পরপর দুটো প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে হার। গত তিন ম্যাচ মিলিয়ে সাতটা গোল হজম। প্রথম তিন ম্যাচ জিতে চেলসির রূপকথার শুরু এখন অতীত। গত মরসুমের বিপর্যয়ের অ্যাকশন রিপ্লে আবার দেখতে হচ্ছে সমর্থকদের। যে মরসুমে ম্যাচের পর ম্যাচ হেরে দশ নম্বরে শেষ করে ব্লুজ-রা।
শুধু চেলসি ভক্ত বা প্লেয়াররা নয়। চেলসির বিপর্যয়ের তীব্র প্রভাব পড়েছে কোচ আন্তোনিও কন্তের উপরও। যিনি শনিবার আর্সেনালের বিরুদ্ধে ০-৩ হারের পর ঘুমোতে পারছেন না। রাতের পর রাত জেগে শুধু ভাবছেন কী ভাবে এই বিপর্যয থামানো যায়। কোন ছকে খেললে আবার জয় ফিরবে প্রিমিয়ার লিগে। কন্তে বলছেন, ‘‘রাতে ঘুমোতেই পারছি না। কোনও ম্যাচ হারলে আমার খুব খারাপ লাগে। রাতের পর রাত জেগে শুধু ভাবছি কী ভাবে আবার দলকে জয়ে ফেরাব। এ রকম অবস্থা আমার কেরিয়ারে আগেও হয়েছে। কিন্তু আমাদের লড়াই করতে হবে।’’
আর্সেনালের বিরুদ্ধে হারের পর অবশ্য আরও কঠোর হতে চলেছেন কন্তে। গ্যারি কাহিল-ব্র্যানিস্লাভ ইভানোভিচের মতো অভিজ্ঞ ডিফেন্ডারদের প্রথম দল থেকে ছাঁটতে চলেছেন চেলসির ইতালীয় কোচ। জানুয়ারিতে আবার নতুন ডিফেন্ডারও সই করবেন কন্তে। ‘‘আমি খারাপ পারফরম্যান্স বরদাস্ত করি না। কোনও একজনকে দোষ দেব না। কিন্তু আমাদের দ্রুত উন্নতি করতে হবে। দরকার পড়লে নতুন ফুটবলার আনব।’’
কন্তে যাই বলুন না কেন, চেলসির অন্দরমহলে এখন থেকেই জল্পনা ক্লাবের খারাপ ফর্ম নিয়ে। গত বারও জোসে মোরিনহোর অধীনে প্রিমিয়ার লিগে জঘন্য শুরু করেছিল চার বারের ইপিএল চ্যাম্পিয়ন ক্লাব। যার খেসারত চাকরি হারিয়ে দিতে হয়েছিল ‘দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান’-কে। কন্তের অধীনে প্রথম তিন ম্যাচ জয় দিয়ে শুরু করেও হঠাৎ করে ফর্ম হারিয়েছে চেলসি। লিভারপুল ও আর্সেনালের বিরুদ্ধে খারাপ খেলে হেরেছে। শোনা যাচ্ছে, কন্তের সঙ্গে নাকি বৈঠকও করেন ক্লাব কর্তারা। কী সমস্যা হচ্ছে দলের সেটা জানতে যাওয়া হয় কোচের থেকে। কন্তে অবশ্য সতর্ক করে দিচ্ছেন, উন্নতি না করলে গত বারের মতোই আবার লিগ টেবলের মাঝামাঝি শেষ করতে হবে চেলসি-কে। ‘‘এ রকম খেললে হবে না। আমাদের ভাবতে হবে দ্রুত এই জায়গা থেকে না বেরোলে লিগ খেতাবের জন্য চ্যালেঞ্জ জানাতে পারব না।’’
শনিবার চেলসির সামনে অপেক্ষা করছে হাল সিটি। যার পর আবার লেস্টার সিটি ও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। কন্তে বলছেন, ‘‘এখনও সময় আছে। ফুটবলারদের আরও দায়িত্ব নিতে হবে।’’ হাল সিটির আগে আবার শোনা যাচ্ছে, দলের রক্ষণের প্রধান অস্ত্র জন টেরি চোট সারিয়ে ফিরতে চলেছেন দলে।
কন্তের মতো দলের খারাপ ফর্ম নিয়ে চিন্তিত চেলসি তারকা এডেন হ্যাজার্ডও। যিনি বলছেন, অজুহাত না দিয়ে মাঠে ফুটবলারদের প্রমাণ করতে হবে। সরাসরি কিছু না বললেও ঘুরিয়ে দলের রক্ষণের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন হ্যাজার্ড। বলছেন, ‘‘প্রতিটা ম্যাচেই যদি পিছিয়ে পড়তে হয় তা হলে মুশকিল। লেস্টারের বিরুদ্ধে লিগ কাপেও দু’গোল পিছিয়ে পড়েছিলাম। আর্সেনালের বিরুদ্ধে সেটা করা সম্ভব ছিল না। ফুটবলারদের অজুহাত দেওয়া বন্ধ করতে হবে।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘আমাদের দ্রুত সমাধান খুঁজতে হবে। না হলে আবার আগের মরসুমের মতো অবস্থা হবে।’’