সুনীল ছেত্রী। —ফাইল চিত্র।
পাকাপাকি ভাবে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিতে পারেন সুনীল ছেত্রী। জাতীয় দলের কোচ খালিদ জামিলকে তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন ৪১ বছরের স্ট্রাইকার। এএফসি কাপ যোগ্যতা অর্জন পর্বের বাংলাদেশ ম্যাচের জন্য প্রাথমিক দলে সুনীলকে রাখেননি খালিদ। তার পর থেকে সুনীলের অবসর নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে।
২০২৫-২৬ মরসুমের পর পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নিতে পারেন সুনীল। জাতীয় দলের কোচ খালিদকে তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে সুনীল বলেছেন, ‘‘আমি দীর্ঘ দিন খেললাম। ফুটবল সম্পর্কে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা হয়েছে। অবসর নিয়ে আমার কোনও আক্ষেপ নেই। শেষ বার দেশকে এএফসি কাপে যোগ্যতা অর্জন করাতে পারলাম না। এটাই শুধু খারাপ লাগছে। প্রতিটি ম্যাচে নিজের সেরাটা দিয়েও পারিনি।’’ তবে ফুটবলার হিসাবে আরও একটি লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন সুনীল। বেঙ্গালুরু এফসির হয়ে আর একটি আইএসএল খেলতে চান ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে, আরও এক বার ক্লাবের জার্সি পরে আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলার সুযোগ পাব। তবে ৪২ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলা কঠিন। আমার লক্ষ্য ফুটবল থেকে অবসরের আগে শেষ মরসুমে অন্তত ১৫টি গোল করা।’’
২০২৪ সালের জুনে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিয়েছিলেন সুনীল। তার পর জাতীয় দলের প্রাক্তন কোচ মানোলো মার্কেজ়ের অনুরোধে গত জুনে অবসর ভেঙে আবার আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরেন সুনীল। ২০২৭ সালের এএফসি কাপের যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যেই সুনীলকে জাতীয় দলের হয়ে আবার খেলার অনুরোধ করেছিলেন মার্কেজ়। কিন্তু যোগ্যতা অর্জনের দৌড় থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছে ভারত। তাই আন্তর্জাতিক ফুটবলজীবন আর টেনে নিয়ে যেতে চান না বলে খালিদকে জানিয়েছেন অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার। তিনি বলেছেন, ‘‘খালিদ স্যরকে আমার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছি। কাজটা খুব কঠিন বলে মনে হয়নি। অবসর ভেঙে ফিরেছিলাম একটাই লক্ষ্য নিয়ে। তা হল, ভারত যাতে এএফসি কাপের যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। দলকে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম। আর কিছু না। যোগ্যতা অর্জন পর্বের খেলা সে সময় না থাকলে ফিরতাম না। যোগ্যতা অর্জনের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ার পর মনে হয়েছে, এ বার সরে যাওয়াই ঠিক। কোচও সেটা বুঝেছেন।’’
আইএসএলে ১৪ গোল করার পর সুনীলকে জাতীয় দলে ফেরার অনুরোধ করেছিলেন মার্কেজ়। ভারতীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন। তা নিয়ে প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘উনি কেন আমাকে ডেকেছিলেন, জানি। আইএসএলের ফর্ম দেখেই আমাকে ডেকেছিলেন মার্কেজ়। আমিও যোগ্যতা অর্জন পর্বের জন্য উৎসাহিত হয়েছিলাম। তাই রাজি হয়েছিলাম।’’ অবসর ভেঙে ফিরে আসার সময় সতীর্থদের থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। সুনীল বলেছেন, ‘‘আমি কৃতজ্ঞ। জাতীয় শিবিরে দারুণ ভাবে আমাকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। সম্মান পেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল, আবার নিজের পরিবারের কাছে ফিরে এসেছি। কিন্তু সবাই মিলে চেষ্টা করেও এ বার পারলাম না যোগ্যতা অর্জন করতে। এটাই শুধু খারাপ লাগছে। আমাদের যা দল, তাতে পারা উচিত ছিল। কিন্তু আমরা পারিনি। হতাশ তো লাগবেই।’’
নির্দিষ্ট সময় আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে পাকাপাকি অবসরের সিদ্ধান্ত সরকারি ভাবে ঘোষণা করবেন সুনীল। খেলোয়াড়জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট হলেও আরও এক বার আইএসএল ট্রফিটা ছুঁতে চান তিনি। তাতে হয়তো এএফসি কাপে যোগ্যতা অর্জন করতে না পারার কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে তাঁর। কিছু দিন আগেই সুনীলের সঙ্গে নতুন চুক্তির কথা জানিয়েছিলেন বেঙ্গালুরু এফসি কর্তৃপক্ষ।