বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক সেরে সৌরভ। মঙ্গলবার।ছবি: পিটিআই
বিচারপতি রাজেন্দ্র মাল লোঢা ও তাঁর আইনজীবীদের প্যানেলের সঙ্গে বোঝাপড়ার জন্য এক পাল্টা প্যানেল গড়ল বিসিসিআই। যার প্রধান হলেন বিচারপতি মার্কণ্ডেয় কাটজু।
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও প্রেস কাউন্সিলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান কাটজু ছাড়াও চার সদস্যের এই প্যানেলে বোর্ডের আইনজীবী অভিনব মুখোপাধ্যায়ও থাকবেন। বাকি দুই সদস্যের নাম হয়তো ঠিক হবে শুক্রবার বোর্ডের বিশেষ সাধারণ সভায়। এখন দেখার ৯ অগস্ট লোঢা প্যানেলের সঙ্গে যে বৈঠক হওয়ার কথা, সেই বৈঠকে বোর্ডের এই নতুন কাটজু প্যানেল গিয়ে হাজির হয় কি না।
লোঢা প্যানেলের সুপারিশগুলো বেশিরভাগই বেশ জটিল বলে মঙ্গলবার মুম্বইয়ে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা জানান। সুপারিশগুলো মেনে ভারতীয় ক্রিকেটে আমূল পরিবর্তন আনতে গিয়ে প্রচুর আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে বলে তাঁদের ধারণা। বিচারপতি কাটজু ও তাঁর প্যানেলকে সেই আইনি জটিলতা সামলানোরই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
এ দিন এক বোর্ড কর্তা সংবাদসংস্থাকে বলেন, ‘‘আইনি সমস্যাগুলো বোঝার ও বোঝানোর জন্য আমাদের দরকার ছিল এমন এক জন ডাকসাইটে আইনজ্ঞের। যিনি বিচারপতি লোঢা ও তাঁর প্যানেলের মুখোমুখি হয়ে আমাদের কথা তাঁদের ভাষায় বোঝাতে পারবেন।’’ তবে নতুন এই প্যানেল গঠন নিয়ে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে এ দিন দ্বিমত দেখা যায় বলে খবর।
কয়েক দিন আগেই শোনা গিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে নিলেও বোর্ড এই ব্যাপারে এককাট্টা হয়ে আক্রমণাত্মক স্টান্স নেওয়ার কথা ভাবছে। কাটজু প্যানেল গঠন তার প্রথম ধাপ বলে বোর্ডের একাংশের মত। সোজাসাপ্টা মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে থাকতেই অভ্যস্ত বিচারপতি কাটজু। গত বছর লোঢা প্যানেল গঠনের পর সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিলেন তিনি।
আইনের সীমার মধ্যে থেকে তিনি যে বোর্ডকে এই আক্রমণাত্মক অবস্থানে থাকতে সাহায্য করবেন, তেমনই মনে করা হচ্ছে। শোনা গেল বোর্ড রাজ্য সংস্থাগুলিকে লোঢা প্যানেলের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে দিতে চায় না। রাজ্যের কর্তাদের বক্তব্যে কোনও আইনি গলদ থাকলে যাতে তাঁদের আদালত অবমাননার দায়ে পড়তে না হয়, সে জন্যই এই নির্দেশ। কাটজু প্যানেলের মাধ্যমেই তাঁদের বক্তব্য লোঢার কাছে পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে। যে খবরে সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা শুরু হয়ে যায়, বোর্ড শেষ পর্যন্ত আগুনের সঙ্গে আগুন নিয়ে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিল।
এ দিন বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ভিডিও কনফারেন্সে ছিলেন প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুর। এক সময় মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্ট শরদ পওয়ার বেশ মুখর হয়ে ওঠেন বলে জানা যায়। সভায় উপস্থিত এক কর্তা জানান, ‘‘পওয়ার সাহেব বেশ কিছু বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন, লোঢা প্যানেলের কাছে যেগুলির ব্যাখ্যা চাওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।’’ সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও পঞ্জাব ক্রিকেট সংস্থার সচিব মহেন্দ্র পাণ্ডবও বেশ কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
এ সব সমস্যা ৯ অগস্ট বিচারপতি কাটজু তাঁর সমসাময়িক বিচারপতি লোঢার টেবলে নিয়ে গিয়ে ফেলেন কি না, সেটাই দেখার। তার পরই হয়তো বোঝা যাবে দেশের ক্রিকেটের গতিপথ কোন দিকে মোড় নিতে চলেছে।