শিলং লাজং ম্যাচের আগে বাগান অনুশীলনে সনি নর্ডি। —নিজস্ব চিত্র।
হৃদযন্ত্রের সমস্যা উপেক্ষা করে বাটানগর থেকে সনি-কাতসুমিদের নিজের আঁকা ছবি উপহার দিতে সাতসকালে মোহনবাগান মাঠে হাজির ষাটোর্ধ সলিল বিশ্বাস।
কলেজের পরীক্ষার মাঝেও দেবজিৎ-শিল্টনের ছবি নিয়ে শিবপুর থেকে প্রিয় ক্লাবের প্র্যাকটিস দেখতে এসেছেন রাখী মুখোপাধ্যায়।
ভক্তের হাত থেকে ছবি নেওয়া আর সই দেওয়ার সময় সনি নর্ডি বলেই বসলেন, ‘‘সবে তো অর্ধেক লিগ হয়েছে! বাকি ম্যাচগুলোতেও এ ভাবে পাশে থাকলে এক নম্বরে থেকেই আমরা শেষ করব।’’
ডার্বি ম্যাচ হেরে সাংবাদিক সম্মেলনে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ—প্রথম পর্বে যারা সবার আগে থাকে তারাই সব সময় চ্যাম্পিয়ন হয় না। যদিও গতবারই বেঙ্গালুরু এফসি সেই আশঙ্কাকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে আই লিগ পেয়েছিল। তারও আগে ডেম্পো, চার্চিল। এ বার এগারো দলের আই লিগে দশ ম্যাচে ২৪ পয়েন্টে মোহনবাগান এক নম্বরে। বেঙ্গালুরু, ডেম্পো, চার্চিলের সঙ্গে একই ব্র্যাকেটে ঢুকতে বুধবার বারাসত স্টেডিয়াম থেকে বাকি দশ রাউন্ডের সেই লড়াই শুরু সঞ্জয় সেনের দলের।
বিপক্ষে লাজং এফসি। কর্নেল গ্লেনদের বিরুদ্ধে চল্লিশ দিন আগে পাহাড়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জিতেছিল সবুজ-মেরুন। সমতলে কী হবে? বেলা বারোটার চড়া রোদে মোহনবাগান মাঠ থেকে অনুশীলন সেরে বেরনোর সময় লাজংয়ের কোরিয়ান বংশোদ্ভূত জাপ ডিফেন্ডার মিনচল সন বললেন, ‘‘সহজে ছাড়ব না। ওদের আসল লোক পিবো (বোয়া) আর কাতসুমি। ওদের আটকালেই টিমটার জারিজুরি শেষ।’’
শুনে হাসছেন সনি নর্ডি। ‘‘আসলে শেষ ম্যাচে মুম্বই এফসিকে ছ’গোল মেরে ওরা টগবগ করছে। তবে শিলংয়ের ম্যাচটার আগেও তো ওরা ডেম্পোকে হারিয়েছিল। কিন্তু জিতেছিলাম আমরাই,’’ বলে নিজের গাড়িতে উঠে বাড়ির পথ ধরলেন। মিনচলের ‘চ্যালেঞ্জ’ বোয়াও বললেন, ‘‘লিগে ওরা ১৮ গোল খেয়েছে দেখলাম।’’ বাগান কোচ বরং অনেক সতর্ক। ‘‘উল্টোটাও দেখুন। ওরা ১৮টা গোল করেওছে। আমাদের আর বেঙ্গালুরুর পরেই সবচেয়ে বেশি। গ্লেন একাই ন’টা গোল করেছে। লিগ টেবলে ন’নম্বরে থাকলেও এখানে এক পয়েন্টের জন্য লড়বে। হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ অপেক্ষা করছে।’’
সেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই জিতে আই লিগে টানা এগারো ম্যাচ অপরাজিত থেকে খেতাবের দরজার দিকে এগিয়ে যেতে আজ দলে ফিরছেন শেহনাজ। খেলবেন বলবন্তও। স্ট্র্যাটেজি অনেকটা এ রকম: অযথা মাথাগরম নয়। লিগের এই সময় সাসপেন্ড থেকে দলের শক্তি কমানো চলবে না।
দুই) শক্তপোক্ত পাহাড়ি ছেলেদের বিরুদ্ধে পায়ে বেশিক্ষণ বল রাখা নয়। কড়া ট্যাকল থেকে বাঁচো। চোট-আঘাতেও দল দুর্বল হবে।
তিন) দুই সাইড ব্যাকের সাম্প্রতিক ভুলচুক (বিশেষ করে এরিয়াল বলে) শুধরোতে এ দিন সেটপিস অনুশীলন হল জোর কদমে।
চার) সম্ভাব্য আত্মতুষ্টি আটকাতে তিন বঙ্গসন্তান কোচিং স্টাফ (সঞ্জয়-শঙ্করলাল-অর্পণ) যেন বাড়তি তৎপর। কিপার কোচ অর্পণ পইপই করে দেবজিৎকে বলেছেন, ‘‘তুই গোল না খেলেই এক পয়েন্ট। বাকি দু’পয়েন্ট সনিরা ঠিক তুলে আনবে।’’
বেঙ্গালুরু, রয়্যাল ওয়াহিংডোর ড্র: আই লিগের অন্য ম্যাচে এ দিন মুম্বই এফসি-র সঙ্গে ১-১ শেষ করল বেঙ্গালুরু এফসি। গোয়ায় গোলশূন্য থাকল স্পোর্টিং ক্লুব-রয়্যাল ওয়াহিংডো ম্যাচও। ফলে ১৩ ম্যাচের পর বেঙ্গালুরু ও ওয়াহিংডোর পয়েন্ট দাঁড়াল ২২। যার ফলে সুবিধা হল, মোহনবাগানের। ডেরেক পেরিরার সালগাওকরের বিরুদ্ধে ১-০ জিতল করিম বেঞ্চারিফার পুণে এফসি। দ্বিতীয়ার্ধের ৮২ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোল করেন রিউজি সুয়োকা।
বুধবার আই লিগ
মোহনবাগান-শিলং লাজং এফসি (বারাসত, ৪-৩০)
ইস্টবেঙ্গল-কল্যাণী ভারত এফসি (পুণে, ৭-০০)