মহম্মদ শামি। —ফাইল চিত্র।
মহম্মদ শামির পাশে দাঁড়িয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ভারতীয় স্পিনারের মতে, ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেটারদের মধ্যে আরও স্বচ্ছতা থাকা উচিত। তা হলে এই ধরনের সমস্যা হয় না। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ের দল থেকে বাদ পড়ার পর শামি জানিয়েছিলেন, ফিটনেস নিয়ে তাঁর সঙ্গে কোনও কথা বলেনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। কিছু জানতেও চাওয়া হয়নি। সেই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন অশ্বিন।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে অশ্বিন বলেন, “একটা কথা সকলের সামনে বলতে চাই। ভারতীয় ক্রিকেটে সবকিছু গোপনে চলে। আমি চাই, এই সংস্কৃতি বন্ধ হোক। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেটার, দু’তরফ থেকেই এটা হওয়া উচিত। আমি দেখেছি, কোনও ক্রিকেটার সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললেই সেটা খবর হয়ে যায়। কিন্তু তিনি যদি না জানেন যে, তাঁর কাছে কী চাওয়া হচ্ছে, তা হলে তিনি কী বলবেন?”
অশ্বিনের মতে, শামির কথা থেকেই স্পষ্ট, বোর্ডের কারও সঙ্গে কথা হয়নি তাঁর। অশ্বিন বলেন, “দেখুন শামি কী করল। ভাল খেলে তার পর মুখ খুলল। এতে দোষের কী আছে? ও জানত না, ওর কাছে কী চাওয়া হচ্ছে। তা হলে হয়তো ও অন্য ভাবে কথা বলত। আমার সঙ্গেও এটা হয়েছে। বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা না হলে খারাপ লাগত। বুঝতে পারতাম না কী বলব। শামিরও সেটাই হয়েছে।”
বাংলার হয়ে রঞ্জির প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে নামার আগে শামি বলেছিলেন, ‘‘ভারতীয় দল বা নির্বাচকেরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আমার ফিটনেসের কথা জানতে চাননি। আমি তো আর যেচে ফিটনেস নিয়ে ওঁদের বলতে যাব না। এটা আমার কাজ নয়। ওঁদের জানতে হবে। যদি আমি চার দিনের রঞ্জির ম্যাচ খেলতে পারি, তা হলে ৫০ ওভারের ম্যাচ কেন খেলতে পারব না? যদি আমি ফিট না থাকতাম, তা হলে এনসিএ-তে থাকতাম, রঞ্জির দলে থাকতাম না।’’
এর পরেও রোখা যায়নি শামিকে। বলেন, ‘‘আমি কতটা ফিট সেটা রঞ্জিতেই সকলে দেখতে পাবে। কাউকে জবাব দেওয়ার নেই। এত বছর ভারতের হয়ে খেলেছি। প্রতিটা ম্যাচে নিজের ১০০ শতাংশ দিয়েছি। আশা করেছিলাম, আমার সঙ্গে নির্বাচকেরা কথা বলবেন। কিন্তু কেউ কিছু জানতে চাননি। আমার ফিটনেস না জেনেই আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’’
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর থেকে আর জাতীয় দলে সুযোগ পাননি শামি। নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান অজিত আগরকর বলেছিলেন, ‘‘শামিকে নিয়ে বিসিসিআইয়ের কাছে কোনও তথ্য নেই। ও দলীপ ট্রফিতে খেলেছে। কিন্তু গত দু’-তিন বছরে খুব বেশি ম্যাচ খেলেনি। মনে হয় বাংলার হয়ে একটা আর দলীপের একটা ম্যাচ খেলেছে। আমাদের জানতে হবে ও কতটা ফিট। তার জন্য সবার আগে ওকে ক্রিকেট খেলতে হবে।”
ইংল্যান্ড সফরের দলে জায়গা হয়নি শামির। ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সিরিজ় এবং আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সফরের দলেও তিনি নেই। তাঁর বিরুদ্ধে না খেলার যে অভিযোগ, তা নিয়ে শামি বলেন, “ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে তবে তো খেলব। ম্যাচ না থাকলে অনুশীলন করছি। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া আমার হাতে নেই। সুযোগ পেলেই ম্যাচ খেলি।’’
শামির অভিযোগের পর আগরকর বলেন, পেসার যদি কথা বলতে চান, তা হলে তাঁর কোনও সমস্যা নেই। আগরকরের এই মনোভাবেরও প্রশংসা করেছেন অশ্বিন। তিনি বলেন, “আগরকর যে ভাবে সবটা সামলেছেন সেটা দেখেও ভাল লাগছে। উনি বলেছেন, শামির কিছু বলার থাকলে উনি নিজে ফোন করে কথা বলবেন। আশা করছি কথা হয়েছে।”