প্রাক্-মরসুম চোটই কাল হল এটিকের

এ বার নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি প্রচণ্ড হতাশ করেছে। তাদের সবচেয়ে বেশি ধাক্কা দিয়েছে বিদেশি ফুটবলারদের পারফরম্যান্স না থাকাটা। একাই ম্যাচ জিতিয়ে দিয়েছে এমন কোনও বিদেশি হিসেবে কারও নামই উঠে আসছে না।

Advertisement

ভাইচুং ভুটিয়া

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:২৯
Share:

ভাইচুং ভুটিয়া

আইএসএলের প্লে-অফের শেষ জায়গাটা কে পাবে— জামশেদপুর এফসি না এফসি গোয়া? রবিবার জামশেদপুরে দু’দলের মধ্যে দ্বৈরথে সেটা ঠিক হবে। আমার মনে হয়, লড়াইটা হবে হবে জামশেদপুরের রক্ষণ বনাম এফসি গোয়ার আক্রমণের মধ্যে।

Advertisement

এই টুর্নামেন্ট নিয়ে আমার ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হল কিন্তু। আইএসএল মাঝামাঝি পর্যায়ে আসার আগেই আমি বলেছিলাম বেঙ্গালুরু এফসি, চেন্নাইয়িন এফসি এবং এফসি গোয়া সেমিফাইনালে যাওয়ার দৌড়ে প্রধান দাবিদার। চার নম্বর দলের জায়গায় থাকতে পারে এফসি পুণে সিটি অথবা জামশেদপুর এফসি বা কেরল ব্লাস্টার্স।

আমার মনে হয় যে, সব দল এ বার খেতাবের দৌড় থেকে ছিটকে গেল তাদের নিয়ে একটা ময়নাতদন্ত করার সময় হয়েছে। প্রচুর প্রত্যাশা তৈরি করেও যদি সেটা পূরণে আপনি সফল না হন, তা হলে হতাশা আসবেই। তাতে এটাও বোঝা যায়, দলে কোথাও নিশ্চয়ই একটা সমস্যা রয়েছে। এটা কিন্তু জীবনের অঙ্গ এবং একটা ভাল দল সব সময় এটা মাথায় রেখে চলে।

Advertisement

এ বার নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি প্রচণ্ড হতাশ করেছে। তাদের সবচেয়ে বেশি ধাক্কা দিয়েছে বিদেশি ফুটবলারদের পারফরম্যান্স না থাকাটা। একাই ম্যাচ জিতিয়ে দিয়েছে এমন কোনও বিদেশি হিসেবে কারও নামই উঠে আসছে না। এই ব্যাপারটার মূল্যই চোকাতে হল তাদের।

গত বারের চ্যাম্পিয়ন এটিকে নিয়ে তো যত কম বলা যায় ততই ভাল। আইএসএলের ইতিহাসে সবচেয়ে ধারাবাহিক দল এ বার প্রাক-মরসুম চোটে খুব ভুগেছে। যার মধ্যে রয়েছে রবি কিনের চোটও। সঙ্গে প্রথম একাদশে যথাযথ ভারতীয় খেলোয়াড়দের বাছাইটাও হয়নি। কলকাতায় খেলা, বিশেষ করে ওখানকার দর্শকদের প্রত্যাশার চাপ সামলে পারফর্ম করা কিন্তু দেশের অন্য যে কোনও শহরের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা।

টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় পর্যায়ে পরপর পাঁচটা ঘরের মাঠে ম্যাচ খেলার সুযোগ ছিল এটিকে-র। যে সুযোগটা ওরা কাজে লাগালে টুর্নামেন্টের ছবিটা পাল্টে যেতে পারত। কিন্তু এর মধ্যে একটাও ম্যাচ জিততে পারেনি ওরা। এতেই বোঝা যাচ্ছে এটিকের অবস্থা।

কেরল ব্লাস্টার্স দলটাকে টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার সময় আমার দারুণ দল মনে হয়েছিল। কিন্তু ওরা প্রথম দিকে প্রচণ্ড রক্ষাত্মক খেলছিল। যেন নিজেদের খোলস ছেড়ে বেরোবে না কিছুতেই। অথচ ওদের দলে কিন্তু ভাল মানের ফুটবলারের অভাব নেই। ডেভিড জেমসের কোচিংয়ে টুর্নামেন্টে এর পরের দিকে ওরা গিয়ার বদলে দেওয়ার চেষ্টা করলেও সেই প্রয়াস যথেষ্ট ছিল না। কেরলের সমর্থকদের জন্য আমার খারাপ লাগছে।

মুম্বই সিটি এফসি টুর্নামেন্টে অনেক দূর পর্যন্ত সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা টিকিয়ে রাখতে পেরেছিল। কিন্তু ধারাবাহিকতার অভাব ওদের খুব ভুগিয়েছে। কয়েকটা ম্যাচ ওরা দারুণ খেলেছে, তবে ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি।

দিল্লি ডেয়ারডেভিলস কিন্তু একটা ধাক্কা দিয়ে শেষ করল টুর্নামেন্টটা। যা দেখে অনেকেই অবাক হয়ে গিয়েছে যে এই খেলাটা এত দিন কোথায় ছিল দিল্লির! তবে ওরা শেষ পর্যন্ত যখন ছন্দ খুঁজে পেল টুর্নামেন্টে, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে কিন্তু একটা দলের প্রাক-মরসুম প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন