দলমার দাঁতালের দল।
বিষ্ণুপুর শহর লাগোয়া জঙ্গল থেকে বুধবার রাতে দ্বারকেশ্বর নদ পার হয়েছে দলমার প্রায় ৫০টি হাতির দল। যাওয়ার পথে নদী পাড়ের গ্রাম রামচন্দ্রপুরে বুধবার রাতে ওই হাতির পালের হামলায় চুরমার হয়েছে ১৩টি কাঁচাবাড়ি। মাটি চাপা পড়ে অল্পবিস্তর জখম হয়েছেন বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হরেন বাগদির স্ত্রী অনিমাদেবী।
আচমকা হাতি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি করে দেওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ওই গ্রামে। রামচন্দ্রপুর বাগদিপাড়ার বাসিন্দা কানাই বাগদি, উত্তম বাগদি, সাধন বাগদিরা বলেন, “হাতি যে এ দিকে আসছে, আমাদের তা আগাম জানানো হয়নি। ফলে, আমরা সতর্ক হওয়ার সুযোগ পাইনি। আমাদের বাড়ি-ঘরদোর ভেঙে ধান-চাল খেয়ে সব তছনছ করে দিয়ে গেল হাতিরা।” তাঁদের দাবি, দ্রুত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করুক বন দফতর। বৃহস্পতিবার ওই গ্রামে ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিন দেখতে গিয়েছিলেন বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ দুলাল নায়েক। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র এই গ্রামেই হাতির হামলায় ১৩টি বাড়ি ভাঙচুর হওয়ার রিপোর্ট পেয়েছি। আমাদের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যে স্ত্রী দেয়াল চাপা পড়েছিলেন। গ্রামের ছেলেরা তাঁকে উদ্ধার করে আনে। বন দফতরকে সব জানাবো।”
এ দিকে পুরো দলটি না যাওয়ায় এখনও চিন্তায় রয়েছেন বিষ্ণুপুর শহরের বাসিন্দারা। বুধবার রাতে বাইপাসের একটি পেট্রোল পাম্পের পাশে চলে এসেছিল কিছু হাতি। ওই পাম্পের মালিক অসিত চন্দ্র বলেন, “রীতিমতো ভয়ের মধ্যে রয়েছি। একদম পাশেই চলে এসেছিল কয়েকটা দাঁতাল। আশপাশের মানুষ বহু চেষ্টা করে তাদের তাড়ায়।” বিষ্ণুপুরের রেঞ্জ অফিসার প্রকাশ ওঝা বলেন, “প্রায় ৫০টি হাতি দ্বারকেশ্বর পার হয়ে ও-পারে গেলেও আরও প্রায় ২০টি হাতি বিষ্ণুপুর শহর লাগোয়া বনাঞ্চলে থেকে গিয়েছে। সেগুলিই ওই পাম্পের কাছাকাছি বিড়াই নদের সেতু পর্যন্ত চলে এসেছিল। আমরা ফের রাতের দিকে ওই হাতিগুলিকে খেদানোর চেষ্টা করব।” বুধবার রাতেই সোনামুখীর রামপুর গ্রামেও ঢুকেছিল কিছু হাতি। সেগুলিকেও তাড়ানোর দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।