হরমনপ্রীত কৌরকে জড়িয়ে ধরে কান্না ঝুলন গোস্বামীর। ছবি: এক্স।
বিশ্বকাপ ট্রফি জিতে তখন মাঠ প্রদক্ষিণ করছেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। তাঁদের সঙ্গে দলের সাপোর্ট স্টাফ ছাড়াও রয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা। মাঠের এক দিকে সম্প্রচারকারী চ্যানেলে কথা বলছিলেন ঝুলন গোস্বামী। তাঁকে ডেকে নিলেন হরমনপ্রীত কৌরেরা। দলের সঙ্গে উল্লাসে মাতলেন ঝুলন। তুললেন ট্রফি। খেলোয়াড় জীবনে দু’বার বিশ্বকাপের ফাইনালে হারতে হয়েছিল ঝুলনকে। হরমনপ্রীতদের মধ্যে দিয়ে সেই অধরা স্বপ্ন পূরণ হল ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের।
ভারতের মহিলাদের ক্রিকেট ইতিহাসে বাংলার ঝুলনের অবদান কম নয়। এখনও এক দিনের ক্রিকেটে বিশ্বের সর্বাধিক উইকেটের মালকিন ‘চাকদহ এক্সপ্রেস’। কিন্তু বিশ্বকাপ জিততে পারেননি তিনি। সেই আক্ষেপ এ দিন কিছুটা হলেও পূরণ হল। ভারত বিশ্বকাপ জেতার পর ঝুলনের গলায় ঝরে পড়ছিল আবেগ। বোঝা যাচ্ছিল, হরমনপ্রীতদের এই জয়ে কতটা উত্তেজিত তিনি। সেই উত্তেজনার বাঁধ ভাঙল ভারতের উল্লাসের সময়।
স্মৃতি মন্ধানাকে জড়িয়ে ধরে উল্লাস ঝুলন গোস্বামীর। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
হরমনপ্রীতদের ডাকে তাঁদের মাঝে গেলেন ঝুলন। একে একে স্মৃতি মন্ধানা, জেমাইমা রদ্রিগেজ়রা জড়িয়ে ধরলেন তাঁকে। ঝুলনের হাতে দেওয়া হল ট্রফি। যে ট্রফির স্বাদ খেলোয়াড় হিসাবে তিনি পাননি সেই ট্রফি তুললেন। তার পরেই দেখা গেল হরমনপ্রীত এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরেছেন। দু’জনের সম্পর্ক খুব ভাল। অনেক দিন একসঙ্গে খেলেছেন। মহিলাদের আইপিএলে হরমনপ্রীতের মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মেন্টরও ঝুলন। হরমন জড়িয়ে ধরার পর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি ঝুলন। কেঁদে ফেলেন। হরমনও তাঁকে জড়িয়ে ধরে কাঁদেন।
ট্রফি হাতে ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে উল্লাস ঝুলন গোস্বামীর (মাঝে মেরুন পোশাকে)। ছবি: এক্স।
পরে ঝুলন জানান, কেন এতটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, “২০২২ সালের বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়ার পর হরমন ও স্মৃতি আমার ঘরে এসেছিল। ওরা বলেছিল, ২০২৫ সালে তুমি খেলবে কি না জানি না, তবে একটা কথা বলতে চাই, সে বার আমরা বিশ্বকাপ জিতবই। দু’সপ্তাহ আগেই ওদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওরা বলেছে, তোমার জন্য এই বিশ্বকাপ জিততে চাই। ওরা সেটা করেছে। সেই কারণে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি।”
ভারতের অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথাও বলেছেন ঝুলন। তিনি বলেন, “হরমন ও স্মৃতির সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভাল। আমার শেষ দিকে ওরাই দলের সিনিয়র ক্রিকেটার ছিল। ওদের সঙ্গে অনেক অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছি। মনে হচ্ছে, আমিই বিশ্বকাপ জিতেছি। এই রাত কোনও দিন ভুলব না।”
তবে শুধু ঝুলন নন, ভারতের আরও দুই প্রাক্তন অধিনায়ক মিতালি রাজ ও অঞ্জুম চোপড়়াও হরমনপ্রীতদের উল্লাসে যোগ দেন। তাঁরাও ট্রফি তোলেন। ঝুলনের মতো মিতালি, অঞ্জুমও তাঁদের অধরা স্বপ্ন পূরণ করেছেন হরমনপ্রীতদের হাত ধরে।