স্কুলে দাঁতালের হানা, গুঁড়িয়ে গেল অফিসঘর

বিশালাকার এক দাঁতাল হামলা চালিয়ে গুড়িয়ে দিল স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের অফিস ঘর। রবিবার রাতে ডুয়ার্সের বৈকন্ঠপুর বনবিভাগের তারঘেরা রেঞ্জের মেচবস্তির ফরেস্ট ভিলেজ প্রাথমিক স্কুলে হানা দেয় দাঁতালটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৫ ০২:১৮
Share:

এমনই হাল হয়েছে স্কুলের। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।

বিশালাকার এক দাঁতাল হামলা চালিয়ে গুড়িয়ে দিল স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের অফিস ঘর। রবিবার রাতে ডুয়ার্সের বৈকন্ঠপুর বনবিভাগের তারঘেরা রেঞ্জের মেচবস্তির ফরেস্ট ভিলেজ প্রাথমিক স্কুলে হানা দেয় দাঁতালটি। অফিস ঘরে থাকা চারটি আলমারি, চেয়ার টেবিল বে়ঞ্চ, বিদ্যুতের সুইচবোর্ড কিছুই ভাঙতে বাদ রাখে নি দাঁতালটি।

Advertisement

রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ কাঠামবাড়ি এবং তারঘেরার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এক মাকনাকে সঙ্গে নিয়ে মেচবস্তি এলাকায় ঢুকে পড়ে দাঁতালটি। বেশকয়েকটি বাড়ি ঘর পার হয়ে এসে স্কুলবাড়িকেই নিশানা করে দাঁতালটি। এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষক রিম শৈব্য স্কুল লাগোয়া এলাকাতেই থাকেন। যেসময় হাতির হামলা চলছিল সে সময় বাড়িতেই ছিলেন রিম। তাঁর কথায়, ‘‘বস্তিতে যে বিরাট দাঁতালটি ঢুকেছে তা বুঝতে পেরেছিলাম। কোনও রকমে বাড়ির ভেতরেই চুপ করে বসে ছিলাম। স্কুলের দিক থেকে দাঁতালের গর্জনও কানে আসছিল। বেশ কিছুক্ষণ পর বনকর্মীরা দাঁতাল আর মাকনাকে তাড়াতে আসলে আমিও স্কুলের সামনে পৌঁছাই। দাঁতালটি স্কুলের অফিসঘরের দেওয়াল ভেঙে ভেতরে তাণ্ডব চালাচ্ছিল।’’ সকলের সম্মিলিত আওয়াজে ভয় পেয়ে ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে দাঁতালটি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিনোদ রায় বলেন ‘‘অফিসঘরের ভেতরে স্কুলের প্রচুর কাগজপত্র, পড়ুয়াদের পড়ানোর উপকরণ, খেলার সামগ্রী সব থাকে। এছাড়া মিড ডে মিলের বোর্ড ও চালও ছিল। চাল বিশেষ না খেলেও অফিস ঘরের বেশির ভাগ জিনিসই নষ্ট করেছে দাঁতালটি।’’ জানা গিয়েছে গত তিনবছরে এই প্রাথমিক স্কুলটিতে মোট চারবার হামলা চালায় হাতিটি। স্কুলের আরেক শিক্ষক অলোক বসুর কথায়, ‘‘হাতিই এখন স্কুলের সবথেকে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে , স্কুলের চারদিকে বড় পরিখা কেটে দেওয়া হলে হয়তো সমস্যার সমাধান হতে পারে।’’

Advertisement

গত ২অক্টোবর মেচবস্তির এই স্কুলটির খুব কাছেই হাতি তাড়ানোর নজরমিনারে ছয় যুবক যখন রাতপাহারা দিচ্ছিলেন সেই সময় একটি দাঁতাল নজরমিনারটি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। অল্পবিস্তর জখম হন ওই যুবকেরা। দুটি ঘটনাতেই একটিই দাঁতাল জড়িত বলে জানান তারঘেরা রেঞ্জের রেঞ্জ আধিকারিক মুকেশ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘একটিই দাঁতাল এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করেছে। বনকর্মীদেরও মানছে না দাঁতালটি। এই দাঁতালটির সঙ্গে আবার একটি মাকনাও জুটেছে। এতে সমস্যা আরও বেড়েছে।’’

স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পৌঁছেছে প্রশাসনিক স্তরেও। মালবাজারের মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতি জানান পুজোর ছুটির মধ্যেই যাতে স্কুলটি প্রাথমিক ভাবে সারাই করার ব্যবস্থা করা যায় তা দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement