ধাক্কা: সেই মুহূর্ত যা ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল। ছবি: রয়টার্স
শারজায় শেষ বলে ছক্কা খাওয়া চেতন শর্মার জমে থাকা দুঃখ-যন্ত্রণা ভাগ করার জন্য এত দিনে কারও একটা আবির্ভাব ঘটল।
ওভালের যশপ্রীত বুমরা!
চেতনের বলটা ছিল ফুলটস। পাকিস্তানের জিততে দরকার ছিল চার। কোমরের উচ্চতায় আসা বল উড়িয়ে দেন মিয়াঁদাদ। আর ওভালে বুমরা এবং ভারতের অভিশপ্ত ডেলিভারি হয়ে থাকল একটি ‘নো বল’।
ওভালে অবশ্য পাকিস্তান রান তাড়া করছিল না, টস জিতে তাদের প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান কোহালি। শুরুতেই সাফল্য এল। বুমরার বলে ধোনির হাতে খোঁচা দিয়ে ফিরে যাচ্ছেন ফখর জমান।
কিন্তু জায়ান্ট স্ক্রিন দেখাল বুমরা ‘নো বল’ করেছেন। জমান তখন ৭ বলে ৩। পাকিস্তান ৩ ওভারে ৭-১ হয়ে যায়। সেই যে বাঁচলেন বাঁ-হাতি ওপেনার, থামলেন ১০৬ বলে ১১৪ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলে। প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি। আর সেটা এল কি না ফাইনালে ভারত-পাক ম্যাচে। কী অসাধারণ এক আবির্ভাব!
বুমরা-র নো বল।
পাক নৌসেনায় সেপাইয়ের কাজ করতেন জমান। সেখান থেকে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন এবং কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বমঞ্চে পাকিস্তানের নবজাগরণ ঘটানো জয়ের নায়ক। ১৮০ রানের ব্যবধানে ফাইনাল জিতল এমন একটা দল, যাদের কেউ ফেভারিট ধরেনি। বরং ভারতের কাছেই প্রথম ম্যাচে দুরমুশ হওয়ার নামকরণ হয়েছিল, ‘প্যানিকস্তান’।
আরও পড়ুন: জিতেই দাবি, ক্রিকেট ফিরুক পাকিস্তানে
রবিবারের পরে কানে এল ‘নো বলের’ নাম পাল্টে নাকি রাখা হবে ‘বুমরা বল’! ক্লাইভ লয়েড পর্যন্ত লাঞ্চের সময় বলেন, বুমরার ‘নো বল’টাই টার্নিং পয়েন্ট হয়ে থাকল। নিশ্চয়ই বুমরা একা ম্যাচ হারাননি। এমন মহাতারকা ব্যাটিংও তো ফাইনালে টেক-অফই করল না। টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ২০০৩ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ ফাইনালে টস জিতেও অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানেই ম্যাচ শেষ হয়ে যায়। টসের হিসেব ওলটপালট করে দিল বিরাটের ভাগ্যও।
পাকে বিপাকে: পাকিস্তানের কাছে বড় হার
• ১৫৯ রানে হার এপ্রিল, ২০০৫ - ভারত-পাক সিরিজ, দিল্লি
• ১৪৩ রানে হার মার্চ, ১৯৯৯ - পেপসি কাপ, জয়পুর
• ১৩৪ রানে হার সেপ্টেম্বর, ১৯৯৮ - ফ্রেন্ডশিপ কাপ, টরন্টো
• ১২৩ রানে হার এপ্রিল, ১৯৯৯ - পেপসি কাপ ফাইনাল, বেঙ্গালুরু
• ৯ উইকেটে হার অক্টোবর, ১৯৯৭ - দুই দলের সিরিজ, লাহৌর
তবু টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে থেকে যাবে বুমরার ‘নো বল’টাই। যেমন ছিল ওয়াংখেড়েতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেন্ডল সিমন্সকে সে দিন শুরুতেই আউট করেছিলেন অশ্বিন। এ দিনের মতোই রিপ্লে দেখিয়েছিল, ‘নো বল’ হয়েছে। সে দিন সিমন্স ম্যাচ নিয়ে চলে যান। এ দিন নিয়ে গেলেন জমান।
১৯৮৬-র শারজায় সেই শেষ বলের ছক্কা নিয়ে আজও কথা শুনতে হয় চেতন শর্মাকে। ১৮ জুন, ২০১৭-ও তাড়া করে বেড়াবে বুমরাকে।