ক্লোজড ডোরেও হাবাসের মন্ত্র শুনে গেলেন গুপ্তচররা

হাবাস আছেন হাবাসেই। কৌশলী এবং রক্ষণাত্মক। তাঁর টিমের আক্রমণ ভাগে গার্সিয়া গিয়ে পস্টিগা আসতে পারে। মরসুমের প্রথম প্র্যাকটিস থেকেই ‘ক্লোজড ডোর’-এর ফতোয়া ঝুলতে পারে। কিন্তু বছর ঘুরলেও তাঁর সেই প্রতি-আক্রমণ ভিত্তিক ফুটবল দর্শনের বদল নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:১৫
Share:

যে ম্যাচ হল আড়ালে আবডালে। হিউমের ডিফেন্স ভাঙার চেষ্টা। মোহনবাগান মাঠে এটিকে ফরোয়ার্ড লাইনের অস্ত্র।

হাবাস আছেন হাবাসেই। কৌশলী এবং রক্ষণাত্মক।

Advertisement

তাঁর টিমের আক্রমণ ভাগে গার্সিয়া গিয়ে পস্টিগা আসতে পারে। মরসুমের প্রথম প্র্যাকটিস থেকেই ‘ক্লোজড ডোর’-এর ফতোয়া ঝুলতে পারে। কিন্তু বছর ঘুরলেও তাঁর সেই প্রতি-আক্রমণ ভিত্তিক ফুটবল দর্শনের বদল নেই।

রবিবার মোহনবাগান মাঠে প্রথম প্র্যাকটিস ম্যাচে ইয়ান হিউমদের বিরুদ্ধে ২-৪ হেরেও তাই এরিয়ান কোচ রঘু নন্দী বলে গেলেন, ‘‘গত বারের মতো এ বারও টিমটা সেই রক্ষণাত্মক ফুটবলই বেশি খেলল। ঘুরে ফিরে সেই ৪-৫-১ ছকে প্রতি-আক্রমণাত্মক ফুটবল। ঘর গুছিয়ে আক্রমণ।’’

Advertisement

এরিয়ান কোচ রঘু সঙ্গে এটাও বলতে ভুললেন না, ‘‘গত বারের চেয়ে এই টিমটার গড় বয়স কম হতে পারে। তবে কলকাতার এ বারের রক্ষণটা কিন্তু প্রথম দিন দেখে আহামরি মনে হল না। আমাদের সঙ্গেই যদি নড়বড় করে, তা হলে আইএসএলের অন্য টিমগুলোর বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষা তো বটেই।’’

যা আবার মানছেন না হাবাসের টিমের ইয়ান হিউম। কানাডিয়ান স্ট্রাইকার এ দিন নামলেন দ্বিতীয়ার্ধে। তিনি আবার মোহনবাগান তাঁবু ছেড়ে বেরোনোর সময় বলে গেলেন, ‘‘এই শহরের গরম-আদ্রর্তার সঙ্গে এখনও মানাতে পারিনি আমরা। তা সত্বেও আজ জিতলাম। সবে তো শুরু। ধীরে ধীরে আরও উন্নতি করব দেখবেন।’’

গত মরসুমে তাও শুরু থেকেই ‘ক্লোজড ডোর’-এর নাটিকা মঞ্চস্থ হয়নি। কিন্তু আইএসএল চ্যাম্পিয়ন টিম এ বার প্রথম অনুশীলন ম্যাচ থেকেই ‘ক্লোজড ডোর’ ম্যাচের ফতোয়া ঝুলিয়ে দিয়েছে। আর সেটা এমনই ‘ক্লোজড ডোর’ যে পিঁপড়ের ঢিবি, সাপের গর্ত, পূতিগন্ধময় র‌্যামপার্ট থেকে মিডিয়া সেই অনুশীলন ম্যাচের ছবি তুলল। আর বাগান তাঁবুর গেটে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের ধোঁকা দিয়ে কেরল, দিল্লি আর চেন্নাইয়ান টিমে ভারতীয় ফুটবলারদের ঘনিষ্ঠ কেউ কেউ মোহনবাগান গ্যালারিতে ঘাপটি মেরে পস্টিগা-জাভি লারাদের বিভিন্ন মুভের ছবি তুললেন দেদার। আর বাড়ি যাওয়ার সময় সেই গুপ্তচরদের কেউ কেউ হাসিমুখে মিডিয়াকেই বলে গেলেন, ‘‘কলকাতার সব ছক, কায়দা ছবি-সহ জায়গামতো পাঠিয়ে দিলাম।’’

হাবাস কি এটা জেনে ফেলেছিলেন? তাই কি অর্ণব মণ্ডলের পাশে নিয়মিত স্টপারে হোসেমিকে না খেলিয়ে নাতোকে রাখলেন! রঘু নন্দী ছয় বিদেশিকে নিয়ে নেমেছিলেন। সঙ্গে তাঁর বঙ্গব্রিগেডও দেখার মতো ফুটবল খেলল এ দিন। বিশেষ করে উইঙ্গার সুমন মালো, স্টপার অসীম দে। অসমের লিগে ১৭ গোল করে আসা ওরোক প্রথমে এগিয়ে দিয়েছিল এরিয়ানকে। আটলেটিকোর গাভিলান সেই গোল শোধ করার পর ২-১ করেন সুশীল সিংহ। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে করিম ফের এরিয়ানকে সমতায় ফেরাতেই হাবাসের টনক নড়ে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তাই পস্টিগা, বোরহা, জাভি লারা, বলজিৎ আর হিউমকে নামিয়ে আক্রমণে জোর বাড়িয়ে জাভি আর বলজিতের গোলে ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়া। বাড়ি যাওয়ার আগে জাভি লারা বললেন, ‘‘ম্যাচ জিতে এবং গোল করে আত্মবিশ্বাস বাড়ল।’’ আর আটলেটিকোর পঞ্জাব দা পুত্তর ফরোয়ার্ড বলজিৎ বলে গেলেন, ‘‘প্রথম প্র্যাকটিস ম্যাচ জেতাটা আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল। এ বার চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার পালা।’’

চেন্নাই ম্যাচ নিয়ে আটলেটিকো শিবিরে যে পারমুটেশন-কম্বিনেশন-এর অঙ্ক ঢুকে পড়েছে তা ফুটবলারদের কথাবার্তায় স্পষ্ট। গত বার কলকাতার বিরুদ্ধে যুবভারতীতে দু’গোল করা ইয়ান হিউম যেমন এ দিন বলে গেলেন, ‘‘চেন্নাই টিমটার প্রধান অস্ত্র ইলানো। তবে আমাদের টিমটাও বেশ ব্যালান্সড।’’

সচিনের টিম থেকে আসা কলকাতার আক্রমণের কানাডিয়ান ইঞ্জিন আবার মুখিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য। হিউমের কথায়, ‘‘ভারতে ক্রিকেটের উন্মাদনা জানি। জানি সৌরভের কথাও। সচিনের টিমে গত বার থাকায় ওঁর সঙ্গে আলাপ হয়ে গিয়েছে। এ বার সৌরভের সঙ্গে আলাপটাও সেরে নিতে হবে।’’

ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন