লড়াই চলবে। বোর্ডের সভায় বুঝিয়ে দিলেন অনুরাগরা। ছবি: পিটিআই।
স্লগ ওভারে ঢুকে পড়া একটা ম্যাচ। জয়-পরাজয়ের চূড়ান্ত রেজাল্ট আউট হতে বেশি নয়, বাকি আর তিনটে দিন। দু’টো টিমের মধ্যে একটার ভবিতব্য বুঝতে অসুবিধেও হচ্ছে না। তাদের শর্তটা খুব সহজ— মেনে নাও হার। অথবা অপেক্ষা করো চরম দণ্ডের।
এই অবস্থায় প্রথম রাস্তাই হয়তো বিবেচ্য হওয়া উচিত। উচিত, কিন্তু হচ্ছে না। ভারতীয় বোর্ড হাঁটছে না। লোঢা কমিশনের বিরুদ্ধে ম্যাচে তারা দ্বিতীয় রাস্তাতেই চলতে চাইছে। চরমতম দণ্ড নেমে আসতে পারে জেনেও তারা হাঁটতে চাইছে বিদ্রোহের রাস্তায়।
এমনকী অস্তিত্বলোপ ঘটে গেলেও!
আগামী ৫ ডিসেম্বর লোঢা মামলার চূ়ড়ান্ত রায় শোনাবে সুপ্রিম কোর্ট। তার আগে শুক্রবার নয়াদিল্লিতে বিশেষ সাধারণ সভা ডেকেছিল বোর্ড (সিএবি প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার যুগ্ম সচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়)। কারণ, শনিবারের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতকে জানাতে হবে যে তারা লোঢা সংস্কার মেনে নিচ্ছে কি না। কিন্তু আধঘণ্টার বৈঠকে ঠিক হয়, যা মানা হয়েছে ওই পর্যন্তই থাকবে। কোনও সংস্কার নতুন করে মানা সম্ভব হবে না।
অর্থাৎ, সত্তরোর্ধ্বদের ক্রিকেট প্রশাসন ছেড়ে দেওয়া— মানা হবে না। ক্রিকেট প্রশাসনে সর্বোচ্চ ন’বছর থাকা যাবে— মানা হবে না। তিন বছরের কুলিং পিরিয়ড— মানা হবে না তা-ও।
ঘটনা হল, চলতি ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে রাজকোটে মানসিক জয় তুলে নিয়েও অ্যালিস্টার কুকের ইংল্যান্ড পরের দু’টো টেস্টে যে মনোভাব দেখাতে পারেনি, অনুরাগ ঠাকুরের বোর্ড বারবার ধাক্কা খেয়েও আশ্চর্যজনক ভাবে তা দেখাতে পারছে! দেশের সর্বোচ্চ আদালত চরমতম রায় শোনাতে পারে জেনেও তারা বলতে পারছে যে, কিছু করার নেই। যে যে সংস্কার মানা সম্ভব মানা হয়েছে। যা সম্ভব নয়, তা কখনওই সম্ভব নয়। এ বার যে রায় আসে আসুক! এ দিন বৈঠক শেষে বোর্ড সচিব অজয়র শিরকে বলে দেন, ‘‘আমরা সদস্যদের আবার বলেছি অবস্থাটা। ওরাও নিজেদেরটা বলেছেন। লোঢা সংস্কার মানা নিয়ে আগে যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন, সেটাই ধরে রাখছেন।’’
নয়াদিল্লিতে ফোন করে একটা অদ্ভুত ব্যাপারও শোনা গেল। সদস্যদের নাকি এ দিনের বৈঠকে বলে দেওয়া হয়েছে, কোনও বিরূপ রায় এলে প্ল্যান বি তৈরি রাখতে। যা কারও কারও মতে, একই। বিদ্রোহ। কেউ কেউ ভাসিয়ে দিলেন যে, বোর্ড নাকি মনে করে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব জি কে পিল্লাইয়ের মতো কাউকে কাউকে যে অবজার্ভার পদে বসাতে চাইছে লোঢা কমিশন, তাতে নাকি লাভ হবে না যদি রাজ্য ক্রিকেট সংস্থারা অসহযোগিতা করে। ভয়? তা-ও নেই বিশেষ। কেউ কেউ বেরিয়ে এমনও বলে দিয়েছেন যে, গত তিনটে বৈঠকে একই বিদ্রোহের সিদ্ধান্ত ধরে রেখেছে বোর্ড। নতুন করে আবার ভয় কীসের?
যা পরিস্থিতি, তাতে অনেক বেশি উত্তেজক ক্রিকেট-যুদ্ধের ফয়সলাটা সোমবারের নয়াদিল্লিতে ঘটছে। কোনও মুম্বই বা চেন্নাই নয়। আসলে ভারত বনাম ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ তো এর পাশে তুলনাতেই আসে না!