প্রত্যেক ত্রৈমাসিকেই বদলে যায় ঘুমের প্যাটার্ন।
প্রেগন্যান্সিতে ক্লান্তি, সারা দিন ঘুম পাওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। অথচ সারা দিন ক্লান্ত লাগলেও রাতে ঘুমের অস্বস্তি, বার বার প্রস্রাব পাওয়ার কারণে ঘুম ভেঙে যাওয়ার সমস্যাও স্বাভাবিক। প্রোজেস্টেরন হরমোনের তারতম্যের কারণে ক্লান্তি, আলস্যে স্লিপিং প্যাটার্নের পরিবর্তন হয়। চিকিত্সকরা গর্ভবতী মহিলাদের দিনে অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমনো উচিত। জেনে নিন প্রেগন্যান্সির কোন সময় কী কারণে ঘুমের সমস্যা হতে পার। কী ভাবেই বা সমস্যা কাটিয়ে ঘুম পুষিয়ে নেবেন।
প্রথম ত্রৈমাসিক
প্রেগন্যান্সির প্রথম ত্রৈমাসিকে মাথা ঘোরা, বমি ভাব, মর্নিং সিকনেস ও অন্যান্য হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে ঘুমোতে সমস্যা হওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। এই সময় দ্রুত শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হওয়ার কারণে, এবং রাতে ঘুম না হওয়ায় সারা দিন ক্লান্ত বোধ হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। তাই প্রথম ত্রৈমাসিকে অধিকাংশ মহিলারই প্রায়শই ঘুম পায়। রাতে বার বার প্রস্রাব পাওয়ার কারণে ঘুমের ব্যাঘাত কমাতে চাইলে সন্ধের পর থেকে জল বা অন্যান্য ফ্লুইড কম খান। আবার সকালের দিকে খুব বেশি খিদে পাওয়ার কারণেও ঘুম ভেঙে যেতে পারে। ঘুমোতে যতই সমস্যা হোক প্রেগন্যান্সিকে স্লিপিং পিল বা কোনও সাপ্লিমেন্ট খাবেন না।
আরও পড়ুন: প্রেগন্যান্সিতে কী ভাবে বদলাতে থাকে শরীর?
দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক
এই সময় মর্নিং সিকনেস, বমি বমি ভাব সব কিছুই নিয়ন্ত্রণে থাকে। শরীর ধীরে ধীরে পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে থাকে। বার বার প্রস্রাব পাওয়া, মুড সুইং, স্তনে ব্যথা, উত্কণ্ঠা এই সময় আর বড় সমস্যা মনে হয় না। যদিও এই সময় রাতে ঘুমের মধ্যে পায়ের পেশীতে টান ধরতে পারে। যদি শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকে বা রক্তাল্পতায় ভোগেন, তা হলে সন্ধের দিকে পায়ের অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে। এই সময় ঘুমোতে অসুবিধা হলে কিছুক্ষণ ঘরে হেঁটে নিন।
যত সময় এগোতে থাকে জরায়ু বড় হতে থাকে। জরায়ুতে চাপ পড়ার কারণে বুকজ্বালা, বদহজমের সমস্যা হতে পারে। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের শেষ দিকে পেট অতিরিক্ত বড় হয়ে যাওয়ার কারণে ঘুমোতে সমস্যা হবেই। বাঁ দিক ফিরে শোওয়ার পরামর্শ দেন চিকিত্সকরা।
আরও পড়ুন: প্রেগন্যান্সিতে ঠিক কতটা ঘুম জরুরি?
তৃতীয় ত্রৈমাসিক
শেষ ত্রৈমাসিকে যদি ঘুমোতে কোনও সমস্যা না হয় তা হলে আপনি ভাগ্যবতী। অধিকাংশ মহিলাই এই সময় অল্প সময়ের জন্যেও ঘুমোতে পারেন না। এই সময় বার বার প্রস্রাব পাওয়ার সমস্যাও ফিরে আসে। শরীরের ব্যথাও বাড়তে পারে। পেটের নীচে, পিঠের নীচে, দুই হাঁটুর মাঝে নরম বালিশ রেখে আরামদায়ক অবস্থানে ঘুমনোর চেষ্টা করুন। এতে ব্যথাও কমবে। প্রেগন্যান্সির শেষের দিকে গর্ভযন্ত্রণা ও ডেলিভারির চিন্তাও অনেক সময় ঘুমে বাধা দেয়।