ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। — ফাইল চিত্র।
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই সমুদ্রসৈকতে দুই বন্দুকবাজের হানায় মৃত্যু হয়েছে ১৫ জন ইহুদির। দুই আততায়ীর অন্যতম সাজিদ আক্রম জন্মসূত্রে ভারতীয়। অপর আততায়ী নবিদ আক্রম তাঁরই পুত্র। মঙ্গলবারই এই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। ঘটনাচক্রে, সেই দিনই ইজ়রায়েলে পৌঁছোলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বন্ডাইয়ে ইহুদি-হত্যার তীব্র নিন্দা করেন তিনি। পাশাপাশি, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সন্ত্রাসবাদকে কোনও ভাবেই সমর্থন করে না ভারত।
দু’দিনের সফরে ইজ়রায়েলে গিয়েছেন জয়শঙ্কর। জেরুসালেমে ইজ়রায়েলি বিদেশমন্ত্রী গিদন মোশে সারের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। সেখান থেকেই সাংবাদিকদের জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদকে কোনও ভাবেই সমর্থন করে না ভারত। এ বিষয়ে ভারত ও ইজ়রায়েল, দুই দেশই ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি মেনে চলে। হনুক্কাহ্ উৎসব চলাকালীন বন্ডাই সৈকতে যে জঙ্গি হানা হয়েছে, তা নিয়ে ভারত গভীর ভাবে শোকাহত। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।’’ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে ভারতের পাশে থাকার জন্য ইজ়রায়েলকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার সিডনির বন্ডাই সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের উৎসব হনুক্কাহ্ চলাকালীন দুই বন্দুকধারীর হামলায় ১৫ জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হন। দুই আততায়ী সম্পর্কে পিতা-পুত্র ছিলেন। পিতা সাজ়িদ জন্মসূত্রে ভারতীয়, জন্ম হায়দরাবাদে। তাঁর ২৪ বছর বয়সি ছেলে নবিদ অবশ্য অস্ট্রেলীয় নাগরিক ছিলেন। তাঁদের কাছ থেকে ভারতীয় পাসপোর্টও পাওয়া গিয়েছে। তা নিয়ে সম্প্রতি ফিলিপিন্সে ভ্রমণও করেছিলেন দু’জনে। দুই আততায়ীর ভারত-যোগ নিয়ে অবশ্য আলাদা করে কিছু বলতে শোনা যায়নি জয়শঙ্করকে। তবে মঙ্গলবার তেলঙ্গানা পুলিশ জানিয়েছে, ভারতে থাকাকালীন কোনও অপরাধমূলক ইতিহাস ছিল না সাজিদের। বরং ১৯৯৮ সালে পড়ুয়া ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান তিনি। তার পর বিয়ে করে সন্তানসন্ততি নিয়ে অস্ট্রেলিয়াতেই পাকাপাকি ভাবে থাকতে শুরু করেন। সেই থেকে দেশের সঙ্গে যোগাযোগও ক্রমশ কমতে থাকে তাঁর। যোগাযোগ কমতে থাকে পরিবারের সঙ্গেও। ২০১৭ সালে পিতার শেষকৃত্যেও যাননি সাজিদ। ২০২২ সালে বিশেষ প্রয়োজনে একবার দেশে ফেরেন। তবে সেই শেষ। তার পর আর ভারতে যাননি তাঁরা কেউই।
জয়শঙ্কর আরও জানিয়েছেন, তাঁর ইজ়রায়েল সফরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গাজ়া শান্তি পরিকল্পনার প্রতি ভারতের সমর্থনও পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, শীঘ্রই ভারতে আসতে পারেন ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে তাঁর। সেখানেই ইজ়রায়েলি রাষ্ট্রনেতা জানিয়েছেন, ‘খুব শীঘ্রই’ দেখা করবেন তাঁরা। তার আগেই সে দেশে সফর করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। দু’দিনের সফরে ইজ়রায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জোগ এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি।