সফরের শেষ ওয়ান ডে ম্যাচে ধবন। ছবি এএফপি।
আজ নাকি মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসবেন!
ঢাকার রাজপথে সপ্তাহের আর পাঁচটা দিনে যে যানজট লক্ষ করা যায়, বুধবার তার পাঁচ গুণ ধরতে হবে। যদি ঢাকা থেকে এক ঘণ্টা সময় হাতে নিয়ে শের-ই-বাংলার ক্রিকেট-দুর্গে যাওয়ার কথা ভাবেন, তা হলে নিশ্চিন্ত থাকুন। ওটা আজকের মতো ঘণ্টা দুয়েকে দাঁড়াচ্ছে।
আসলে সম্ভাব্য বাংলাওয়াশের উত্তেজনায় এতটাই তেতে রয়েছে গোটা শহরটা যে, আবেগ তার বহিঃপ্রকাশের কোন মুখটা বেছে নেবে তা ঠিক করে উঠতে পারছে না। রাজপথে, গলির মুখে, ফুটপাথে, কোথাও সবুজ-লাল জার্সির বাইরে কিছু চোখে পড়বে না। ওঁরা মুখে বাঘ আঁকছে, উন্মুক্ত শরীরকে বাঘের ডোরাকাটা দাগে ভরিয়ে দিচ্ছে, মাথায় অদ্ভুত অদ্ভুত টুপি পরে রাস্তায় নেমে পড়ে যানজট বাঁধিয়ে দিচ্ছে। ক্রিকেট নামক একটা খেলা যে কী ভাবে একটা জাতির দৈনন্দিন নির্ঘণ্টকে পাল্টে দিতে পারে, পদ্মাপারকে দেখে বোঝা যায়।
দুপুর তিনটে থেকে মাঠে হাজার-হাজার কালো মাথা। গত দু’ম্যাচে যে ঝকঝকে রোদ মীরপুর আকাশকে ঝকমকে করে রেখেছিল, এ দিন সেটা নেই। ভারতীয় ড্রেসিংরুমের মতো সেটা আজ মেঘলা। পূর্বাভাস বলছে, বৃষ্টি ভাল রকমই নাকি হতে পারে। কিন্তু তাতে কী? পঁচিশ হাজারের মাঠে এখনই হাজার বারো-পনেরো। কোনও সন্দেহ নেই যে সময় যত গড়াবে, তত সংখ্যা আরও বাড়বে। আসলে গোটা দেশটাই ভারতের বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব বাংলাওয়াশের গন্ধ পেয়ে গিয়েছে। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে। নিউজিল্যান্ডকে নিজের দেশে গুঁড়িয়ে ছেড়েছে। পাকিস্তানকে ওয়ান ডে যুদ্ধে হারিয়েছে ৩-০। এ বার ভারত। এবং তৃতীয় ওয়ান ডে-তেও শুরু থেকেই ভারতীয় ব্যাটিংয়ের সামনে মুস্তাফিজুরের সেই চেনা তেজ। গ্যালারিতে দুই ব্যাঘ্ররূপী দুই মনুষ্যের ক্রমাগত দেশের পতাকা নাড়িয়ে যাওয়া।
সব মিলিয়ে কী দাঁড়াল?
পদ্মাপারের আকাঙ্খার ‘বাংলাওয়াশ’ শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন হবে কি না সময় বলবে। বুধবার মধ্যরাতের আগে তা জানা যাবে না। শুধু একটা জিনিস, দুপুর তিনটেতে বসেও একটা কথা লিখে ফেলা যায়।
মীরপুরের আকাশকে যতই মেঘাচ্ছন্ন দেখাক, আদতে মোটেও সেটা নয়। বৃষ্টি নামুক না নামুক, মেঘ কাটুক না কাটুক, রোদ উঠেছে বাংলাদেশে।
আবেগের। আকাঙ্খার।