রক্তাল্পতা, কম ওজনের সমস্যায় অল্পবিস্তর বিশ্বের সব দেশের মহিলারাই ভোগেন। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে যে সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই বেশি। যে কারণে বিশ্বের অধিকাংশ মহিলারই গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যকর ওজন থাকে না বলে জানাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন সমীক্ষা।
গবেষণার জন্য সারা বিশ্বের ১৩ লক্ষ অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে বেছে নেন গবেষকরা। দেখা যায়, এদের মধ্যে অর্ধেক সংখ্যক মহিলার অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ওজন, স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বেড়ে গিয়েছিল। বাকি অর্ধেক সংখ্যকের স্বাভাবিকের তুলনায় ওজন অনেকটাই কম ছিল। এই গবেষণার মুখ্য গবেষক হেলেনা টিড জানান, যাদের গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ওজন বৃদ্ধি হয় না তাদেরই প্রি-ম্যাচিওর ডেলিভারির আশঙ্কা থাকে। আবার যাদের অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায় তাদের সিজারিয়ান ডেলিভারির প্রবণতা বাড়ে।
আরও পড়ুন: ‘কাপ’ই নতুন বন্ধু এ রাজ্যের মেয়েদের
মোট ৫ হাজার ৩০০ জন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা যায় গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে ৩৮ শতাংশ মহিলার ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বেড়ে গিয়েছে, ৫৫ শতাংশের ওজন স্বাভাবিক বেড়েছে ও ৭ শতাংশের স্বাভাবিক ওজন বাড়েনি। যাদের ওজন প্রথম ত্রৈমাসিকেই অতিরিক্ত বেড়ে যায় পরবর্তী পর্যায়ে ওজন আরও বাড়তে থাকে। টিড সতর্ক করছেন, প্রথম ত্রৈমাসিকে ওজন বাড়াই উচিত নয়। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে সামান্য ওজন বাড়া স্বাভাবিক, এবং তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আরও কিছুটা ওজন বাড়া উচিত। মাথায় রাখতে হবে আন্তঃসত্ত্বা মানে কিন্তু আপনি দুজনের খাবার খাচ্ছেন না। তাই ক্যালোরির পরিমাণ অল্পই বাড়ানো উচিত। এই পরীক্ষার মাধ্যমে আমাদের উদ্দেশ্য গর্ভধারণের আগে, গর্ভাবস্থায় এবং সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর মহিলাদের স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করা। চিকিত্সক ও মায়েদের মধ্যে সুস্থ আলোচনা, জীবনযাপনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সাহায্যই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করবে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মা যত সুস্থ থাকবেন সুস্থ সন্তানের জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। আর যত বেশি সুস্থ শিশুর জন্ম হবে, উন্নত হবে সার্বিক স্বাস্থ্যের মান।