প্রয়াণের আগে জগমোহন ড়ালমিয়া বাংলাকে একটি বিদায়ী উপহার দিয়ে গিয়েছিলেন। ভারতে অনুষ্ঠিত টি২০ বিশ্বকাপ ফাইনাল এনে।
বাংলা ক্রিকেট সিংহাসনে বসার কয়েক মাসের মধ্যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও বঙ্গ ক্রিকেটকে আরও একটি উপহার দিতে চলেছেন। সব কিছু ঠিকঠাক চললে বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ নয়াদিল্লিতে ঘোষণা হয়ে চলেছে টি২০ বিশ্বকাপে ভারত-পাক ম্যাচের ভেনু। যা বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুরের ধর্মশালা নয়, সৌরভের ইডেন।
ধর্মশালা নিয়ে রাজনৈতিক টানাপড়েন চলার মধ্যেই সিএবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা হয়েছিল বোর্ড প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহরের। হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বীরবাহাদুর সিংহ বার বার বলছিলেন, ভারত-পাক ম্যাচ হলে তাঁর পক্ষে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তখনই মনোহরকে জানিয়ে দেন, ইডেন তৈরি আছে। মনোহর নাকি তখন তাঁকে বলেন, ব্যাপারটা তিনি মাথায় রাখছেন।
মঙ্গলবার রাত থেকে ইডেনের ম্যাচপ্রাপ্তির সম্ভাবনা আরও বাড়তে থাকে। প্রথমত, পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ যে সিকিউরিটি টিম ধর্মশালায় নিরাপত্তার ময়নাতদন্তে যাঁদের পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি তাঁদের বলে দেন রাজ্যের পক্ষে পাকিস্তান টিমকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব না। যার পর থেকেই বিকল্প কেন্দ্রের নাম ভেসে উঠতে থাকে। চারটি কেন্দ্রের কথা শোনা যাচ্ছিল। মোহালি, নাগপুর, বেঙ্গালুরু এবং কলকাতা। কলকাতা তদ্বির করতে শুরু করে এই বলে যে, তারা ২০১১ বিশ্বকাপের ম্যাচ পায়নি। সেটা বেঙ্গালুরুতেই গিয়েছিল। তা হলে এ বার কলকাতা কেন পাবে না? তা ছাড়া কলকাতায় ফাইনাল হলেও ভারতের কোনও ম্যাচ নেই। অতএব ম্যাচ যদি ধর্মশালা থেকে সরাতেই হয় তা হলে সেটা কলকাতায় আনা হোক।
এতে ব্রডকাস্টারদেরও সুবিধে কারণ পাকিস্তান টিম শিবির করছে কলকাতায়। টুর্নামেন্ট তাদের প্রথম ম্যাচও এখানে। এ ছাড়া শোনা গেল গতকাল রাত থেকেই পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করে দেয় সিএবি। দফায় দফায় বৈঠক হয়। পুলিশ নাকি জানিয়ে দেয় যে আগামী ১৯ মার্চের ভারত-পাক ম্যাচ কলকাতায় হলে নিরাপত্তা প্রদানে তাদের কোনও সমস্যা নেই। বুধবার বিকেল চারটে পর্যন্ত বোর্ডের তরফ থেকে কোনও সরকারি বিবৃতি আসেনি, সিএবিকে-ও সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু ব্রডকাস্টাররা ইতিমধ্যে সিএবির সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করে দিয়েছে। বলতে গেলে ব্রডকাস্টারদের মাধ্যমেই সিএবি জানতে পারে অন্য কোনও জায়গা নয়, ইডেনই ম্যাচ পাচ্ছে।
সিএবিতে দেখা গেল ইতিমধ্যেই বোর্ডকর্তারা ফোন করতে শুরু করে দিয়েছেন কর্পোরেট বক্সের টিকিটের জন্য। অভাবনীয় উপহার পেয়ে কোনও কোনও কর্তা এটাও বলতে লাগলেন যে অনুরাগ ঠাকুর এটা করতেনই। ডালমিয়ার জন্য শ্রীনিবাসনের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বোর্ড সচিব ইস্যুতে তাঁর এক ভোটে জিতে আসা। তাই ধর্মশালা যখন পারছে না তখন তো অনুরাগ চাইবেনই ম্যাচ ইডেনে হোক।
বোর্ড রাজনীতি যা খুশি বলুক ইডেন যে অঙ্কেই ম্যাচ পেয়ে থাক এতে কোনও সন্দেহ নেই টি২০ বিশ্বকাপের আগমনীতে অষ্টমীর মেজাজ শুরু হয়ে গেল কলকাতায়। আগামী ৩ এপ্রিলের বিশ্বকাপ ফাইনাল এবং একই সঙ্গে খুব সম্ভবত টি২০ বিশ্বকাপের ‘দ্য ম্যাচ’। কেকের উপর আইসিং আর কাকে বলে।
আরও খবর
১৯শে আবেগের বিস্ফোরণ ইডেনে, ভারত-পাক ম্যাচ