ডালমিয়া-ঠাকুর: মানসিক দূরত্ব থেকে যাচ্ছে।
জগমোহন ডালমিয়া ও অনুরাগ ঠাকুর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দুই শীর্ষপদে বসেছেন তিন মাসেরও বেশি হয়ে গেল। অথচ এখনও সচিব অনুরাগ যা বলছেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তার উল্টো কথা বলছেন প্রেসিডেন্ট ডালমিয়া।
এমন অবশ্য আগেও ঘটেছে। তবে রায়না-জাডেজার মতো সংবেদনশীল ইস্যুতেও যে দু’জন দুই মেরুতে, তা জেনে অবাক দেশের ক্রিকেট মহল।
কয়েক দিন আগেই ফাঁস হওয়া আইসিসি-কে পাঠানো ললিত মোদীর ই-মেল নিয়ে সোমবার এই দুই অভিযুক্ত ক্রিকেটারকে বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুর ‘ক্লিন চিট’ দিলেও ২৪ ঘন্টা পরেই প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া বললেন উল্টো কথা।
এ দিন সন্ধ্যায় সিএবি-তে বোর্ড প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে যে লিখিত বিবৃতি দেওয়া হল, তাতে লেখা, ‘‘আইসিসি এসিএসইউ ললিত মোদীর পাঠানো ই-মেলের বক্তব্য বিসিসিআই-কে জানানোর সময়ই বলে দিয়েছিল যে, তারাই অভিযুক্ত তিন ক্রিকেটারকে নিয়ে তদন্তের ভার নিচ্ছে। সেই তদন্তের ফল বোর্ডকে এখন পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। তাই এই নিয়ে এখন কোনও মন্তব্য করছি না।’’
বোর্ড প্রেসিডেন্ট ও সচিব যে দুই মেরুতে, তা ডালমিয়ার এই বিবৃতির পরই বোঝা গেল। কারণ, আগের দিনই এই একই প্রসঙ্গে উল্টো কথা বলেছিলেন অনুরাগ ঠাকুর। ঠিক কী বলেছিলেন তিনি? ‘‘ললিত মোদীর পাঠানো ই-মেল বিসিসিআই-কেও পাঠিয়েছিল আইসিসি। সেই ই-মেল আমরা দেখেছি। অভিযুক্ত যদি কোনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হয়, তা হলে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করার কথা আইসিসি-র দুর্নীতি দমন বিভাগেরই। সেখানে কিছুই পাওয়া যায়নি। যদি কিছু পাওয়া যেত, তা হলে তারা (আইসিসি) আমাদের জানাত। কিন্তু আইসিসি যেহেতু আমাদের কিছুই জানায়নি, তাই এর মানে এটাই দাঁড়ায় যে, অভিযুক্ত ক্রিকেটাররা ‘ক্লিন চিট’ পেয়ে গিয়েছে’’, বলেছিলেন অনুরাগ। সোমবার সচিবের দেওয়া এই বিবৃতির পরের দিনই ডালমিয়া যে বিবৃতি দিলেন, তাতে রায়না, জাডেজাদের নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অবস্থান ঠিক কী, তা স্পষ্ট হল না।
রাতে অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গে এই নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে বোর্ডের দুই শীর্ষকর্তার এই পরষ্পরবিরোধী মন্তব্যে দেশের ক্রিকেট মহলে সংশয় দেখা দিয়েছে। বোর্ডের এক প্রাক্তন সচিব যেমন বলেই দিলেন, ‘‘কয়েক দিন আগেই একটা প্রশ্ন উঠেছিল, বোর্ড আসলে কে চালাচ্ছেন। ডালমিয়া, না অনুরাগ ঠাকুর? এখন দেখছি প্রশ্নটা অকারণে ওঠেনি। বোঝাই যাচ্ছে দুই শীর্ষকর্তার মধ্যে কোনও যোগাযোগই নেই। এ ভাবে কী করে বোর্ড চলবে কে জানে।’’