প্রথম বছরেই রাজস্থান রয়্যালসকে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করার পথে মহম্মদ কাইফের ‘ইগো’ সামলেছিলেন কী ভাবে? মুনাফ পটেলের বয়স জানতে গিয়ে তাঁর কী অভিজ্ঞতা হয়েছিল? রবীন্দ্র জাডেজাকে কী ভাবে শৃঙ্খলাপরায়ণ করে তুলেছিলেন? রাজস্থান রয়্যালসের প্রাক্তন অধিনায়ক ও মেন্টর শেন ওয়ার্ন এ সবেরই মজাদার বর্ণনা দিয়েছেন তাঁর নতুন বইতে।
ওয়ার্ন লিখেছেন, ‘‘হোটেলে চেক-ইন করার সময় দলের ছেলেরা প্রত্যেকে যে যার ঘরের চাবি নিয়ে চলে যায়। কয়েক মিনিট পরে দেখি রিসেপশনে এসে মহম্মদ কাইফ বলছে, আমি কাইফ। রিসেপশনিস্ট বললেন, হ্যাঁ, আপনাকে কী ভাবে সাহায্য করতে পারি, বলুন? কিন্তু ও সেই একই কথা বলে চলল, আমি কাইফ। তখন আমি নিজেই ওর কাছে গিয়ে বললাম, সব ঠিক আছে তো বন্ধু? তখনও বলল, হ্যাঁ, আমি কাইফ।’’
কিছুক্ষণ এ রকম চলার পরে ওয়ার্ন বললেন, ‘‘আমি জানি, ওরাও জানে তুমি কাইফ। কী বলতে চাইছ, বলো।’’ ওয়ার্নের বয়ান অনুযায়ী, এর পর কাইফ বলেন, ‘‘সবার মতো আমাকেও ছোট ঘর দেওয়া হয়েছে।’’
ওয়ার্ন তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘তুমি কি আরও ভাল কিছু চাও?’’ তখন তিনি আবার বলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমি কাইফ।’’ ওয়ার্ন লিখেছেন, ‘‘তখন আমি বুঝলাম ও বলতে চায়, ও একজন সিনিয়র, ভারতীয় দলে খেলা ক্রিকেটার, তাই ওকে ব়ড় ঘর দেওয়া উচিত।’’
আরও পড়ুন: রোহিতের রোশনাইয়ে নবাবি চালে সিরিজ জয় ভারতের
এই ঘটনাকে টেনে বইয়ে ওয়ার্ন লিখেছেন, ‘‘তখনই বুঝি যে, ভারতের সিনিয়র ক্রিকেটাররা চায় তাদের বেশি সুবিধা দেওয়া হোক আর তরুণরা যেন তাদের ব্যাগ বইবার জন্য দলে থাকে।’’ ওয়ার্নের মন্তব্য, ‘‘সে দিনই উপলব্ধি করেছিলাম, দলের প্রত্যেকের জন্য একই নিয়ম চালু করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: রূপকথার বিবর্তন শোনালেন ঝুলন
মুনাফ পটেলের বয়স জানতে গিয়ে কী অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তা-ও নিজের বইয়ে লিখেছেন প্রথম আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক। বয়স জানতে চাওয়ায় মুনাফ ওয়ার্নকে উত্তর দেন, ‘‘তুমি কি আসল বয়স জানতে চাইছ? না আইপিএলের বয়স? যেটা অন্যরা জানতে চায়।’’ তখন ওয়ার্ন বলেন, ‘‘আমি তোমার কাছে জানতে চাই ঠিক কত বয়স তোমার।’’ মুনাফের উত্তরটা শুনে ওয়ার্ন বেশ অবাকই হয়ে যান। মুনাফ বলেন, ‘‘আমি ২৪। তবে যদি ৩৪-ও হত, তাও ২৪-ই বলতাম। কারণ, ৩৪ বললে কেউ দলে নিত না। ২৮ বললে ভাবত, আর ক’বছরই বা খেলার বাকি আছে ওর। আমি তাই ২০-র ঘরেই থাকতে চাই দীর্ঘদিন।’’
জাডেজাকে দেখে প্রথমে দারুণ ক্রিকেটার মনে হলেও গুজরাতি অলরাউন্ডারের শৃঙ্খলাবোধ মোটেই পছন্দ হয়নি বলে জানান ওয়ার্ন। লেখেন, ‘‘তরুণ ক্রিকেটাররা এই দোষেই তো ভুল পথে চলে যায়। জাডেজা সব সময় দেরি করে আসত।’’ অনুশীলনে যাওয়ার বাস ধরতে জাডেজার দু’দিন দেরি হওয়ার পরে এক দিন ফেরার পথে মাঝরাস্তায় তাঁকে নামিয়ে দেন ওয়ার্ন। বলেন, ‘‘তুমি বাকি রাস্তা হেঁটে ফেরো।’’
তার পর থেকে জাডেজা আর কখনও দেরি করেননি বলে দাবি ওয়ার্নের। কোনও সন্দেহ নেই, অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি লেগস্পিনারের নতুন বই ভারতীয় ক্রিকেট মহলে বিতর্কের ঝড় তুলতে চলেছে।