শোকের আবহেই ফের অস্ট্রেলিয়া নেটে মাইকেল ক্লার্ক। ছবি: গেটি ইমেজেস
দুটো প্রস্তুতি ম্যাচে জোড়া হাফ সেঞ্চুরি আর উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে আট শিকার। তার পরও সম্ভবত অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে নামা হচ্ছে না ঋদ্ধিমান সাহার। মঙ্গলবার অ্যাডিলেড টেস্টে খেলতে পারেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে শিখর ধবন সে রকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিরাট কোহলি না ধোনিই প্রথম ম্যাচে ভারতকে নেতৃত্ব দেবেন? ধবন বলছেন, “দু’জনেই আগ্রাসী অধিনায়ক। কিছুটা পার্থক্যও আছে। মাঠে বিরাটের মধ্যে অনেক বেশি ছটফটানি থাকে। দু’জনের নেতৃত্বেই খেলা উপভোগ করি। তবে ধোনি চলে আসায় হয়তো বিরাটকে ভারতের টেস্ট অধিনায়কত্ব করার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।”
ধোনির হাতের তালুতে চোট থাকায় প্রথমে ঠিক ছিল দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ধোনি খেলবেন যা অ্যাডিলেডে প্রথমে হওয়ার কথা ছিল ১২ ডিসেম্বর। কিন্তু ফিলিপ হিউজের ঘটনার পর পরিবর্তিত সূচি ঘোষণা হতেই ধোনির প্রথম টেস্ট থেকেই মাঠে নামার সম্ভাবনা পরিষ্কার হতে শুরু করে। তবে, প্রথম টেস্টে অধিনায়কের নামা নিয়ে আশা-আশঙ্কা রয়েছে অস্ট্রেলীয় শিবিরেও।
হিউজের শোক কাটাতে ইতিমধ্যেই ক্লার্ককে প্রথা মাফিক সাংবাদিক বৈঠকের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। মিচেল জনসন যা আপাতত সামলাবেন। শুক্রবার টিমের প্র্যাকটিসেও যোগ দেন ক্লার্ক। নেটে ব্যাটিংও করলেন। হ্যামস্ট্রিং চোট কাটিয়ে ক্লার্কের অ্যাডিলেডে নামার ব্যাপারে আশার কথাই শোনা গেল সহ-অধিনায়ক ব্র্যাড হাডিনের মুখে, “দীর্ঘদিন ধরেই মাইকেল দলের জন্য বড় ভরসার জায়গা। দুরন্ত ক্যাপ্টেন। আর আমরা আমাদের ক্যাপ্টেনকে মাঠে দেখতে চাই। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে মাইকেলকে আমরা হয়তো অ্যাডিলেডে নামতে দেখতে পাব।”
হিউজের শোক কাটিয়ে ভারত-অস্ট্রেলিয়া মহারণের আঁচে হাত-পা সেঁকা শুরু হয়েছে। জনসনরা বৃহস্পতিবার থেকে প্র্যাকটিসও শুরু করে দিয়েছেন। যে প্রসঙ্গ উঠতেই হাডিন বলে দেন, “গত কাল দিনটা খুব ভাল ছিল। আমরা আবার ক্রিকেটে ফিরেছি। যে খেলাটা আমরা এত ভালবাসি তাতে ফিরে আসতেই তো চাইব। আগামী দু’দিন প্র্যাকটিসে পেশাদার ক্রিকেটের অনুভূতিটা ফিরিয়ে আনাটাই লক্ষ্য।”
তৈরি ভারতীয় শিবিরও। অজি পেসার মিচেল জনসনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার প্রসঙ্গ উঠতেই তাই ধবন বলে দেন, “জনসন বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার। ওঁর বলে ভাল গতি রয়েছে। তবে আমরা এ রকম গতির বোলিংয়ের বিরুদ্ধে খেলাটা প্র্যাকটিস করেছি।” সঙ্গে ধবন আরও যোগ করেন, “তা ছাড়া এর আগে ভারতেও আন্তর্জাতিক ম্যাচ আর আইপিএলে আমি জনসনের বোলিংয়ের বিরুদ্ধে খেলেছি। এটা ঠিক প্রথম বার অস্ট্রেলিয়ায় ওঁর বোলিংয়ের সামনে পড়ব, তাই মনে হচ্ছে চ্যালেঞ্জটা জমবে। আশা করছি জনসনের বিরুদ্ধে ব্যাটিং করাটা উপভোগ করতে পারব।”
শুধু ব্যাটিং উপভোগে করাই নয় ওপানিংয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং করার পাল্টা চ্যালেঞ্জও দিয়ে রাখেন ধবন। “ওপেনিংয়ে একজন আগ্রাসী ব্যাট থাকাটা দরকার। তাতে পরিস্থিতি টিমের অনুকূলে আনতে আর মোমেন্টাম পেতে সাহায্য করা যায়। দলের হয়ে যে ভূমিকা নিতে আমার দারুণ লাগবে।”
ধবনের জন্য অবশ্য ভারতের হয়ে ‘সেকেন্ড হোম’-এ খেলার চ্যালেঞ্জও থাকছে। তাঁর স্ত্রী ও বাচ্চারা মেলবোর্নেই থাকেন। সে প্রসঙ্গ উঠতেই মারকাটারি ভারতীয় ওপেনার বলে দেন, “ভারতীয় দলের সদস্য হিসেব এটাই আমার অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম সফর। অবশ্য স্ত্রী আর বাচ্চাদের নিয়ে আমি মেলবোর্নেই থাকি। তাই শ্বশুরবাড়িতে সিরিজ নিয়ে আমার একটা পরিকল্পনা রয়েছে। সেটা হল, ভাল ক্রিকেট খেলা।”