মাঠজুড়ে: মালবাজার রেলওয়ে ময়দানে এটিকের শিবিরে খুদেরা। নিজস্ব চিত্র
কুণাল, শ্রেয়াস, চাঁদু, অনিকেত কেউই এমন আগে দেখেনি। সবারই বয়স বারোর কোঠায়। ফুটবল পা নিয়ে মাঠে ছুটত তারা মনের আনন্দেই। কিন্তু খেলাটা খেলার মত করে রপ্ত করার যে কলাকৌশল তা এ বার হাতে, থুড়ি পায়ে-কলমে এই প্রথমই শিখল ওরা।
সৌজন্যে অ্যাটলেটিকো দি কলকাতা (এটিকে)। মঙ্গলবার এটিকের একদিনের বাছাই শিবিরের আসর বসেছিল মালবাজার শহরের রেলওয়ে ময়দানে। এটিকের অনূর্ধ্ব ১২ আর অনূর্ধ্ব ১৪ ছেলেদের এই শিবির আয়োজনে উদ্যোগী হয়েছিল মালবাজার মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা এবং সতকার সমিতি। মঙ্গলবার সকাল থেকেই সাজো সাজো রব পড়ে যায় রেলওয়ে ময়দানে। জন্মপ্রমাণ পত্র নিয়ে নাম নথিভুক্ত করিয়েই এটিকের জার্সি পরিয়ে দেওয়া হয় ক্ষুদে খেলোয়াড়দের। প্রায় দুশো খুদেকে আটটি দলে ভাগ করে শুরু হয় বাছাই পর্ব। এটিকের গ্রাসরুট বিভাগের ম্যানেজার আশিস সরকারের পরিচালনায় এটিকের সহকারি প্রশিক্ষকেরা খুদে খেলোয়াড়দের মাঠের বিভিন্ন কোণে নিয়ে গিয়ে বাছাই শুরু করেন। বল পাসিং এবং রিসিভিং, ড্রিবলিং, বল পায়ে ছোটার ক্ষমতা, গোলকিপারদের বিভিন্ন দূরত্ব থেকে বল ধরার ক্ষমতার পরীক্ষার মত একের পর এক ধাপ আয়োজন করে সব শেষে প্রতিটি গ্রুপের মধ্যে আবার পরস্পরের ছোট ছোট ম্যাচ আয়োজন করা হয়।
এটিকের এই উদ্যোগে খুদেরা যেমন খুশি, তেমনই খুশি শহরের ফুটবলপ্রেমীরাও। মালবাজারের রেল ময়দানে খুদেদের নিয়ে নিয়মিত ফুটবলচর্চা করেন সত্তরোর্ধ্ব সমরেন্দ্রনাথ বল্লভ। তিনিও এ দিন সকাল থেকেই হাজির ছিলেন। এখন থেকে এ ভাবেই খুদেদের নিয়ে অভ্যাস চালাবেন বলেও জানালেন তিনি। মালবাজার পুরসভা ফুটবল আকাদেমীর প্রশিক্ষক বিশ্বনাথ বিশ্বাসও এটিকের কর্মকর্তাদের হাতের নাগালে পেয়ে যাওয়াটা ক্ষুদে খেলোয়াড়াদের সৌভাগ্য বলেই মনে করেন। ‘‘আমাদের সময়ে এ রকম সুযোগ ছিল না। এখন অন্তত ডুয়ার্সের কচিকাঁচারা সেই সুযোগটা পেল’’, বলছেন মালবাজার মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সচিব অনুপ সাহা, কর্মকর্তা দারা সিংহ, চিন্ময় চন্দেরা।
এটিকের পক্ষে গ্রাসরুট বিভাগের ম্যানেজার আশিস সরকার বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে এমন ৪০িট শিবির হবে। আমরা ফিরে গিয়ে কারা সুযোগ পেল তা জানিয়ে দেব।’’ মালবাজারে বেশ ভাল কিছু প্রতিভার সন্ধান যে মিলেছে তাও যাওয়ার আগে এটিকে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে যান। আজ, বুধবার জলপাইগুড়ির জেওয়াইএমএ ময়দানে ও বৃহস্পতিবার কোচবিহারে আসর বসাচ্ছে এটিকে।