কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে মহারণের মহড়া

আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করবে দু’দলই

আর কয়েক ঘণ্টা পরেই ভারতীয় ফুটবলের সেই মহাম্যাচ—মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ডার্বি। প্রত্যাশা মতোই ডার্বির উত্তেজনায় মেতেছেন ফুটবলপ্রেমীরাও। এই ম্যাচের ঐতিহাসিক গুরুত্ব দূরে সরিয়ে রাখলে রবিবারের ডার্বির আকর্ষণ একটাই।

Advertisement

ভাইচুং ভুটিয়া

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:২৭
Share:

আর কয়েক ঘণ্টা পরেই ভারতীয় ফুটবলের সেই মহাম্যাচ—মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ডার্বি। প্রত্যাশা মতোই ডার্বির উত্তেজনায় মেতেছেন ফুটবলপ্রেমীরাও। এই ম্যাচের ঐতিহাসিক গুরুত্ব দূরে সরিয়ে রাখলে রবিবারের ডার্বির আকর্ষণ একটাই। তা হল দু’টো টিমই এ বার খেতাবের দৌড়ে রয়েছে এখনও।

Advertisement

এর আগে আই লিগের প্রথম পর্বের ডার্বি ম্যাচটা শিলিগুড়িতে স্টেডিয়ামে বসে দেখেছিলাম। ম্যাচটা আমাকে ভীষণ ভাবেই বিস্মিত করেছিল শুরু থেকেই। কারণ রেফারি খেলা শুরুর বাঁশি বাজানোর পরের মুহূর্ত থেকেই ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান— দুটো দলের লক্ষ্য ছিল ম্যাচটা না হেরে মাঠ ছাড়া। জেতার চেষ্টা দেখিনি দু’দলের মধ্যেই। ফলে হতাশই হয়েছিলাম। কারণ দু’দলই অতি-সাবধানী হয়ে মাঠে নেমেছিল সে দিন।

এ বার কিন্তু পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। রবিবারের ডার্বির ওপরেই নির্ভর করছে দুই প্রধানের আই লিগ ভাগ্য। খেতাবের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে জিততেই হবে তাদের। যারা হারবে ছিটকে যাবে চ্যাম্পিয়নশিপ দৌড় থেকে। তাই দু’দলই আক্রমণাত্মক স্ট্র্যাটেজি নিয়ে মাঠে নামবে বলে আমার মনে হচ্ছে। ম্যাচটা শুধু আকর্ষণীয় হবে না, অন্যতম সেরা ডার্বিও হতে চলেছে।

Advertisement

এই ডার্বিতে দুই প্রধানে দু’রকম সমস্যা। ইস্টবেঙ্গলের মরণ-বাঁচন লড়াই। ডার্বি জিততে না পারলে আই লিগ খেতাবের দৌড় থেকে রবিবারই ছিটকে যাবে। গত কয়েক বছরের মতো এ বারও বলতে হবে, ট্রফির কাছে অথচ কত দূরে!

তবে হোম ম্যাচ হলেও মোহনবাগানের সমস্যা হচ্ছে ম্যাচটা রবীন্দ্র সরোবরে নয়। হবে শিলিগুড়িতে। যে মাঠকে ঘরের মাঠ বলেই জানেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। আর কে না জানে, ডার্বি ম্যাচে সমর্থকদের একটা বড় ভূমিকা থাকে টিমকে মোটিভেট করতে। ফুটবল জীবনে যা হতে দেখেছি বারবার।

আই লিগের বিরতির পর প্রথমে বেঙ্গালুরু তার পর এএফসি কাপ ম্যাচে আবাহনীকে হারানোর পর মোহনবাগান আত্মবিশ্বাসী হয়েই নামবে ডার্বি খেলতে।

ইস্টবেঙ্গলের কাছে সেখানে এই ডার্বি ম্যাচ কিন্তু ডু অর ডাই পরিস্থিতি। লিগের শুরুটা ওদের ভাল হলেও সেই ছন্দটা ওরা ধরে রাখতে পারেনি। আর এখন লাল-হলুদ সমর্থকদেরও আশঙ্কা—আই লিগ হারানোর পুরনো যন্ত্রণা ফের না ভোগ করতে হয়। ডার্বি হেরে গেলে আই লিগ জেতার স্বপ্নটাই ভেঙে যেতে পারে ইস্টবেঙ্গলে। তা হলে ফের শুরু হয়ে যাবে ব্যর্থতার হতাশা।

অতীতে এই ম্যাচে পিছিয়ে থেকে নেমেও টেক্কা দিয়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। সেই ট্র্যাক রেকর্ড ডার্বির আগে লাল-হলুদ শিবিরে বাড়তি মোটিভেশন জোগাতে পারে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতেই পারে, দু’দলের তিন বিদেশির মধ্যে যাঁরা ভাল খেলবেন, তাঁরাই ফারাক গড়ে দেবেন। কিন্তু নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই ম্যাচে দুই টিমের প্রতিটি খেলোয়াড়ের লক্ষ্য থাকে যাতে পরদিন খবরের কাগজের শিরোনামে তাঁর নাম থাকে। এটাও ডার্বির অন্যতম একটা মোটিভেশন।

ফুটবলার হিসেবে এই ম্যাচটা বহুবার খেলেছি বলে জানি, টেনশনে পড়া চলবে না কোনও মতেই। প্রত্যাশার চাপ কাটিয়ে মাঠে নামতে হবে। আর সে ক্ষেত্রে একটাই দাওয়াই—বিপক্ষকে নিয়ে না ভেবে নিজের টিমের ইতিবাচক ব্যাপার নিয়ে চিন্তাভাবনা করা।

রবিবার আই লিগ
মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল (শিলিগুড়ি), টেন টু চ্যানেলে সরাসরি খেলা দেখা যাবে সন্ধে সাতটা থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন