‘আজও সেই সাম্বা ম্যাজিক দেখার অপেক্ষায় আছি’

ভারতের মাটিতে এখনও পর্যন্ত এই ব্রাজিল টিমটা যথেষ্ট দর্শনীয় ফুটবল খেলেছে। এর সঙ্গে যোগ করুন ব্রাজিল নামটার সঙ্গে যুক্ত হওয়া আবেগ।

Advertisement

সুনীল ছেত্রী

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:০৬
Share:

যুগলবন্দি: ব্রাজিলের অস্ত্র লিঙ্কন এবং অধিনায়ক বিতাও। ফাইল চিত্র

ব্রাজিল! এ কি একটা দেশের নাম? না কি আবেগের?

Advertisement

ভারতে এই নামটার সঙ্গে অনেক আবেগ জড়়িয়ে আছে। ওদের ফুটবলটা সুন্দর অথচ কত সহজ! ব্রাজিল যখন ফুটবল খেলে, মনে হয় এর চেয়ে সোজা কিছু হতে পারে না। ব্রাজিলের এই চিরাচরিত খেলার ধরন দেখা যাচ্ছে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপেও। আজ, বুধবার প্রি কোয়ার্টারের ম্যাচে হন্ডুরাসের সামনে ব্রাজিল। যে ম্যাচে সাম্বা ম্যাজিক দেখার অপেক্ষায় থাকবেন দর্শকরা।

কাগজে কলমে দেখলে ব্রাজিল বনাম হন্ডুরাস ম্যাচটা একতরফাই মনে হবে। ছোট ছোট পাস, সূক্ষ্ম টাচ, ড্রিবলিং, মানসিকতা— সব দিক দিয়েই অনেক এগিয়ে ব্রাজিল। হন্ডুরাসের নিশ্চয়ই লক্ষ্য থাকবে ব্রাজিলকে কোনও ভাবে গোল করা থেকে আটকানো। তবে সেটা মুখে বলা যত সহজ, কাজে ততটা নয়।

Advertisement

ভারতের মাটিতে এখনও পর্যন্ত এই ব্রাজিল টিমটা যথেষ্ট দর্শনীয় ফুটবল খেলেছে। এর সঙ্গে যোগ করুন ব্রাজিল নামটার সঙ্গে যুক্ত হওয়া আবেগ। সব মিলিয়ে তাই গ্যালারিতেও হলুদ জার্সির ঝড়। তবে আমি জানি এই দর্শকদের মনে একটা সুপ্ত ইচ্ছে ধিকধিক করে জ্বলছে— যদি এই ফুটবলটা আমাদের দেশ খেলত। এই টুর্নামেন্টে ব্রাজিল খুব সহজেই এগোচ্ছে। তিনটি ম্যাচে দু’টো করে গোল করেছে আর স্পেনের সঙ্গে ম্যাচে একটা খেয়েছে।

আরও পড়ুন: পেনাল্টিতে বিতর্ক, শেষ আটে স্পেন

মাঝে মাঝে ভাবি কী ভাবে ব্রাজিলীয় ফুটবলাররা এ রকম খেলে। আসলে স্বাভাবিক খেলাটার বাইরে গিয়ে ব্রাজিলিয়ানরা খেলতে চায়। যে ব্যাপারটা ওদের ডিএনএ-তে ঢুকে গিয়েছে। এবং বংশানুক্রমে এক জনের থেকে অন্য জনে চলে আসছে। ব্রাজিলীয় ফুটবলাররা মাঝে মাঝে এমন কিছু জিনিস করে, যা কখনও কোনও ফুটবল স্কুলে শেখাবে না। এটা ওদের একান্তই নিজস্ব। আমি বলব না, ওরা জন্ম থেকেই স্পেশ্যাল। কিন্তু একবার যখন বলটা পায়ে ছোঁয়ায়, সব কিছু যেন নিজে থেকেই চলে আসে।

ব্রাজিলীয় ফুটবল সম্পর্কে বলতে গেলে একটা শব্দ ব্যবহার করা যায়— সিংগা। শব্দটা পর্তুগিজ। যার কাছাকাছি মানে দাঁড়ায়, নাচের ভঙ্গিমায় নড়াচড়া। ব্রাজিলীয় ফুটবলে এই জিনিসটা খুব ভীষণ ভাবে রয়েছে। এ রকম ছন্দেই ওরা ‘বিউটিফুল গেম’টা খেলা পছন্দ করে। এ রকম ছন্দময় খেলা দেখতেই তো মাঠে ভিড় করেন দর্শকরা। আমরাও যে খেলা দেখার অপেক্ষায় থাকি।

আমার মনে হয়, ব্রাজিলের এই খেলার স্টাইলটা এসেছে ওদের সংস্কৃতি থেকে। ওদের জীবনযাত্রা থেকে। জার্মানরা নিখুঁত ফুটবল খেলতে ভালবাসে। ইংলিশরা ডাইরেক্ট ফুটবল। এশীয় দলগুলো দেখবেন, অনেকটা যান্ত্রিক ফুটবল খেলে। কিন্তু ব্রাজিল? ওরা খেলে ওদের নিজস্ব ছন্দ মেনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন