জোড়া লালকার্ড, মাঠে ইট

নাটকীয় ম্যাচ জিতে ডার্বিতে চোখ র‌্যান্টিদের

আই লিগের সেরা কামব্যাক ম্যাচ বলা হচ্ছে যাকে, তা খেলে উঠে দলের কোচকে র‌্যান্টি মার্টিন্স বললেন, ‘‘কোচ তোমাকে আমি বলেছিলাম আমরা খেতাবের লড়াইয়ে ফিরবই। ফিরেছি তো।’’ নাইজিরিয়ান গোলমেশিনকে জড়িয়ে ধরলেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। র‌্যান্টির কথা বলতে বলতেই বুঁজে আসে লাল-হলুদ কোচের গলা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা:

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৬ ০৩:০২
Share:

আবার র‌্যান্টি-শো। এ বার আইজলে।

আইজল এফসি ২: ইস্টবেঙ্গল ৩

Advertisement

আই লিগের সেরা কামব্যাক ম্যাচ বলা হচ্ছে যাকে, তা খেলে উঠে দলের কোচকে র‌্যান্টি মার্টিন্স বললেন, ‘‘কোচ তোমাকে আমি বলেছিলাম আমরা খেতাবের লড়াইয়ে ফিরবই। ফিরেছি তো।’’ নাইজিরিয়ান গোলমেশিনকে জড়িয়ে ধরলেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। র‌্যান্টির কথা বলতে বলতেই বুঁজে আসে লাল-হলুদ কোচের গলা। সেই অবস্থায় ফোনে আইজল থেকে তিনি বলে দেন, ‘‘২-০ পিছিয়ে পড়ার পর প্রচণ্ড টেনশনে ছিলাম। মনে হচ্ছিল সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। এখন মনে হচ্ছে, মোহনবাগান আর বেঙ্গালুরুকে হারাতে পারলেই খেতাবের লড়াইতে ফিরে আসব আমরা।’’

পরপর দু’ম্যাচে লজ্জার হার। ইস্টবেঙ্গল জুড়ে চাপ চাপ অন্ধকার। টিমের মধ্যে ছাইচাপা ক্ষোভ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। সদস্য-সমর্থকরাও টিমের মতোই হতাশায় নুইয়ে পড়েছেন। এই অবস্থায় শনিবার বিকেলে আইজল থেকে আলোর সামান্য ছটা বেরোতে শুরু করল। মেন্ডি-বেলোদের যা পারফরম্যান্স গ্রাফ, তাতে কত দিন এটা দীর্ঘস্থায়ী হবে সেটা বলা কঠিন। কিন্তু যে ভাবে চূড়ান্ত নাটকীয় ভঙ্গিতে জহর দাসের টিমের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াল ইস্টবেঙ্গল তা এ বারের আই লিগে অন্যতম চমকপ্রদ ঘটনা সন্দেহ নেই। এবং যে ঘটনার নায়ক এক পোড় খাওয়া নাইজিরিয়ান—র‌্যান্টি মার্টিন্স। এক টানে সর্বোচ্চ গোলদাতা সালগাওকরের ডারেল ডাফিকে (নয় গোল) চেয়ারচ্যুত করে সেখানে বসে পড়লেন র‌্যান্টি (এগারো গোল)।

Advertisement

মেহতাব হোসেন চোট পেয়ে বেরিয়ে যেতেই গোল খেতে শুরু করেছিলেন মেন্ডিরা। আটষট্টি মিনিট পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল ০-২ পিছিয়ে। ঠিক সেই সময়ই আইজল এফসি-র ইমানুয়েল চিগুজে লালকার্ড দেখলেন। নিজেদের বক্সে র‌্যান্টিকে মেরে। আর এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। র‌্যান্টির পেনাল্টি গোলের পরই পাহাড়ে লাল-হলুদ ঝড় শুরু হল। এবং সেটা রফিক আর বিকাশ জাইরুর সৌজন্যে। দু’জনেই বদলি হিসাবে এসেছিলেন টিমে। বিশ্বজিতের মাস্টারস্ট্রোক দারুণ ভাবে কাজে দিল। ম্যাচে প্রথম বার পাহাড়ি দলকে দিশাহারা দেখাল। তাদের বল পজিশন, গতি সবই কমে এল। র‌্যান্টির পরের দু’টো গোল তো বিকাশ আর রফিকের সাহায্যেই। ইস্টবেঙ্গল কোচ বলছিলেন, ‘‘রফিক এবং জাইরু নামার পর খেলাটা আমরা ধরে নিই। তবে প্রচুর গোলের সুযোগ নষ্টও করেছি।’’ খেলা শেষ হওয়ার দু’মিনিট আগে র‌্যান্টির হ্যাটট্রিক। এর পর আর একটি লালকার্ড হল। সেটিও দেখলেন আইজলের লালরাম চুলোভা। এর পরই মাঠে ইট-বোতল পড়তে শুরু করে। খেলা বন্ধ ছিল কয়েক মিনিট। আইজল কোচ জহর দাশ অবশ্য ম্যাচের পর কামান দেগেছেন রেফারির বিরুদ্ধে। বলেছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল নয়, রেফারির কাছে হেরেছি।’’

এই জয়ের পর ডার্বির অঙ্ক শুরু হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গলে। শিলিগুড়িতে ২ এপ্রিলের ডার্বিকেই ম্যাচের পর পাখির চোখ করেছে পুরো ইস্টবেঙ্গল শিবির। ম্যাচ সেরার পুরস্কার নেওয়ার পর র‌্যান্টি যেমন সাংবাদিকদের বলে দিয়েছেন, ‘‘সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছি অনেক বার। ওই পুরস্কারের চেয়ে এখন আই লিগ ট্রফিটাই আমার কাছে বেশি দরকার। আর সে জন্য এ বার ডার্বিটা জিততে হবে আমাদের।’’

ডার্বি যে বহু আগেই ঢুকে পড়ল লাল-হলুদ ড্রেসিংরুমে।

ইস্টবেঙ্গল: লুই ব্যারেটো, রবার্ট, মেন্ডি, বেলো, খাবরা, অবিনাশ, শেহনাজ, মেহতাব (লোবো), তুলুঙ্গা (বিকাশ), জোয়াকিম (রফিক) এবং র‌্যান্টি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন