পুরুলিয়ার মানবাজার এলাকা থেকে বাঁকুড়ায় ঢোকা হাতির দলটি সোমবারও রানিবাঁধের পুড্ডি পঞ্চায়েত এলাকায় ঘোরাঘুরি করল। রবিবার ভোরে ওই দলটি দক্ষিণ বাঁকুড়ায় ঢুকে পড়ে। সোমবার দিনভর হাতির দল মানবাজারের সীমানা লাগোয়া রানিবাঁধ থানার গোপালপুর, নারকোলি, পুড্ডি-সহ বিভিন্ন গ্রামে ঘোরাঘুরি করেছে। বনকর্মীরা তাদের পুরুলিয়ায় ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করলেও হাতিদের ভাবগতিক দেখে মনে হচ্ছে, তারা আপাত কিছুদিন এখানেই ঘাঁটি গাড়বে।
ডিএফও (বাঁকুড়া দক্ষিণ) দেবাংশু মল্লিক বলেন, “ওই হাতির দলটিকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বনকর্মীরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করছেন। তবে মুকুটমণিপুর জলাধার লাগোয়া এলাকায় তারা এখন আস্তানা গেড়েছে। হাতির দল যাতে লোকালয়ে ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি করতে না পারে, সেজন্য বনকর্মীরা সজাগ রয়েছেন।” এই দলে চারটি শাবক, দাঁতাল সহ ১৭-১৮ টি হাতি রয়েছে।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, চলতি বছরে ১৭-১৮টি হাতির দল ময়ূরঝর্না থেকে বিষ্ণুপুর হয়ে গঙ্গাজলঘাটিতে আস্তানা গেড়েছিল। মাসখানেক আগে গঙ্গাজলঘাটির একটি আশ্রমে ঢুকে এক সাধুকে শুঁড়ে তুলে পা দিয়ে পিষে মেরেছিল ওই দলের এক দাঁতাল। গত বুধবার ১৭টি হাতির দলটি গঙ্গাজলঘাটি রেঞ্জ থেকে পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি ব্লক এলাকায় ঢুকে পড়ে। চারদিন ধরে সেখানে তাণ্ডব চালানোর পরে পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শনিবার রাতে দলটি মানবাজারের দোলাডাঙার ভিতর দিয়ে রানিবাঁধের পুড্ডি পঞ্চায়েতের নারকোলি গ্রামে পৌঁছয়। সেখানেও বেশ কিছু জমির ফসল নষ্ট করে হাতিরা। রবিবার দুপুরে মুকুটমণিপুর জলাধারে নেমে জলকেলিতে মেতে ওঠে তারা। হাতি দেখতে জলাধারের পাড়ে গ্রামের মানুষ ভিড় করেন। এ দিনও এলাকায় হাতি দেখতে উৎসাহী মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
তবে, হাতির দল পুড্ডি পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও রয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন গ্রামবাসী। তাঁদের বক্তব্য, হাতিরা দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম লাগোয়া এলাকায় থাকলে অঘটন ঘটতে পারে। পাশাপাশি জমিতে নেমে ফসল নষ্ট করছে হাতিরা। ডিএফও বলেন, “হাতিরা যে পথে এসেছে, সেই পথেই তাদের ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চলছে। তবে, গ্রামের মানুষ অযথা ভিড় করায় হাতিগুলিকে অন্যত্র সরানো যাচ্ছে না। হাতিদের অযথা উত্ত্যক্ত না করার জন্য গ্রামবাসীদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।”