সৌম্য সংহার। ছবি: এপি।
ওয়ান ডে খেলা শুরু ৩০ বছর আগে। তার পর থেকে বেশ কয়েক বার ক্রিকেটীয় ‘দাদা’দের হারালেও কখনওই সেই ভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম সারিতে উঠে আসতে পারেনি বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে যে বীরগাথা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটে, তা যেন পূর্ণতা পেল দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ জয় দিয়ে। এবং দেশের মাটিতে পর পর পাঁচটি সিরিজ জিতে প্রথম সারিতে উঠে আসার জোরালো দাবি জানালো সৌম্য-সাকিবদের বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের এই ক্রিকেটীয় উত্থান কিন্তু একদিনে হয়নি। প্রতিভা প্রথম থেকেই ছিল পদ্মাপাড়ের দেশটিতে। তবে তা একটা আশরাফুল বা একটা হাবিবুল বাশারে আটকে ছিল। গত কয়েক বছরে দলকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন সাকিব-অল-হাসান। কালিস-আফ্রিদিদের ভিড়ে বেশ কয়েক বার বর্ষসেরা অল রাউন্ডার হয়েছেন তিনি। যে কোনও দলের বিরুদ্ধে বহু বার একাই রুখে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ভারতে সচিন তেন্ডুলকরকে যে চোখে দেখে মানুষ, বাংলাদেশে একই মর্যাদা পান সাকিব। এ বার তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সৌম্য সরকার, মুস্তাফিজুর রহমানের মতো তরুণরা। ভারতকে তো প্রায় একাই শেষ করে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের নয়া আবিষ্কার মুস্তাফিজুর। প্রোটিয়ারাও টের পেয়েছেন তাঁর কাটারের মাহাত্ম্য।
তবে এই সব কিছুর সঙ্গে যোগ করতে হবে বাংলাদেশের ক্রিকেট পরিকাঠামো। জাতীয় দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই বাংলাদশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)-র ফসল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অপরিমিত সাহস। যা এখন সৌম্য-মুস্তাফিজুরদের মজ্জাগত। যার সাহায্যে প্রথম সারির বোলারদের চোখে চোখ রেখে দাপট দেখাতে পারছে বাংলাদেশ। সৌম্যকে বাউন্সারে ঘায়েল করতে চেয়েছিল রাবাদা-মর্কেলরা। সেই বাউন্সারই সপাটে বাউন্ডারি পার করার সাহস দেখিয়েছেন সৌম্য।
তবে ওয়ান ডের আকাশে তারা হয়ে উঠলেও টেস্টে এখনও দ্বিতীয় সারিতেই রয়ে গেছে বাংলাদেশ। এ বার বোধহয় সময় হয়েছে টেস্টেও বাঘ হয়ে ওঠার।