কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার ভাবনা-চিন্তাও করছেন বোর্ডের শীর্ষকর্তারা। ছবি: সংগৃহীত।
তথ্যের অধিকার জানার আইনের আওতায় আসা নিয়ে উত্তাল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। বাড়ছে জটিলতাও। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স (সিওএ) প্রধান বিনোদ রাই এই আইনের আওতায় আসা নিয়ে কোনও আপত্তি না করলেও বোর্ডের শীর্ষকর্তাদের এতে সায় নেই বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা। এমনকী তাঁরা কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার ভাবনা-চিন্তাও করছেন বলে জানানো হয়েছে।
এত দিন ধরে ভারতীয় বোর্ড নিজেদের স্বশাসিত সংস্থা বলে দাবি করলেও যে দিন থেকে তারা তথ্যের অধিকারের আওতায় আসবে, সে দিন থেকে তাদের দেশের জাতীয় ক্রীড়া প্রশাসক সংস্থাগুলির অন্যতম বলে গন্য করা হবে এবং ভারতীয় নাগরিকরা বোর্ডের যাবতীয় কার্যকলাপের ব্যাখ্যা চাওয়ার অধিকার পাবেন। এমনকী জাতীয় দল বাছাই নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানারও অধিকার পাবেন দেশের সাধারণ মানুষেরা।
এই সম্ভাবনার কথা ভেবে চিন্তায় বোর্ডের শীর্ষকর্তারা। সংবাদ সংস্থাকে এক কর্তা বলেন, ‘‘১০ জুলাই কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন সিওএ প্রধানকে ডেকে পাঠিয়েছিল। সেখানে কেন তাদের তথ্যের অধিকারের আওতায় আসা উচিত নয়, তার ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে সিওএ-র পক্ষ থেকে কোনও উত্তরই দেওয়া হয়নি। এখন আদালতে যাওয়া ছাড়া আমাদের কোনও রাস্তা নেই।’’
অন্য দিকে সিওএ প্রধান রাই এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের নির্দেশ আমাদের মেনে নেওয়া উচিত। কারণ, আমরা স্বচ্ছতা সমর্থন করি। বোর্ডের ওয়েবসাইটেই তার প্রতিফলন পাওয়া যায়। এই মাধ্যমে আমরা বোর্ডের সিদ্ধান্ত ও কাজকর্মের তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করেই থাকি। বোর্ডের কোনও তথ্য গোপন না করার পক্ষপাতী আমরা। বোর্ডে আরও বেশি নীতি, স্বচ্ছতা আনতে চাই আমরা। তাই তথ্যের অধিকারের আওতায় আসতে কোনও অসুবিধা আছে বলে মনে হয় না।’’
রাই এই কথা বললেও বোর্ডের মধ্যেই তাঁর সিদ্ধান্ত জানানোর প্রবণতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, অনেকেরই অভিযোগ, তথ্যের আওতায় আসা নিয়ে একটিও শব্দ নাকি বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেননি তিনি। মাত্র তিনজনে মিলে বোর্ডের সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, এমন অভিযোগও উঠেছে। বোর্ড তথ্যের অধিকারের আওতায় এলে তা পুরোপুরি আসবে কি না, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। কিছু কিছু বিষয় সম্পর্কে হয়তো ব্যাখ্যা নাও দেওয়া হতে পারে। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, সেটা সম্ভব না।
প্রশ্ন উঠছে, দল বাছাইয়ে কোনও ক্রিকেটারের থাকা বা না থাকা নিয়ে, আইপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বিনিয়োগের অঙ্ক নিয়ে জানতে চাওয়া হলেও তা বোর্ড জানাতে পারবে কি? বোর্ড কর্তাদেরই বা কেন এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার অধিকার দিচ্ছেন না কেন সিওএ প্রধান, সে প্রশ্নও উঠছে। তবে রাই-ঘনিষ্ঠ এক আইনজীবী এ দিন জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের নির্দেশ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বোর্ড কর্তাদের চাপে পাল্টা আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায় কি না, তাও খতিয়ে দেখা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।