বিরাটদের বিজনেস আসনে পাঠিয়ে ধোনি ফিরলেন সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে

দুটো ছয়, একটা চার...। তার পরেরটুকু তো ইতিহাস। শহরে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এলেন বাড়তি এক ঝুলি নিয়ে। অদৃশ্য সেই ঝুলি আত্মবিশ্বাসে ভরপুর।

Advertisement

রাজীব ঘোষ ও দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৬ ০৪:২০
Share:

ছক্কা মেরে এলেন শহরে

দুটো ছয়, একটা চার...। তার পরেরটুকু তো ইতিহাস। শহরে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এলেন বাড়তি এক ঝুলি নিয়ে। অদৃশ্য সেই ঝুলি আত্মবিশ্বাসে ভরপুর।ওই দুই ওভার বাউন্ডারি ও বাউন্ডারিটা ভারত অধিনায়ককে যে কতটা তরতাজা করে দিয়েছে, তা সোমবার সকালে শ্বশুরবাড়ির শহরে পা রাখা ক্যাপ্টেন কুল-এর ফুরফুরে মেজাজ দেখেই বোঝা যায়।মুখে সেই ট্রেডমার্ক হাসি। ওই হাসিটাই যেন রবিবার শের-ই-বাংলায় এশীয়সেরার খেতাব জিতে গভীর রাতে হোটেলে ফেরা ও সোমবার কাকভোরে বিমান ধরতে বেরনোর ক্লান্তিকে পুরো ঢেকে দিয়েছে। টগবগে আত্মবিশ্বাস তাঁর চোখ-মুখ থেকে যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে।চার্টার্ড নয়, বিমান বাংলাদেশের সাধারণ ফ্লাইটেই ঢাকা থেকে এ দিন কলকাতায় এসে পৌঁছন ধোনিরা। এবং কয়েক জন ক্রিকেটারকে বাদ দিলে বেশিরভাগ ভারতীয় ক্রিকেটার এসেছেন ইকনমি ক্লাসে। যাঁদের মধ্যে এক জন ছিলেন ধোনি।

Advertisement

এশিয়ার যুদ্ধ শেষ। কাউন্টডাউন শুরু বিশ্বকাপের। সোমবার সকালে দমদম বিমানবন্দরে তারার মেলা। এসে গেলেন কোহালি, শাস্ত্রী, ধবনরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমকে নিয়ে কলকাতায় পা ম্যানেজার ক্লাইভ লয়েডের। রাতে হোটেলের ঘর থেকে অশ্বিনের টুইট, আমার বিনোদনকারীরা এসে গিয়েছে। ছবি শঙ্কর নাগ দাস।

কলকাতাগামী ওই বিমানে যাত্রী ছিলেন শহরেরই বেশ কয়েক জন ক্রিকেট ভক্ত। যাঁরা রবিবার শের-ই-বাংলায় ফাইনাল দেখে এ দিন প্লেনে উঠেছিলেন। যাঁদের এক জন জানাচ্ছেন, বিজনেস ক্লাসে বসেছিলেন রবি শাস্ত্রী, বিরাট কোহালি, যুবরাজ সিংহ ও আশিস নেহরা। ধোনি কিন্তু ইকনমি ক্লাসেই ছিলেন শিখর ধবনকে পাশে নিয়ে। যাত্রীরা বেশিরভাগই ভারতীয়। একের পর এক তারকা ক্রিকেটারকে আশপাশের খালি আসনগুলিতে বসে পড়তে দেখে তাঁরা অবাক হওয়ার সঙ্গে সবাই বেশ উৎফুল্লও। দশ মিনিট দেরিতে বিমান ছাড়ার ক্ষোভ মিলিয়ে যায় ধোনিদের পেয়েই।টেক-অফের পর সিট বেল্ট খোলার অনুমতি পাওয়ার অপেক্ষা ছিল মাত্র। তা পেতেই সই ও সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে যায় যাত্রীদের মধ্যে। বেশিরভাগেরই লক্ষ্য ধোনি। শুধু যাত্রীরাই নন, বিমানসেবিকারাও ছিলেন তাঁদের মধ্যে। কারও কারও আবদার আবার দুটোরই। কাউকেই হতাশ করেননি ফুরফুরে মাহি। কয়েকজন ভারতীয় যাত্রী, তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘‘আপনার দল এশিয়া কাপ জিতেছে।

Advertisement

সকালে কলকাতা পৌঁছে গেলেন ধোনি। মেয়ে কোলে ঢুকে পড়লেন সাক্ষীও। ছবি শঙ্কর নাগ দাস ও টুইটার।

এ বার বিশ্বকাপও জিতবে। আমাদের শুভেচ্ছা রইল।’’ উত্তরে শুধুই ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলেন ক্যাপ্টেন কুল। সঙ্গে সেই ট্রেডমার্ক হাসি। কলকাতা বিমানবন্দরে ধোনিদের দেখা মাত্রই অপেক্ষারত জনতা উল্লাসে ফেটে পড়ে। তারই মাঝে ভারতীয় দলের স্থানীয় ম্যানেজার সন্দীপ দাস অভিনন্দন জানাতে আসেন ধোনির কাছে। ধোনি তাঁকেও সেই হাসিটা উপহার দিয়ে বলেন, ‘‘দুটো ছক্কা দেখলে তো। যারা আমার অবসর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, তাদেরও একবার দেখে নিতে বলো।’’ বাংলাদেশ রওনা হওয়ার দিন সাংবাদিক সম্মেলনে উঠেছিল প্রশ্নটা। আপনি কবে অবসর নেবেন? যা শুনে ফেটে পড়েছিলেন। যে মেজাজে ধোনিকে বড় একটা দেখা যায় না। এ দিনের জবাবটা শুনে কারও কারও মনে হচ্ছে, ধোনির ক্ষোভটা কি তা হলে মেটেনি? আবার কারও কারও মনে হচ্ছে, ফুরফুরে মেজাজে থাকা ধোনি নিছকই মজা করেছেন।

শুধু ধোনিই নন, শহরে এ দিন মেয়েকে নিয়ে এসে পৌঁছলেন ধোনির স্ত্রী সাক্ষীও। রাতে শ্বশুরবাড়ি ঘুরেও এলেন ধোনি। অশ্বিন ও রোহিতের জীবনসঙ্গিনীরাও হাজির শহরে। শোনা গেল, বিশ্বকাপ শুরুর আগে দিন দুয়েক ছুটি চেয়েছিলেন ধোনির দলের কয়েকজন ক্রিকেটার। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। সেই জন্যই কি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর অনুমতি পেলেন ক্রিকেটাররা? হয়তো তাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন