যত সময় পাব, টেস্টে পরিণত হব: কুলদীপ

শনিবার খেলার পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে কুলদীপ স্বীকার করেছেন, বিদেশে তাঁর দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামার আগে একটু নার্ভাস ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:১৭
Share:

হুঙ্কার: ৭১ রানে ৩ উইকেট। অস্ট্রেলিয়া শিবিরে আতঙ্ক তৈরি করলেন কুলদীপ যাদব। শনিবার। ছবি: গেটি ইমেজেস

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই তিন উইকেট। তবু দিনের শেষে কুলদীপ যাদব বলছেন, টেস্ট বোলার হিসেবে পরিণত হতে আরও সময় দরকার।

Advertisement

শনিবার খেলার পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে কুলদীপ স্বীকার করেছেন, বিদেশে তাঁর দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামার আগে একটু নার্ভাস ছিলেন। বিদেশ সফরে শেষ টেস্ট ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লর্ডসে খেলেছিলেন কুলদীপ। যেখানে সাফল্য পাননি। কুলদীপ বলছেন, ‘‘এই সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলছি। একটু নার্ভাস ছিলাম। তবে অস্ট্রেলিয়ায় খেলছি বলে বোলিংয়ে বিশেষ কোনও পরিবর্তন করিনি।’’

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নিজের জায়গা পাকা করে নিলেও টেস্টে এখনও অনিয়মিত এই চায়নাম্যান বোলার। কুলদীপ মনে করেন, অভিজ্ঞতা বাড়লেই টেস্ট বোলার হিসেবে আরও উন্নতি করবেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ক্রিকেট আমি যথেষ্ট খেলেছি। খেলাটা সম্পর্কে জানিও। কিন্তু টেস্টে হয়তো আমার আর একটু সময় লাগবে উন্নতি করতে। যত আপনি লাল বলের ক্রিকেট খেলবেন, তত উন্নতি করবেন। টেস্ট খেলতে খেলতে বোঝা যায়, এক জন ব্যাটসম্যান কী ভাবছে। সময় পাওয়া যায় ব্যাটসম্যানকে নিয়ে কৌশল ছকতে, ফিল্ডিং‌ সাজাতে।’’

Advertisement

সাদা বলের ক্রিকেট থেকে লাল বলের ক্রিকেটে মানিয়ে নেওয়াটাও যে খুব সহজ কাজ নয়, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন কুলদীপ। বলেছেন, ‘‘সাদা বলের ক্রিকেট থেকে লাল বলের ক্রিকেটে খেলতে নামলে চাপটা বেশি থাকে। এক জন লেগস্পিনারের অন্তত দশটা দিন সময় লাগে নিজের মানসিকতা আর বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ ঠিক করতে। নেটে খেললে কিছুটা উন্নতি করা যায় ঠিকই, কিন্তু ম্যাচ খেললে আরও বেশি করা যায়।’’

লর্ডস টেস্টের পরে ভারতের প্রথম একাদশে ফেরার সুযোগ ঘটেনি সি়ডনির আগে। কিন্তু কুলদীপ তখনই ঠিক করে নেন, লড়াই ছাড়বেন না। বলেছেন, ‘‘লর্ডস টেস্টের পরে দেশে ফিরে এসে আমি ব্যক্তিগত কোচের কাছে কয়েক দিন প্র্যাক্টিস করি। তার পরে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে ভারত ‘এ’ দলের হয়ে খেলি। ওখানে ভালই পারফর্ম করি। ছন্দ পেয়ে যাওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সাফল্য পেয়েছি।’’ ভারতীয় দলের স্পিন শক্তি নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিশ্বের সেরা দুই স্পিনার— অশ্বিন এবং জাডেজা এই দলে আছে। আমি তৃতীয় স্পিনার। ওদের দেখে শিখছি, প্রেরণা পাচ্ছি। ওরা নেটে আমাকে সব সময় ভাল করার জন্য উৎসাহ দিয়ে যায়। কী ভাবে বল করতে হবে, কোথায় বল করতে হবে, এই নিয়ে পরামর্শ দেয়। ওরা অনেক ক্রিকেট খেলেছে। আমি ওদের থেকে শিখছি।’’

তাঁর চায়নাম্যান বা গুগলি, ব্যাটসম্যানদের পক্ষে এখনও ধরতে পারা কঠিন। কিন্তু কুলদীপ খুব সাধারণ ফর্মুলায় বিশ্বাসী। স্পিনার হিসেবে প্রাথমিক কাজটা ঠিক করে করো, ব্যাটসম্যানকে ফ্লাইটে পরাস্ত করো। খুব বেশি বৈচিত্র আনার প্রয়োজন নেই। ‘‘এক জন স্পিনারকে কয়েকটা প্রাথমিক ব্যাপার মেনে চলতে হয়। যেমন, ঠিকঠাক ফ্লাইট করানো, বলটাকে ঠিক জায়গায় ফেলে ব্যাটসম্যানকে শূন্যে পরাস্ত করা। আমার কাছে এ ব্যাপারগুলোই আসল। আমি এগুলোই উন্নত করার চেষ্টা করছি।’’ যোগ করছেন, ‘‘আমি রহস্য-স্পিনে বিশ্বাস করি না। তার চেয়ে ব্যাটসম্যানকে হাওয়ায় হার মানানোটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’

উসমান খোয়াজা এবং টিম পেন— দু’জনই কুলদীপের স্পিন বুঝতে না পেরে আউট হয়ে যান। যা নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘ঠিক করে নিয়েছিলাম, খোয়াজাকে গুগলি দেব। কয়েক ওভার আগে ওভার দ্য উইকেট বল করার সময় বুঝি, ও আমাকে মিডঅন বা মিডউইকেট দিয়ে মারতে চেষ্টা করবে। ভাগ্য ভাল, ডেলিভারিটা ঠিক জায়গায় পড়ল।’’

সতীর্থদেরও ধন্যবাদ জানিয়ে কুলদীপ বলেছেন, ‘‘বিরাট কোহালির মতো সিনিয়র যেমন পরামর্শ দেয়, তেমনই ঋষভ পন্থও সাহায্য করে।’’ আলাদা করে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে নিয়ে বলেন, ‘‘ওয়ান ডে-তে কাজটা সোজা হয়ে যায়, কারণ তখন ধোনি থাকে। ওর পরামর্শ খুব দামি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন