ইস্টবেঙ্গলে এল চকলেট উৎসব

যে কোনও টিম লিগের শুরুতেই যদি এ রকম চমকে দেওয়ার মতো পারফরম্যান্স করে তা হলে সেখানে উৎসব হবে না, তা হয় নাকি? তা সে যতই খালিদ জামিলের মতো উচ্ছ্বাসহীন কোচ থাকুন।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৫৫
Share:

প্রস্তুতি: ইস্টবেঙ্গল প্র্যাকটিসে কোচ খালিদের সঙ্গে প্লাজা-সুরাবুদ্দিনরা। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

তিন ম্যাচে জোড়া হ্যাটট্রিক!

Advertisement

টানা জয় এবং ১১ গোল!

যে কোনও টিম লিগের শুরুতেই যদি এ রকম চমকে দেওয়ার মতো পারফরম্যান্স করে তা হলে সেখানে উৎসব হবে না, তা হয় নাকি? তা সে যতই খালিদ জামিলের মতো উচ্ছ্বাসহীন কোচ থাকুন।

Advertisement

ইস্টবেঙ্গল ড্রেসিংরুমে সবার আগে হঠাৎ-ই সেই উৎসব শুরু করে দিলেন বজবজের সুরাবুদ্দিন মল্লিক। বঙ্গসন্তানকে দেখে তাঁর সঙ্গী হলেন কেরলের সুহেইর ভিপি-ও।

দুই হ্যাটট্রিকের মালিকের হাত দিয়েই লাল-হলুদ ড্রেসিংরুমে শুরু হয়ে গেল চকলেট উৎসব!

পরিবর্ত ফুটবলার হিসাবে নেমে শনিবার পিয়ারলেসের বিরুদ্ধে তিন গোল করার পর বাড়ি ফিরে সে দিনের ম্যান অব দ্য ম্যাচ সুরাবুদ্দিন সিদ্ধান্ত নেন, পর দিন সকালে কোচিং স্টাফ, সতীর্থ ফুটবলার ও সবার সঙ্গে সেই টাকা অন্যভাবে ভাগ করে নেবেন। সেই মতোই রবিবার সকালে নামী কোম্পানির গোটা পঞ্চাশেক চকলেট নিয়ে তিনি হাজির হন তাঁবুতে। অনুশীলনের আগে ও পরে সেটি সবার হাতে তুলে দেওয়ার পর কী হল সুরাবুদ্দিনের মুখেই শোনা যাক। ‘‘আমাকে চকলেট দিতে দেখে কেউ আমাকে জড়িয়ে ধরল, কেউ হাততালি দিল। আমনার মতো কেউ কেউ বলল, পরের দিন আবার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হতে হবে। এত ভাল লাগছিল। আসলে আমার সাফল্য মানে তো টিমের সাফল্য। সবার সঙ্গে সেটা ভাগ করলাম,’’ মঙ্গলবার বলছিলেন গোয়ায় গিয়ে পুনর্জন্ম নিয়ে ফিরে এসে চমকে দেওয়া স্ট্রাইকার।

আরও পড়ুন: বদলা নিয়ে শুরু সিন্ধুর অভিযান

মোহনবাগানের আনসুমানা ক্রোমা কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে প্রথম দিন ম্যান অব দ্য ম্যাচের পাঁচ হাজার টাকা পেয়েই তা তুলে দিয়েছিলেন কোচের হাতে। সবাইকে ভাগ করে দেওয়ার জন্য। এর পর থেকে এটা চালু হয়ে গিয়েছে সবুজ-মেরুনে।

সুরাবুদ্দিনের পর এই মহানুভবতা সংক্রামিত ইস্টবেঙ্গলেও। লিগের প্রথম ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছিলেন সুহেইর ভিপি। ম্যাচ-সেরার টাকা নিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সতীর্থ স্ট্রাইকারকে দেখে সোমবার সুহেইরও বাক্স করে নিয়ে আসেন দামি চকলেট। যা থেকে স্পষ্ট, খালিদ জামিলের নির্দেশ না থাকলেও লাল-হলুদে চকলেট উৎসব কার্যত চালু হয়ে গেল।

কিন্তু কেন বাছলেন চকলেট? সুরাবুদ্দিন বললেন, ‘‘চকলেটে ক্যালোরি থাকে। সবাই পছন্দ করে, তাই ওটাই বাছলাম। পরের বার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলে আবার এ রকম কিছু আনব।’’ শুধু চকলেট দেওয়াই নয়, নিজের পুরস্কার অর্থ থেকে মালিদের হাতেও কিছু টাকা তুলে দিয়ে মহানুভবতা দেখান এক বছর আগে কলকাতা থেকে বিতাড়িত সুরাবুদ্দিন।

টিমে একাত্মতা বাড়ানোর অঙ্গ হিসাবে চকলেট-কে হাতিয়ার করা সুরাবুদ্দিন অবশ্য জানেন না আজ বুধবার সাদার্ন সমিতির বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে থাকবেন কি না? বললেন, ‘‘আমাকে যখন কোচ নামাবেন তখন ভাল খেলার চেষ্টা করব।’’ খালিদ জামিল অবশ্য টিম নিয়ে কোনও কথা বলেননি। আগের ম্যাচ-সেরাকে নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেছেন, ‘‘এখনও ঠিক করিনি।’’ বরং মোহনবাগানের কাছে তিন গোল খাওয়া হেমন্ত ডোরার ভাঙা টিম নিয়েও সতর্ক তিনি। বলে দিলেন, ‘‘ডার্বি নিয়ে ভাবছি না। আমি কালকের সাদার্ন সমিতি ম্যাচ নিয়েই ভাবছি।’’

আসলে ডার্বির ভাবনা নয়, ড্রেসিংরুমে চকলেট উৎসব যাতে চালু থাকে, সেটাই নিশ্চিত করতে চান খালিদ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement