ফলো অন না করিয়েও লর্ডস অস্ট্রেলিয়ার

আর কত বার ‘নার্ভাস নাইন্টিজে’ আউট হবেন অ্যালিস্টার কুক? সাত বার তো হয়ে গেল। জিওফ বয়কটকে ছাড়িয়ে গিয়ে নিজের দেশে তো নতুন রেকর্ড গড়লেন। এ বার কি সচিন তেন্ডুলকরের বিশ্ব রেকর্ড ছোঁয়ার দিকে এগোচ্ছেন? শনিবার বেন স্টোকসের সঙ্গে ১৪৫-এর পার্টনারশিপ গড়ার পর সেঞ্চুরি থেকে মাত্র চার রান দূরে থাকা ইংরেজ ক্যাপ্টেনের স্টাম্প যখন মিচেল মার্শ ছিটকে দিলেন, প্রশ্নটা উঠে পড়ল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৫ ০৩:২১
Share:

মার্শ-মিসাইলে নতজানু কুক। লর্ডসে শনিবার। ছবি: এএফপি

আর কত বার ‘নার্ভাস নাইন্টিজে’ আউট হবেন অ্যালিস্টার কুক? সাত বার তো হয়ে গেল। জিওফ বয়কটকে ছাড়িয়ে গিয়ে নিজের দেশে তো নতুন রেকর্ড গড়লেন। এ বার কি সচিন তেন্ডুলকরের বিশ্ব রেকর্ড ছোঁয়ার দিকে এগোচ্ছেন?
শনিবার বেন স্টোকসের সঙ্গে ১৪৫-এর পার্টনারশিপ গড়ার পর সেঞ্চুরি থেকে মাত্র চার রান দূরে থাকা ইংরেজ ক্যাপ্টেনের স্টাম্প যখন মিচেল মার্শ ছিটকে দিলেন, প্রশ্নটা উঠে পড়ল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু বর্তমানে ইংরেজ ক্রিকেটমহলে কুকের ‘নার্ভাস নাইন্টিজের’ চর্চার চেয়েও যে প্রশ্নটা প্রাসঙ্গিক দেখাচ্ছে তা হল, ইংল্যান্ডের লর্ডস টেস্ট বাঁচানোর সম্ভাবনা আর কতটা পড়ে?
তৃতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ড আপাতত অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ৩৬২ রান দূরে। ২৫৪ রানের লিড নিয়ে যারা দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছে। এবং মাইকেল ক্লার্কদের দ্বিতীয় ইনিংসের একটা উইকেটও ফেলা যায়নি। হাতে দু’টো গোটা দিন। সাড়ে চারশো থেকে পাঁচশোর লক্ষ্যমাত্রা ছুঁড়ে দিলে কিন্তু অ্যালিস্টার কুকের টিমকে মহাকাব্যিক কিছু করতে হবে। আর লিড এখনই এতটা মগডালে যে, মাইকেল ক্লার্ক ইংল্যান্ডকে ফলো অন কেন করালেন না, এ জাতীয় প্রশ্নও কেমন যুক্তিহীন দেখাচ্ছে।
যদিও সেটা নিয়ে মাঝে দুই কিংবদন্তির বেশ তর্কই লেগে গেল। লর্ডস কমেন্ট্রি বক্সে দুই অস্ট্রেলীয় প্রাক্তন রিকি পন্টিং এবং শেন ওয়ার্ন কিছুতেই একমত হতে পারছিলেন না ফলো অন থিওরি নিয়ে। বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক ফলো অনের বিপক্ষে। কিংবদন্তি লেগস্পিনার আবার ক্রমাগত সওয়াল করে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত পন্টিংয়ের যুক্তিই জিতল! যে যুক্তি বলে, ফলো অন করিয়ে ইংল্যান্ডকে ম্যাচে ফেরার ন্যূনতম সুযোগ দেওয়ারও যুক্তি নেই। বরং আবার ব্যাট করে রানের এভারেস্ট ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া ভাল। যাতে স্কোরবোর্ডের দিকে তাকালেই দমবন্ধ লাগে। আর ফলো অন করানো মানেই জয়, পরিসংখ্যানও সেটা বলে না। অ্যাসেজে এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া যে ২৫বার ইংল্যান্ডকে ফলো অন করিয়েছে, তার মধ্যে ১৮ বার তারা জিতেছে, পাঁচ বার ড্র হয়েছে আর হেরেছে দু’বার।

Advertisement

এবং লর্ডসের বাইশ গজ ও ইংরেজদের ব্যাটিংয়ের যা অবস্থা, তাতে পঞ্চম দিনের উইকেটে ক্লার্কের ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠানোর ইচ্ছে হলে দোষের কিছু নেই। বেন স্টোকস ৮৭ করে আউট হওয়ার আগে বা পরে ইংরেজদের প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে বড় যে পার্টনারশিপটা হল, তা ৫৬-র। কুক ও মইন আলির (৩৯)। যিনি রিভিউ চেয়েও নিজের এলবিডব্লিউ বাঁচাতে পারলেন না। শুক্রবার চায়ের বিরতির পর থেকে এ দিন চায়ের আগে পর্যন্ত খেলে কুক (৯৬) যখন আউট হন, তখন ইংল্যান্ড ২৬৬-তে। হাতে তিন উইকেট পড়ে। কুকের মতো স্টোকসও মার্শের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যাওয়ার পর জোস বাটলার ক্যাপ্টেনের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও বেশ নড়বড়ে ছিলেন। জনসনের বলে একবার খোঁচা দিলেও তৃতীয় আম্পায়ার রিপ্লেতে দেখতে পান উইকেটকিপার পিটার নেভিল ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে অসাধারণ ক্যাচ নেওয়ার আগেই বল মাটি ঘেঁষে গিয়েছে। তবে তার একটু পরেই ফের একই ভাবে কট বিহাইন্ড হওয়ার পর আর ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকেননি ইংরেজ উইকেটকিপার। যাঁদের ভরসায় ইংল্যান্ডকে ফের ব্যাট করতে পাঠালেন না অজি অধিনায়ক, সেই হ্যাজেলউড ও জনসন তিনটি করে ও মার্শ দু’টি উইকেট নেন। ইংল্যান্ডের দুই সেরা ব্যাটসম্যান তাঁরই শিকার। আর একটা মজার ব্যাপারও ঘটল এই টেস্টে। অস্ট্রেলিয়ার তিন মিচেলই এই প্রথম একসঙ্গে কোনও টেস্ট ইনিংসে উইকেট পেলেন।

কোনও সন্দেহ নেই যে তথ্যটা ইংরেজদের সুখ দেবে না। বরং তাঁরা আরও বিমর্ষ হয়ে পড়তে পারেন, জনসনদের সঙ্গে লড়াইয়ে তাঁদের পেস বোলারদের দশা দেখলে। দ্বিতীয় ইনিংসে একশো পার করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। অথচ ব্রড-অ্যান্ডারসনরা একটা উইকেট বার করতে পারেননি। একশো তুলতে পঁচিশ ওভারও লাগেনি এবং দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া ১০৮-০। ক্রিস রজার্স ৪৪ ও ডেভিড ওয়ার্নার ৬০ রানে অপরাজিত।

Advertisement

যাঁরা রবিবার যত বাড়বেন, ইংল্যান্ডের যন্ত্রণা তত বাড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন