায়ী পাখিদের স্বার্থে ওই নদী কেটেই পক্ষিনিবাসের ভিতরে খাল তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে নদীর জলস্তর তলানিতে ঠেকায় নদী খালে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দ্বিপর্ণবাবু জানান, নদীখালে জল না থাকলে পরিযায়ী পাখিরা পক্ষিনিবাস থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাই জোর বৃষ্টি শুরু না হওয়া পর্যন্ত পাম্পে নদী খালে জল সরবরাহের কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রতি বছর মে মাস নাগাদ দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ওপেন বিলস্টক, নাইট হেরণ, করমোন্যান্ট, ইগ্রেট সহ বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি কুলিক পক্ষিনিবাসে আসে। প্রজননের পর জানুয়ারি মাসে ফিরে যায়। পরিযায়ী পাখিদের দেখতে প্রতিবছর রাজ্যের নান জেলা-সহ দেশ বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকেরা পক্ষিনিবাসে ভিড় জমান। পরিযায়ীরা পক্ষিনিবাসের কয়েকশা গাছে বাসা বেঁধে ডিম ফুটিয়ে ছানাদের জন্ম দেয়। নদী খালের নানা মাছ, জলজপ্রাণী ও শ্যাওলা খেয়ে বেঁচে থাকে। নদীর খালের জলকে ঘিরেই স্নান, প্রজনন সবই চলে পরিযায়ীদের। কিন্তি এবারে খালে জল কম থাকায় পাম্প মেশিন বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় বন দফতর।

Advertisement

রায়গঞ্জে হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ার্স ও ট্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কৌশিক ভট্টাচার্য জানান, পরিযায়ীদের স্বার্থে বন দফতরের নদী খালে জল সরবরাহের কাজ শুরু করে অনুকূল পরিবেশ চেষ্টা প্রংশসনীয়। পিপল ফর অ্যানিমেল-২-এর ইউনিট সম্পাদক অজয় সাহা জানান, বহু পরিযায়ী পাখি পক্ষিনিবাসে এসে ফিরে গিয়েছে। বৃষ্টি শুরু না হওয়া পর্যন্ত বন দফতরকে নদী-খালে জল সরবরাহ করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন