এই পোস্টারই আসছে ইডেনে
অধিনায়কত্ব। দায়বদ্ধতা। উপভোগ। গর্ব। সম্মান। বিশ্বাস। বিশুদ্ধতা।
ইংরেজিতে উপরের শব্দগুলোকে পরপর ভাবুন। অনুবাদ করুন ইংরেজিতে। লিডারশিপে শুরু হবে, শেষ ইন্টেগ্রিটিতে। মাঝের অক্ষরগুলোকে তার পর জুড়ে ফেললে দেখা যাবে, শব্দ পাওয়া যাচ্ছে আরও একটা।
ইংরেজিতে অনেস্টি। বাংলায় সততা।
আইপিএলকে পরিচ্ছন্ন করতে এত দিন নানাবিধ পদক্ষেপ নিতে দেখা গিয়েছে ভারতীয় বোর্ডকে। কিন্তু পোস্টারে ‘অনেস্টি’ শব্দটাকে গোল করে বিশেষ ভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, করে সেটাকে সেঁটে দেওয়া হচ্ছে ড্রেসিংরুমের বাইরে, যাতে কি না ঢুকতে-বেরোতে সর্বদা তা চোখে পড়ে ক্রিকেটারদের, এমন অভিনব ভাবনা আগে সম্ভবত হয়নি। আইপিএল আট থেকে যা সেঁটে দেওয়া হবে ভারতবর্ষের সমস্ত ক্রিকেট কেন্দ্রের ড্রেসিংরুমের বাইরে।
জিনিসটার পোশাকি নাম ‘পিসিটি’ কোড। যেখানে পরপর বিভিন্ন শব্দ লিখে সততা শব্দটায় বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। কারণ কিছুই নয়, ক্রিকেটারদের বারবার মনে করিয়ে দেওয়া— কোনও প্রলোভনে ভেসে যেও না। বরং খেলাটার প্রতি সৎ থাকো। ইতিমধ্যেই দেশের কয়েকটা স্টেডিয়ামে বোর্ড প্রচারিত এমন অভিনব পোস্টার বসে গিয়েছে। দিন কয়েকের মধ্যে ইডেনেও বসতে চলেছে।
গত কয়েক মরসুমে আইপিএল নিয়ে নানা কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত হয়ে আছে বোর্ড। যার মূল স্পট-ফিক্সিং কেলেঙ্কারি। ক্রিকেটারদের উপর কড়াকড়িও প্রচুর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আগের থেকে। এ বারও যা বহাল থাকছে। যেমন বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির ক্রিকেটারদের বারবার মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে, টুর্নামেন্টের দু’টো মাস কাউকে বিশ্বাস না করতে। অতি পরিচিত বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে আধাপরিচিত লোকজন, কাউকে নয়। মোবাইল ব্যবহার নিয়েও নানা নির্দেশিকা। ম্যাচ সংক্রান্ত সামান্যতম তথ্যও ফোন বা মেসেজে ঘনিষ্ঠতম কাউকেও বলা যাবে না। উপহার গ্রহণের ব্যাপার তো নেই-ই। সব শেষে প্রত্যেক টিমের সঙ্গে থাকবেন একজন করে নিরাপত্তা অফিসার। ক্রিকেটাররা কার সঙ্গে কতটা যোগাযোগ রাখছেন, তার খোঁজখবর রাখতে। মোটামুটি নিশ্ছিদ্র দুর্গে ঢুকিয়ে ফেলা হচ্ছে টিমকে।
এবং এত সবের পরেও ক্রিকেটারদের বাড়তি সচেতন করার এমন অভিনব পদ্ধতি। বর্তমান বোর্ড কর্তা তথা সিএবি কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে যা নিয়ে শুক্রবার বললেন, ‘‘মুম্বই থেকে এটা তৈরি হয়ে আসছে। ইডেনেও থাকবে। যাতে ক্রিকেটারদের মূল্যবোধের গুরুত্বটা বোঝানো যায়।’’ বোর্ড মনে করছে, এর ফলে চট করে কোনও ক্রিকেটারের পক্ষে দুর্নীতির রাস্তায় যাওয়া সম্ভব হবে না। কারণ ক্রিকেটারদের বলার চেয়েও যদি চোখের সামনে কিছু সব সময় দেখানো যায়, তার প্রভাব আরও বেশি থাকবে। বোর্ডের এমন নতুন পদক্ষেপ কতটা কার্যকরী হবে, এখন সময় বলবে।