তামিম-মাহমুদউল্লাহ জুটি। ছবি: গেটি ইমেজেস।
ডেনিস লিলি-র মতো হেয়ারব্যান্ডে তাঁকে আরও ভয়ঙ্কর দেখতে লাগলেও ডেল স্টেইনের বোলিংয়ের ধারকে প্রায় ভোঁতাই করে দিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। এমনিতেই আগের দিন তাদের তথাকথিত বিপজ্জনক ব্যাটিং লাইন আপকে মাত্র ২৪৮-এ শেষ করে দেওয়ায় রাগে ফুঁসছিলেন বিধ্বংসী এই পেসার। কিন্তু সেই রাগের আগুনে যখন বাংলার বাঘেদের পুড়িয়ে মারতে পারলেন না, তখন বেশ হতাশ লাগল তাঁকে।
বৃষ্টির জন্য প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই শেষ হয়ে গেলেও চট্টগ্রামের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় কিন্তু বাংলাদেশিদের বারুদে এতটুকু ভিজে ভাব দেখা গেল না। দিনের খেলা শেষ হওয়ার সময় বাংলাদেশ ১৭৯-৪, অর্থাৎ মাত্র ৬৯ রান পিছিয়ে। আগের দিন যে উইকেটে বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দলের তাবড় ব্যাটসম্যানরা নাকানি-চোবানি খেয়েছিলেন, সেই মন্থর উইকেটেই দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে গেলেন তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লারা। দু’জনেরই বুক চিতিয়ে করা হাফ সেঞ্চুরি ও তৃতীয় উইকেটে ৮৯ রানের পার্টনারশিপই বাংলাদেশকে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার ইন্ধন জোগাল।
এই জুটির পর অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম (নট আউট ১৬) ও সাকিব আল হাসানকে (১ নট আউট) নিয়ে লড়াই সবে শুরু করেছিলেন। তখনই প্রবল বৃষ্টি নামে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। চায়ের বিরতির পর মাত্র ৪২ মিনিট খেলা হয়। তার পর বৃষ্টির দাপটে আর খেলা চালানো যায়নি।
এই ম্যাচের ফল যাই হোক না কেন, টেস্ট ক্রিকেটের এক নম্বর দলের বিরুদ্ধে প্রথম দু’দিন বাংলাদেশের এই লড়াই এ দেশের ক্রিকেটকে এ বার সত্যিই ক্রিকেট-বিশ্বে আলোচনার বিষয়বস্তু করে তুলেছে। এত দিন ওয়ান ডে ক্রিকেটে বাংলাদেশিদের হঠাৎ উত্থানে যে তাদের নিয়ে কম আলোচনা হয়েছে, তা নয়। কিন্তু, তখনও প্রশ্ন ছিল ওয়ান ডে ক্রিকেটে ভাল পারফরম্যান্স দেখালেও টেস্ট ক্রিকেটের আসল পরীক্ষায় তারা পারবে তো? টেস্ট সিরিজের প্রথম দু’দিনে যে ভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে শুরু করেছেন মুশফিকুররা, তাতে তাঁরা ক্রিকেট-বিশ্বের সমীহ আদায় করে নিতে শুরু করেছেন। আগামী তিন দিনে বোঝা যাবে, টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ কোন দিকে এগোচ্ছে।