শৃঙ্খলাভঙ্গ বিতর্ক নিয়ে আনন্দের পাল্টা

এআইটিএ কর্তাদের অভিযোগ মনগড়া

ডেভিস কাপে তাঁর ক্যাপ্টেন্সিতে ভারতীয় টিমে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ ‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিলেন আনন্দ আমৃতরাজ।

Advertisement
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৫১
Share:

ডেভিস কাপে তাঁর ক্যাপ্টেন্সিতে ভারতীয় টিমে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ ‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিলেন আনন্দ আমৃতরাজ। এ বিষয়ে নিজের বিরক্তি না লুকিয়ে ভারতের ডেভিস কাপ দলের তিন বছরের নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেনের পাল্টা দাবি, শৃঙ্খলার অজুহাতে ভারতীয় টেনিস সংস্থা (এআইটিএ) তাঁকে ছেঁটে ফেলতে চাইলে ফেলুক। কিন্তু জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে তিনি শুধুমাত্র ভারতীয় টেনিসের উন্নতির চেষ্টাই করেছেন।

Advertisement

এআইটিএ আনন্দকে নন-প্লেয়িং ক্যাপ্টেন ও জিশান আলিকে কোচের পদে রাখতে আগ্রহী নয় বলে সম্প্রতি ইঙ্গিত দেওয়ায় তাঁদের হয়ে আসরে নামেন প্লেয়াররা। দু’জনকে বহাল রাখার আবেদন জানিয়ে ক’দিন আগে এআইটিএ-কে চিঠি দিয়েছিলেন সোমদেব দেববর্মনরা। তাতে জল্পনা আরও জমাট আকার নেয়। ক্ষুব্ধ আনন্দ বলেছেন, ‘‘এআইটিএ কর্তারা যদি প্লেয়ারদের ইচ্ছেকে গুরুত্ব না দিয়ে টিমে শৃঙ্খলাভঙ্গের মনগড়া অজুহাত আর ম্যাচের টাইমিং নিয়ে আমি কবে কী বলেছি, সেটাই আমাকে ছেঁটে ফেলার কারণ ধরেন, তা হলে আর বলার কিছু নেই।’’

সেপ্টেম্বরে রাফায়েল নাদালের স্পেনের বিরুদ্ধে দিল্লিতে সান্ধ্য টাই খেলতে রাজি হয় এআইটিএ। যা নিয়ে আনন্দের প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল, টিমের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই সন্ধ্যায় খেলতে রাজি হয়ে এআইটিএ হোম অ্যাডভান্টেজ হাতছাড়া করেছে আর স্পেনের সুবিধে করে দিয়েছে। যে সমালোচনা ভাল ভাবে নেননি কর্তারা। আনন্দ সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘স্রেফ টিমের স্বার্থের দিকটা ভেবে কথাগুলো বলেছিলাম। সকালে খেলা হলে দিল্লির গরমে স্প্যানিশরা সমস্যায় পড়ত। এত বড় বিতর্ক তৈরি হবে ভাবিনি। দিল্লি পৌঁছে এআইটিএ সেক্রেটারি জেনারেল হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় আর অনিল খন্নার সঙ্গে আলাদা আলাদা দেখা করে জানিয়ে দিয়েছিলাম, আমার কথায় কোনও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়ে থাকলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’

Advertisement

আনন্দের দাবি, দুই কর্তাই সেই সময় তাঁকে ব্যাপারটা ভুলে যেতে বলেছিলেন। এ দিন আনন্দ বলেছেন, ‘‘ভেবেছিলাম ব্যাপারটা ওখানেই মিটে গিয়েছে। এখন বুঝছি আমাকে সরানোর পিছনে ওটাই অন্যতম কারণ।’’ তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের প্রতিটি অভিযোগ ধরে ধরে অস্বীকার করার সময় আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন ভারতের প্রাক্তন ডাবলস তারকা।

আনন্দের ক্যাপ্টেন্সিতে শৃঙ্খলাভঙ্গের তিনটি অভিযোগ কর্তাদের। এক, ২০১৪ সার্বিয়া টাই চলাকালীন একজন ভারতীয় প্লেয়ার ড্রেসিংরুমে তাঁর বান্ধবীকে নিয়ে বসেছিলেন। যখন বাকি টিম কোর্টে ছিল। দুই, প্র্যাকটিসে এবং টাইয়ের প্রথম দিন কোনও প্লেয়ার তাঁর বান্ধবীকে আনতে পারবেন না বলে আনন্দেরই তৈরি নিয়ম ভেঙে পার পেয়েছেন সোমদেব ও এক জুনিয়র। তিন, কোরিয়া টাই চলাকালীন এক রিজার্ভ প্লেয়ার নাকি ড্রেসিংরুমে মদ্যপান করেন!

যা নিয়ে আনন্দের এ দিন তীব্র প্রতিক্রিয়া, ‘‘মিডিয়ায় অনেক লেখালেখি দেখছি। যার প্রায় সবই ভুলভাল তথ্যে ভরা। কোনও প্লেয়ারের কোনও আত্মীয় বা বান্ধবী কখনও ড্রেসিংরুমে ঢোকেনি। ছিলেন প্লেয়ার্স লাউঞ্জে, যার নিয়ম রয়েছে। বিশেষ করে ঘটনার দু’বছর পর কেন প্রসঙ্গটা টানা হচ্ছে সেটাও বুঝছি না। সোমদেব দেশের এক নম্বর প্লেয়ার হয়েও আমার অনুমতি ছাড়া বান্ধবীকে আনে না। দিল্লি টাই-এ অন্য যার প্রসঙ্গ উঠেছে, বলার পর সে বান্ধবীকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল। আর কোরিয়া টাই জিতে আমরা সবাই বাইরে ডিনার খেয়ে সেলিব্রেট করেছিলাম। কিন্তু কেউই মদ্যপান করেনি।’’

বিজয় অমৃতরাজের সঙ্গে জুটিতে ভারতের জার্সিতে টানা কুড়ি বছর ডেভিস কাপ খেলার সময় দেশকে দু’বার ফাইনালে তোলায় তাঁর ভূমিকা ছিল মনে করিয়ে আনন্দ বলেন, ‘‘কোর্টে এবং কোর্টের বাইরে শৃঙ্খলা মেনে চলার গুরুত্ব কী, সেটা আমাকে অন্য কারও কাছে শিখতে হবে না।’’

এআইটিএ বনাম আনন্দ

অভিযোগ: বেঙ্গালুরুতে সার্বিয়া টাইয়ের সময় এক ভারতীয় প্লেয়ার বান্ধবী নিয়ে ড্রেসিংরুমে ছিলেন।

আনন্দ: কোনও প্লেয়ারের বান্ধবী বা আত্মীয় কখনও ড্রেসিংরুমে ঢোকেননি। প্লেয়ার্স লাউঞ্জে ছিলেন। যার নিয়ম আছে।

অভিযোগ: কোরিয়া টাই চলাকালীন একজন প্লেয়ারকে ড্রেসিংরুমে মদ্যপান করতে দেখা গিয়েছিল।

আনন্দ: কোরিয়া টাই জিতে আমরা বাইরে ডিনার খেয়ে সেলিব্রেট করেছিলাম। সেখানেও কেউ মদ্যপান করেনি।

অভিযোগ: প্র্যাকটিস এবং টাইয়ের প্রথম দিন পর্যন্ত প্লেয়ার তাঁর বান্ধবীকে ভেনুতে আনতে পারবেন না, ক্যাপ্টেনেরই করা নিয়ম ভেঙেছিলেন সোমদেব।

আনন্দ: সোমদেব দেশের এক নম্বর প্লেয়ার হওয়া সত্ত্বেও আমার অনুমতি ছাড়া বান্ধবী আনে না। যে প্লেয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে বলতে তখনই বান্ধবীকে ফেরত পাঠায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন