গ্রেম স্মিথের টেনশন ভাল রকম হচ্ছে। আর মাসখানেকেরও কম সময়ে ভারত সফরে আসবে দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজে আর ব্যাট হাতে নামেন না ঠিকই, কিন্তু টিমে তাঁর অনুজদের কথা ভাবলে খুব একটা নিশ্চিন্ত থাকতে পারছেন না প্রাক্তন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক। বিরাট কোহলিদের দেশে নিজের টিমকে দু’টো ভাবনায় পড়েছেন তিনি। এক, ২০০৬-র পর থেকে বিদেশে টেস্ট সিরিজ জয়ের রেকর্ডটা অটুট রাখা যাবে কি না। আর দুই, ভারতে ঘোরাঘুরি। টি-টোয়েন্টি বা ওয়ান ডে নয়, স্মিথের কাছে অগ্রাধিকার পাচ্ছে চারটে টেস্ট। যার মাঝে বিস্তর ঘোরাঘুরি আছে এ শহর থেকে ও শহর, আর যার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া খুব সহজ হবে না বলেই মনে হচ্ছে স্মিথের।
‘‘ভাবলে একটু নার্ভাসই হয়ে পড়ছি। কোনও সন্দেহ নেই যে খুব কঠিন একটা সফর আমাদের সামনে আসতে চলেছে। ভারতে একটা বড় সময় আমাদের থাকতে হবে। আবার বছরের শেষে ইংল্যান্ড সফর আছে। মনে হয়, এই দু’টো সফরই আমাদের টেস্ট টিমের ভাগ্য ঠিক করে দেবে,’’ দক্ষিণ আফ্রিকার এক কাগজে বলে দিয়েছেন স্মিথ। সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘আসলে চারটে টেস্ট ভারতে আমাদের খেলতে হবে। মানে, প্রচুর ঘোরাঘুরি আছে। বিভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটাও থাকবে। প্রার্থনা করছি যাতে ভারত সফরে আমাদের সব কিছু ঠিকঠাক যায়। ভারতের বিরুদ্ধে যদি ওদের দেশে আমরা ভাল করতে পারি, তা হলে ইংল্যান্ড সফরে আপনাআপনি ভাল করব।’’
স্মিথ শুনলে আরও নার্ভাস হবেন যে, কোহলি পর যাঁকে টেস্টে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের ধরা হয় সেই অজিঙ্ক রাহানে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিন বোলিংকে বিশেষ আমলই দিচ্ছেন না। গত কালই টেস্ট টিম ঘোষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইমরান তাহিরের সঙ্গে ডেন পিয়েড নামের এক বিস্ময় স্পিনারকে সেখানে রাখা হয়েছে। কিন্তু রাহানে তাতে মোটেও চিন্তায় নেই। বরং বলে দিচ্ছেন, ‘‘আমরা যেমন ফাস্ট বোলারদের বিরুদ্ধে ভাল করেছি। তেমন স্পিনারদের বিরুদ্ধেও করেছি। এটা ঠিক যে, কখনও কখনও আমরা আউট হয়ে গিয়েছি। কিন্তু আবার ওদের উপর চড়েও বসেছি। নেটে আমরাও ভাল স্পিনার খেলি। জানি, যে কাদের কী বিরুদ্ধে কী ধরনের শট খেলা উচিত। জানি ওদের কী ভাবে আক্রমণ করতে হয়।’’ মুম্বইকরের কথাবার্তায় পরিষ্কার, দক্ষিণ আফ্রিকা যতই তিন জন স্পিনার এনে চমক আমদানির চেষ্টা করুক, তাতে তিনি খুব প্রভাবিত নন।
রাহানে উল্টে বই পড়ে শেখার চেষ্টা করছেন, কী করে প্রতিপক্ষের চেয়ে সব সময় দশ পা এগিয়ে থেকে শুরু করা যায়। আর সেটা শিখছেন— শিবাজির উপর লেখা বই থেকে! ‘‘আসলে আমি বই পড়তে, গান শুনতে ভালবাসি। খেলাধুলোর উপর বই প়ড়ি। আত্মজীবনী পড়ি। এ সব থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। এখন আন্দ্রে আগাসির ‘ওপেন’ পড়ছি। কয়েক দিন আগে শিবাজির উপর লেখা শিবা ট্রিলজি পড়লাম। শিখলাম, কী করে উনি সব সময় প্রতিপক্ষের চেয়ে অন্তত দশ পা এগিয়ে যুদ্ধটা শুরু করতেন।’’
তবে শুধু বই পড়াই নয়, একই সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আসন্ন যুদ্ধের মানসিক প্রস্তুতি নিতেও শুরু করে দিয়েছেন রাহানে। শ্রীলঙ্কায় তিনটে টেস্ট খেলে এসেছেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাহাত্তর দিনের লম্বা যুদ্ধ শুরু হচ্ছে টি টোয়েন্টি দিয়ে। তার পর আসবে ওয়ান ডে। একদম শেষে টেস্ট। ‘‘অসুবিধে হবে না। আমি তো মনে মনে টেস্ট থেকে টি টোয়েন্টিতে নিজেকে শিফট করতে শুরু করে দিয়েছি। যত তাড়াতাড়ি সেটা পারব, তত আমার লাভ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একশোর মধ্যে পঁচাশি ভাগ থাকে মেন্টাল অ্যাডজাস্টমেন্ট। ছোট ছোট কয়েকটা ব্যাপার ঠিক করে নিতে হয়। যা ইতিমধ্যে করা শুরু করে দিয়েছি আমি।’’