বিলবাওয়ের টুকরো

এমএসএনের ডেরায় হানা দেওয়ার পাশাপাশি আনন্দবাজার ঢুঁ মেরেছিল বার্সেলোনা থেকে বিমানে এক ঘণ্টার দূরে অ্যাথলেটিক বিলবাও-তেও। মারাদোনা-কাণ্ড থেকে পিচিচি খেতাব, বাস্ক ঐতিহ্যতে যে স্প্যানিশ ক্লাবের জায়গা লা লিগায় স্বতন্ত্র। ঘুরে দেখলেন কৌশিক দাশ। ‘বুচার অব বিলবাও’ নামটার সঙ্গে ফুটবল জনতার পরিচয় অনেক দিন ধরেই। যিনি লা লিগা ম্যাচে দিয়েগো মারাদোনাকে প্রায় পিটিয়েছিলেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৩
Share:

মারাদোনাকে রোখা সেই সান্তিয়াগো উরকুইয়া।

মারাদোনার সঙ্গে ঘুসোঘুসি

Advertisement

‘বুচার অব বিলবাও’ নামটার সঙ্গে ফুটবল জনতার পরিচয় অনেক দিন ধরেই। যিনি লা লিগা ম্যাচে দিয়েগো মারাদোনাকে প্রায় পিটিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর এক সতীর্থের সঙ্গেও মারাদোনা ঝামেলায় জড়িয়েছিলেন, কোপা দেল রে-র ফাইনালে। ১৯৮৪-র ওই ম্যাচে মারাদোনাকে আটকানোর দায়িত্ব ছিল অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের ডিফেন্ডার সান্তিয়াগো উরকুইয়ার উপর। এবং সেই দায়িত্ব পালন বেশ ‘কড়া’ ভাবেই করেছিলেন তিনি। ফাইনালে বার্সেলোনা ০-১ হারার পর মারাদোনা প্রায় মারতে এসেছিলেন সান্তিয়াগোকে। সান্তিয়াগোও তেড়ে যান ঘুসোঘুসি করতে। ‘‘তবে শেষ পর্যন্ত মারাদোনাকে মেনে নিতে হয়েছিল সে দিন আমরাই ভাল টিম ছিলাম,’’ বিলবাও অ্যাকাডেমি ঘুরিয়ে দেখাতে দেখাতে বলছিলেন সে দিনকার নায়ক সান্তিয়াগো।

Advertisement

পিচিচিকে সম্মান

বিলবাও মাঠে পিচিচির আবক্ষ মূর্তি।

লা লিগায় সর্বোচ্চ গোল স্কোরারকে দেওয়া হয় পিচিচি ট্রফি। আর বিলবাওয়ের মাঠে খেলতে নামার আগে প্রয়াত স্প্যানিশ স্ট্রাইকারের এই মূর্তিকে ফুল দিয়ে সম্মান জানিয়ে মাঠে নামেন ফুটবলাররা। রাফায়েল ‘পিচিচি’ মোরেনো ছিলেন অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের স্ট্রাইকার। মাত্র ২৯ বছর বয়সে মারা যান তিনি। কাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিকও ছিল তাঁর। যে ট্রফি তিন বার মেসি, তিন বার রোনাল্ডো জিতেছেন। এবং সর্বশেষ ট্রফিজয়ীর নাম হল লুই সুয়ারেজ।

মোহনবাগান হবে না বিলবাও

বিলবাও ফুটবল দফতরে প্রেসিডেন্ট উরুতিয়া।

অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের একটা নিয়ম হল তারা বাস্ক অঞ্চল ছাড়া অন্য কোনও জায়গার ফুটবলার টিমে নেয় না। যে অঞ্চল মোটামুটি ফ্রান্স থেকে স্পেনের সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু তা হলে আপনারা চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই কী ভাবে লড়বেন? ১৯৮৪-র পর আর লা লিগ না জেতা ক্লাবের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জোস উরুতিয়া বলছিলেন, ‘‘আমাদের কাছে ঐতিহ্যটা সবার আগে।’’ জানানো গেল, কলকাতায় মোহনবাগান বলে একটা ক্লাব আছে। যারা এক সময় ‘কোনও বিদেশি নয়’ নীতি নিয়ে দল করত। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে সেই নীতি বদলে ফেলতে হয়। আপনাদের সেই অবস্থা হবে না তো? প্রাক্তন ফুটবলার উরুতিয়া বলছেন, ‘‘কখনওই নয়। আমরা জানি, আমাদের সমর্থকেরা বিশ্বাস করে ট্রফি জেতার চেয়েও বড় হল নিজেদের অঞ্চল থেকে প্লেয়ার তুলে আনা। তাই আমরা আমাদের নীতি থেকে সরব না।’’

অভিনব ঘাস

কৃত্রিম ঘাসের মাঠে খেলতে গিয়ে চোট লাগার আশঙ্কা থাকে অনেক সময়ই। তাই বিলবাও অ্যাকাডেমিতে চলছে ক্রমাগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা। কী ভাবে ঘাসের মান ভাল করা যায়। সর্বশেষ ফল হল, কৃত্রিম ঘাসে নারকেল ফাইবার ব্যবহার করা। এতে ঘাসে ‘রাবারি’ ভাবটা কমবে এবং কমবে ফুটবলার চোট পাওয়ার আশঙ্কাও।

বিলবাওয়ের আর্ক

ক্লাব সমর্থক এবং ফুটবলাররা বিশ্বাস করেন, এই আর্ক হল ক্লাবের সৌভাগ্যের প্রতীক। ক্লাব যখন তাদের অ্যাকাডেমি এবং ট্রেনিংগ্রাউন্ড সরিয়ে নিয়ে যায় শহর থেকে দূরে, তখন প্রথমে আর্কটাকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। কিন্তু পরে সমর্থকেদের চাপে পড়ে ১২টা ভাগে সেই আর্ককে নিয়ে আসা হয় বর্তমান অ্যাকাডেমিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন