লিগ-অঙ্কেরও আগে বাগান কোচের মাথায় এএফসি।
দুঃখ এবং আশা—একই সঙ্গে দু’টোই সঙ্গে নিয়ে মায়ানমারে এএফসি কাপে খেলতে গেলেন সঞ্জয় সেন ।
দুঃখ এ জন্যই যে, বাগানের ড্র করার সুযোগটা ইস্টবেঙ্গল নিতে পারল না বলে। রবিবার রাতে বাগান কোচ বললেন, ‘‘আমরা পারলাম না। নিজেরাই সুযোগ নষ্ট করলাম। আশা করেছিলাম বাংলার আর একটা টিম অন্তত বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে আই লিগটা জিতবে। সেটা আর হল না।’’
আর আশার কারণ? কাতসুমিদের কোচ বিমান ধরার আগে বললেন, ‘‘অনেকেই আমাকে ইস্টবেঙ্গলের হারের পর ফোন করে বলছে, আমাদের না কি এখনও আশা আছে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।’’
সেটা কী রকম? তারও ব্যাখ্যা দিলেন সঞ্জয়। বললেন, ‘‘ওদের কথা শুনে লিগ টেবলের হিসাব করে দেখলাম— হ্যাঁ, আশা একটা আছে। আমার হিসাবে যদিও সেটা এক পার্সেন্টও নয়। পরের ম্যাচে বেঙ্গালুরু যদি সালগাওকরের সঙ্গে ড্র করে। আর আমরা যদি বেঙ্গালুরুকে শেষ ম্যাচে হারিয়ে দিই, তা হলে হেড টু হেডে আমরা চ্যাম্পিয়ন হচ্ছি। এটাই সবার হিসাব।’’ বলেই অবশ্য হেসে ফেলেন আগের দিন সারা রাত না ঘুমানো বাগান কোচ। ‘‘তবে আমাদের যা অবস্থা তাতে কিছুই হবে না হয়তো। বেঙ্গালুরুই হয়তো চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। তবুও আশা। দেখা যাক কী হয়। ’’
সমর্থকরা যত আশাই করুন মানসিক ভাবে বাগান কোচ ধরেই নিয়েছেন আই লিগ হাতছাড়া। নতুন লক্ষ্য স্থির করেছেন, এএফসি কাপ আর ফেড কাপে ভাল ফল করার। বুধবার চৈত্র শেষের শেষ দিন (১৩ এপ্রিল) ইয়াঙ্গন ইউনাইটেডের সঙ্গে খেলা লুসিয়ানোদের। ঘরের মাঠে এই ম্যাচটা জিতেছিল বাগান। গ্রুপ শীর্ষে থাকা সঞ্জয় চাইছেন এই ম্যাচটাও জিততে। ‘‘ওদের মাঠে গিয়ে ওদের হারানোটা কঠিন কাজ। তবুও আমরা চেষ্টা করব জেতার। এই টুনার্মেন্টে যতটা সম্ভব এগোনো যায়।’’
জেতার স্বপ্ন দেখলেও বাগানের সঙ্গে মায়ানমার যাননি ফের চোট পাওয়া সনি নর্ডি। তাঁকে বেঙ্গালুরু ম্যাচের জন্য বিশ্রাম দিয়েছেন কোচ। যাননি প্রবীর দাসও। তাঁরও হাঁটুতে চোট। আই লিগ ভুলে যেতে চাইলেও কিছুতেই আফশোস যাচ্ছে না বাগান কোচের। বলছিলেন, ‘‘সারা রাত ঘুমোতে পারিনি। বার বার ভেবেছি। পরপর দু’টো ম্যাচে কী ভাবে পয়েন্ট নষ্ট করলাম শেষ মুহূর্তের ভুলে।’’
আর তিন গোল দিয়ে তিন গোল হজম? ‘‘কেন লিগের শেষ দিকে এসে এমন হাল হল আমাদের সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না। কোনও ব্যাখ্যা নেই আমার কাছে।’’ হতাশায় ডুবে যায় গলা। তারপর যোগ করেন, ‘‘মায়ানমার থেকে ফিরে এসে নতুন করে ভাবতে হবে। তৈরি হতে হবে। আমার টিমের ছেলেগুলো খুব ভাল। অনেক সমস্যা নিয়ে চলছে সবাই। তা-ও চেষ্টা করছে। দেখা যাক ফেড কাপটা যদি পাওয়া যায়।’’
মুখে না বললেও বোঝা যায় মুষড়ে পরা অবস্থা থেকে ক্রমশই চাঙ্গা হয়ে ওঠার রসদ খুঁজছেন দেশের সেরা কোচ।