সিডনিতে নতুন ইতিহাস লিখে আবেগের বিস্ফোরণ

সিডনিতে বিশ্বজয়ের পর শুরু নয়া তর্ক, এটাই কি ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বসেরা দিন?

মাঠ থেকে ফেরার পরে হোটেলের লবিতে অসাধারণ সংবর্ধনা দিল ভারতীয় ভক্তদের গ্রুপ ‘ভারত আর্মি’।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:১৭
Share:

সিডনিতে বিশ্বজয়ের পর টিম ইন্ডিয়া। ছবি: এএফপি।

• ২৫ জুন, লর্ডস, ১৯৮৩। • ১০ মার্চ, মেলবোর্ন, ১৯৮৫।২ এপ্রিল, ওয়াংখেড়ে, ২০১১। ৭ জানুয়ারি, সিডনি, ২০১৯।

Advertisement

কোনটা ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বসেরা দিন? সিডনিতে নজিরবিহীন টেস্ট সিরিজ জেতার দিনে তর্কটা উঠেই গেল। ভাংড়া, দেশাত্মবোধক গান আর বিরাট কোহালিদের বিজয়োৎসবের মধ্যে যা দ্রুতই উঠে এসেছে সব চেয়ে আলোচ্য বিষয় হিসেবে।

মাঠ থেকে ফেরার পরে হোটেলের লবিতে অসাধারণ সংবর্ধনা দিল ভারতীয় ভক্তদের গ্রুপ ‘ভারত আর্মি’। লবিতে কোহালিরা প্রবেশ করা মাত্রই ব্যান্ড, শঙ্খধ্বনিতে তাঁদের অভ্যর্থনা জানানো হয়। পঞ্জাবি ব্যান্ডের তালে নাচতে নাচতে হোটেলে প্রবেশ করেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। সবার প্রথমে ‘কফি উইথ কর্ণ’ শোয়ে গিয়ে বিতর্ক তৈরি করে ট্রোলড হওয়া হার্দিক পাণ্ড্য। তার পিছন পিছন ঢোকা ইশান্ত শর্মাকেও নাচতে দেখা যায়। এর পরে কোহালি এলে ব্যান্ডের আওয়াজ আরও বেড়ে যায়। দেখা যায় ভারত অধিনায়কও ভাংড়া নাচছেন। সঙ্গে গান বাজতে থাকে, ‘মেরে দেশ কি ধরতি সোনা উগলে, উগলে হিরে মোতি, মেরে দেশ কি ধরতি।’

Advertisement

অ্যালান বর্ডারের হাত থেকে ট্রফি নিচ্ছেন ভারত অধিনায়ক। ছবি: রয়টার্স।

এর আগে মাঠে ভারত অধিনায়ককে তাঁর সতীর্থদের পাশাপাশি স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার সঙ্গেও বিজয়োৎসবে মেতে উঠতে দেখা গিয়েছে। বিরুষ্কা একে অপরকে অভিনন্দন জানিয়ে আবেগপুর্ণ টুইটও করেছেন। কিন্তু একাত্তর বছরে প্রথম বার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয়ের পরে নতুন তর্কটা তুলে দিয়ে গেলেন এমন দু’জন, যাঁরা আগে বি‌শ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য এবং সোমবার সিডনিতে ইতিহাস সৃষ্টির সময়েও উপস্থিত ছিলেন।

ভারতীয় দলের অধিনায়ক বিরাট কোহালি এবং হেড কোচ রবি শাস্ত্রী দু’জনেই বলে দিয়ে গেলেন, অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম বার টেস্ট সিরিজ জয় বিশ্বজয়ের সমান, যদি না তার চেয়েও বড় হয়। ২০১১-র ২ এপ্রিল ওয়াংখেড়েতে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভারত যখন বিশ্বকাপ জিতছে, কোহালি তখন দলের তরুণতম সদস্য। এ দিন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, সেই বিশ্বকাপ জয়ের রাতের তুলনায় কোথায় রাখবেন এই জয়কে? ভারত অধিনায়ক বললেন, ‘‘আমি ২০১১ বিশ্বকাপ দলের সদস্য ছিলাম। কিন্তু আমার মধ্যে কখনও বিশ্বকাপ জেতার আবেগ কাজ করছিল না। কারণ আমি তার আগে কখনও বিশ্বকাপ খেলিনি। সেই টিমে অনেক সিনিয়র ছিল, যারা বিশ্বকাপ জেতেনি। তাদের কাছে অনেক বারের চেষ্টার পরে শেষ পর্যন্ত দেশের মাঠে বিশ্বকাপ জেতার আবেগ ছিল অন্য রকম।’’

আরও পড়ুন: ওয়ান ডে থেকে বিশ্রাম বুমরাকে

ওয়াংখেড়েতে বিশ্বকাপ জয়ে সব চেয়ে আবেগময় চরিত্র ছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। ঘরের মাঠে সে বারই ছিল তাঁর বিশ্বজয়ের শেষ সুযোগ। ২ এপ্রিলের সেই মায়াবী রাতে এই কোহালিই কাঁধে করে ওয়াংখেড়ে ঘুরিয়েছিলেন সচিনকে। এখনকার অধিনায়ক দু’টো জয়কে পাশাপাশি রেখে বলছেন, ‘‘বিশ্বকাপ জয় খুবই বড় ব্যাপার ছিল কিন্তু আমাকে যদি জিজ্ঞেস করেন, কোনটা বেশি আবেগের তা হলে বলব, এটা। কারণ অস্ট্রেলিয়ায় এই নিয়ে আমি তিন বার এলাম এবং জানি, এখানে জেতা কতটা কঠিন। বিশেষ করে গত বারো মাস আমরা যে কঠিন সময়ের মধ্যে গিয়েছি, সেটাকে মাথায় রাখলে এই জয়কে এগিয়ে রাখতে হবে।’’

উদ্‌যাপন: উপমহাদেশের প্রথম দল হিসেবে একাত্তর বছরে অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্ট সিরিজ জিতল বিরাট কোহালির ভারত। সিরিজ ২-১। ‘িটম ইন্ডিয়া’-র উল্লাসে শামিল অনুষ্কা শর্মাও। সোমবার সিডনিতে। ছবি: এএফপি।

মধ্যমণি ম্যাচ ও সিরিজ সেরা পূজারাকে নিয়ে সতীর্থেরা। ছবি: রয়টার্স।

স্মারক হাতে কুলদীপ। সোমবার সিডনিতে। ছবি: গেটি ইমেজেস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন