মশাল, পটকা, হল্লা পার্টি কোনও কিছুকে তোয়াক্কা না করে গোটা গ্রামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল এক বুনো দাঁতাল। টানা ৪৫ মিনিট ধরে হামলা চালিয়ে তিনটি বাড়ি ভেঙে তছনছ করে দেওয়ার পরে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিল সেটি। অবশেষে শূন্যে গুলি করে তাকে জঙ্গলমুখো করলেন বনকর্মীরা। শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কুমারগ্রামের পুখুরিগ্রাম সুরেশপল্লিতে।
বন দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কুমারগ্রাম বনাঞ্চল থেকে দাঁতালটি খাবারের লোভে বেরিয়ে আসে। গ্রামে এসেই আনন্দ সূত্রধর নামে এক গ্রামবাসীর বাড়িতে ঢুকে তাঁর একমাত্র ঘরটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। ঘরে মজুত রাখা চাল, নুনও খেয়ে নেয় সে। আনন্দবাবু দুই সন্তান ও স্ত্রী-সহ ঘুমোচ্ছিলেন। ঘর ভাঙার মচমচ আওয়াজে তাঁদের ঘুম ভেঙে যায়। কোনও মতে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন তাঁরা। এর পর দুই ভাই নেপাল বর্মন ও গোপাল বর্মনের দু’টি রান্নাঘর ভেঙে হাঁড়ি, বাসন দুমড়ে-মুচড়ে পান্তা ভাত, নুন খেয়ে নেয় সে। উঠোনের কাঁঠাল গাছ থেকে কাঁঠালও পেড়ে খায় ওই দাঁতাল।
গ্রামবাসী তন্ময় দাস, তেজেন দাস ও পরিতোষ দাসেরা বলেন, ‘‘আনন্দদা ‘মহাকাল মহাকাল’ চিৎকার শুরু করতেই বুঝতে পারি গ্রামে মহাকাল (হাতিকে গ্রামের মানুষ এই নামে ডাকেন) ঢুকেছে। সবাই মিলে মশাল জ্বালিয়ে পটকা ফাটাতে শুরু করি। টিন বাজিয়ে হল্লা শুরু করা হয়। কোনও কিছুকেই তোয়াক্কা করছিল না বুনোটি। জঙ্গলমুখো হওয়ার বদলে উলটে আমাদের দিকে বারবার তেড়ে আসছিল।’’ খবর পেয়ে অল্প সময়ের মধ্যে কুমারগ্রাম রেঞ্জের বনদফতরের কর্মীরা চলে আসেন। এর পরেই দাঁতালকে জঙ্গলমুখো করতে পাঁচ রাউন্ড শূন্যে গুলি করেন বনকর্মীরা। রাত সওয়া ১টা নাগাদ সেটি জঙ্গলমুখো হয়।
কুমারগ্রামের রেঞ্জ অফিসার আশিষ বিশ্বাস জানান, “কোনও ভাবে বুনো দাঁতালটিকে জঙ্গলমুখো না করতে পেরে শূন্যে গুলি করা হয়। গুলির আওয়াজে সে জঙ্গলে ফিরে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে দ্রুত।’’