(বাঁ দিকে) শেফালি বর্মা এবং রেণুকা ঠাকুরের (ডান দিকে) মাঝে পদকহীন প্রতিকা রাওয়াল। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠানে। ছবি: পিটিআই।
ভারতের বিশ্বকাপ দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন প্রতিকা রাওয়াল। কিন্তু ভারত বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর গত ২ নভেম্বর রাতে প্রতিকা পদক পাননি। অবশেষে তাঁর আক্ষেপ মিটতে চলেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) ভারতের অলরাউন্ডারকে পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই প্রতিকা হাতে পাবেন বিশ্বজয়ের পদক।
লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ফিল্ডিং করতে গিয়ে পায়ে চোট পেয়েছিলেন প্রতিকা। তাঁর গোড়ালি ঘুরে যায়। সেই চোটের জন্য সেমিফাইনালের আগে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যান তিনি। তাঁর পরিবর্ত হিসাবে ভারতীয় দলে আসেন শেফালি বর্মা। প্রতিকা ফাইনালে ভারতের ১৫ জনের দলে না থাকায় তাঁকে পদক দেওয়া হয়নি।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্বকাপজয়ী দলের ১৫জন ক্রিকেটার পদক পান। হুইল চেয়ারে বসে সতীর্থদের সঙ্গে বিশ্বজয়ের উদ্যাপনে সামিল হলেও প্রতিকাকে গত ২ নভেম্বর রাতে সোনার পদক দেওয়া হয়নি। যদিও প্রতিকা বিশ্বকাপে চতুর্থ সর্বোচ্চ (৩০৮) রান করেছেন। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে শতরান করে শেষ চারে ভারতের জায়গা নিশ্চিত করেছিলেন। হরমনপ্রীত কৌর, স্মৃতি মন্ধানাদের সঙ্গে প্রতিকা পদক না পাওয়ায় বিস্মিত হয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। তাঁদের একাংশ প্রশ্ন তোলেন আইসিসির নিয়ম নিয়ে।
পদক না পাওয়ার আক্ষেপ থাকলেও কিছু করার ছিল না ওপেনিং ব্যাটারেরও। তাঁর সেই আক্ষেপ মেটাতে উদ্যোগী হন আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ নিজে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে প্রতিকা নিজেই সুখবর জানিয়েছেন। বলেছেন, বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিনই ব্যক্তিগত ভাবে জয় তাঁকে পদক দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। প্রতিকা বলেছেন, ‘‘জয় শাহ আমাদের দলের ম্যানেজারকে মেসেজ করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, ‘প্রতিকার জন্য আমি পদকের ব্যবস্থা করছি।’ এত দিন বিষয়টা বলিনি।’’ প্রতিকা আরও বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের এক সাপোর্ট স্টাফ তাঁর পদকের বাক্সটা আমাকে দিয়েছেন। পদকটা প্রথম বার দেখে কেঁদে ফেলেছি। আমি সাধারণত কাঁদি না। কিন্তু বিশ্বকাপের পদক দেখে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। এটা একদম অন্যরকম একটা অনুভূতি।’’
বিশ্বকাপ জয়ের রাতে কী বলেছিলেন জয়? প্রতিকা বলেছেন, ‘‘সে দিনই জয় স্যর আমাদের বলেছিলেন, আইসিসির সদর দফতর থেকে তিনি একটি পদক পাঠাতে বলেছেন। সেটা আসতে কয়েক দিন সময় লাগবে। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আগে দলের এক জন সাপোর্ট স্টাফ তাঁর পদকটি আমাকে পরার জন্য দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, পদকটা যেন আমি নিজের মনে করেই পরি। কারণ আইসিসি দফতর থেকে আমার পদকটা এখনও এসে পৌঁছোয়নি।’’ কথা বলার সময় জয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন ২৫ বছরের ক্রিকেটার।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে বৃহস্পতিবার এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বুধবার দেখা করেন বিশ্বজয়ী ক্রিকেটারেরা। দু’টি অনুষ্ঠানেই প্রতিকার গলায় ছিল বিশ্বজয়ের পদক। তা দেখে তাঁর জানতে চাওয়া হয়েছিল, বিশ্বকাপের পদক তিনি কোথায় পেলেন? তার উত্তরে আইসিসি চেয়ারম্যানের উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন প্রতিকা।