প্রতিটি দিনই নারী দিবস

মুসলিম পরিবার। ফলে ছোটবেলা থেেকই নানান নিয়ম, আচারের মধ্যে  দিয়ে যেতে হত।  আর এ সবের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই চিহ্নিত হয়ে যেতাম বিদ্রোহী হিসেবে। তার ফলটা শ্বশুরবাড়িতে এসেও টের পেয়েছিলাম। মুসলমান মেয়েদের পারিবারিক অত্যাচার থেকে বের করে আনতে গিয়ে এক সময়ে নিজেও একঘরে হয়ে পড়েছিলাম। সমাজ থেকে দূরে জঙ্গলের আড়ালেই ছিল ঘর।

Advertisement

জাকিরুন বেগম (সমাজকর্মী)

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০২:১৪
Share:

বড় গরীব ছিলাম আমরা। বরাবরই। আমরা মানে নয় ভাইবোন, আর মা-বাবা। তবে ছোটবেলা থেকেই প্রবল দারিদ্রের গুঁতোগুঁতির মধ্যেই অন্যায় কিংবা অন্যের কষ্ট দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়তাম। এ শিক্ষাটা বাড়িতেই পেয়েছিলাম।

Advertisement

মুসলিম পরিবার। ফলে ছোটবেলা থেেকই নানান নিয়ম, আচারের মধ্যে দিয়ে যেতে হত। আর এ সবের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই চিহ্নিত হয়ে যেতাম বিদ্রোহী হিসেবে। তার ফলটা শ্বশুরবাড়িতে এসেও টের পেয়েছিলাম। মুসলমান মেয়েদের পারিবারিক অত্যাচার থেকে বের করে আনতে গিয়ে এক সময়ে নিজেও একঘরে হয়ে পড়েছিলাম। সমাজ থেকে দূরে জঙ্গলের আড়ালেই ছিল ঘর।

বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহের িবরোধিতা করলেই এমন ফতোয়া নেমে আসত আমার উপরে। তা বলে হাত-পা গুিটিয়ে তো বসে থাকতে পারি না। নারী নির্যাতন, তালাক দেওয়া মহিলাদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টার মাশুল গুনতে হয়েছে ঢের। গালমন্দ, অপমান, লাঞ্ছনা, ব্রাত্য হয়ে থাকা—দেখতে হয়েছে সবই।

Advertisement

শারীরিক নির্যাতিতও হতে হয়েছে। েসই সব বেড়া ডিঙিয়ে আমরা অনেকটা পথ এসেছি ঠিকই, কিন্তু এখনও অনেকটা রাস্তা বাকি। নির্যাতিত-নিপীড়িত মেয়েদের পাশে দাঁড়াতে হবে আমাদেরই। গ্রামের ওই অসহায় মুখগুলো আমাদের দিকেই তাকিয়ে থাকে। এর জন্য সরকারি সুবিধে কিংবা সুরক্ষা কিছুই পাই না আমরা। সে সবের অবশ্য তোয়াক্কা করার বান্দা আমরা নই।

ঘর ছেড়েছিলাম, স্বাচ্ছন্দ ছেড়েছিলাম যে বিশ্বাসে, তাকে ছাড়তে পারব না। তাই নারী দিবস আলাদা করে আমার কাছে তেমন তাৎপর্য কিছু নেই। আমার কাছে প্রতিটি দিনই নারী দিবস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন