অপ্রতিরোধ্য: এইবারের রক্ষণ ভেঙে এগোচ্ছেন লিওনেল মেসি। ছবি: রয়টার্স।
অপ্রতিরোধ্য লিওনেল মেসি। বার্সেলোনা ঝড়ে বিধ্বস্ত এইবার!
নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র) বার্সা ছেড়ে প্যারিস সঁ জরমঁ-এ চলে গিয়েছেন। ওসুমানে দেম্বেলে চোটের কারণে চার মাসের জন্য ছিটকে গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ক্যাম্প ন্যু-তে মঙ্গলবার এইবারের বিরুদ্ধে ম্যাচে আর এক তারকা লুইস সুয়ারেজ-ও ছিলেন না প্রথম দলে। তা সত্ত্বেও বার্সেলোনার গোলের বন্যায় ভেসে গেল এইবার। সৌজন্যে মেসি। ম্যাচের কুড়ি মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে বার্সাকে এগিয়ে দেন ফুটবল জাদুকর। ৩৮ মিনিটে গোল করেন পাউলিনহো। ৫৩ মিনিটে গোল ডেনিস সুয়ারেজের। ৫৭ মিনিটে এইবার স্ট্রাইকার সের্জি এনরিক ব্যবধান কমানোর পরে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন মেসি। ৫৯, ৬২ মিনিটে গোল করে হ্যাটট্রিক সেরে ফেলেন তিনি। আর ম্যাচ শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে চতুর্থ গোল করেন মেসি।
লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মিলিয়ে এই মরসুমে ছয় ম্যাচে ১১ গোল করেছেন মেসি। গোল পিছু সময় নিয়েছেন মাত্র ৪৯.০১ মিনিট। সব ম্যাচেই সেরা তিনি! এখানেই শেষ নয়। ইউরোপীয় লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় এই মুহূর্তে দ্বিতীয় স্থানে মেসি। ২০০৪ থেকে ২০১৭— বার্সার হয়ে তেরো বছরের কেরিয়ারে ৩৫৮ গোল করে সোমবারই টপকে গিয়েছেন জিমি গ্রেভস (৩৫৭)-কে। এ বার মেসির সামনে শুধু ৩৬৫ গোলের মালিক গার্ড মুলার। ফুটবল পণ্ডিতদের মতে মেসি যে রকম বিধ্বংসী ফর্মে আছেন, তাতে এ বছরই জার্মান কিংবদন্তির রেকর্ড ভেঙে ফেলবেন।
উচ্ছ্বসিত বার্সা ম্যানেজার আর্নেস্তো ভালভার্দে বলেছেন, ‘‘মেসি সম্পর্ক কী বলব বুঝতে পারছি না। ওর মতো বুদ্ধিমান ফুটবলার আমি কখনও দেখিনি। ওর সঙ্গে কারও তুলনাই হয় না।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘অনেকেই হয়তো ভাবছে, ম্যাচটা আমরা সহজেই জিতেছি। তা কিন্তু নয়। এইবার শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। কিন্তু মেসি কাজটা সহজ করে দিয়েছে।’’
বার্সা ম্যানেজার অবশ্য মেসির পারফরম্যান্সে বিস্মিত নন। ভালভার্দে বলেছেন, ‘‘একাই চার গোল করা মেসির কাছে নতুন কিছু তো নয়। এই ধরনের পারফরম্যান্স এর আগে ও অনেক বার দেখিয়েছে। এইবারের বিরুদ্ধে মেসির সেই দুর্ধর্ষ ফর্মের পুনরাবৃত্তিই দেখলাম।’’
এইবারের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে সুয়ারেজ না থাকা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। ম্যাচের পর ভালভার্দের ব্যাখ্যা, ‘‘সুয়ারেজের কোনও সমস্যা নেই। ওর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই বিশ্রাম দিয়েছিলাম। এতে দলেরই ভাল হবে। কারণ, টানা ম্যাচ খেলে ক্লান্ত সুয়ারেজ বিশ্রাম পেলে ফের তরতাজা হয়ে উঠবে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘একা সুয়ারেজ নয়, অন্য ফুটবলারদেরও বিশ্রাম দিয়েছি।’’
তিনি যে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ফুটবলারদের খেলাতে চান, তা খেতাফের বিরুদ্ধে ম্যাচের পরেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। বার্সা ম্যানেজারের যুক্তি ছিল, ‘‘মেসি, সুয়ারেজ ও ইনিয়েস্তাদের বয়স ৩০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। যতটা সম্ভব ওদের বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ করে দিতে চাই।’’
পাঁচে পাঁচ করে লা লিগা টেবিলের শীর্ষে এই মুহূর্তে বার্সা। শনিবার ক্যাম্প ন্যু-তে প্রতিপক্ষ খিরোনা। আরও এক বার মেসি-ম্যাজিক দেখার অপেক্ষায় ফুটবল বিশ্ব।