ফর্টিসের (বাঁ দিকে) সঙ্গে গম্ভীরের ঝামেলার সেই মুহূর্ত। ছবি: সমাজমাধ্যম।
লন্ডনের ওভালে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই সেই মাঠের পিচ নির্মাতা লি ফর্টিসের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর। সেই সময় ইংরেজরা নায়কের সম্মান দিয়েছিলেন ফর্টিসকে। পাঁচ দিন পরেই সেই ফর্টিস খলনায়ক হয়ে গিয়েছেন। তাঁর বানানো পিচে হেরে গিয়েছে ইংল্যান্ড। এই ফর্টিসই পর পর তিন বছর ইংল্যান্ডের সেরা পিচ নির্মাতা হয়েছেন।
গত ২৯ জুলাই ওভালে প্রথম অনুশীলন ছিল ভারতের। মাঠে যাওয়ার পর সেখানকার ব্যবস্থা দেখে খুশি হতে পারেননি গম্ভীর। মাঠকর্মীদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন তিনি। কিছু ক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। রেগে যান গম্ভীর। আঙুল উঁচিয়ে কথা বলা শুরু করেন তিনি। বার বার চিৎকার করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আমাদের কী করতে হবে সেটা আপনারা বলতে পারেন না।”
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেখে সেখানে ছুটে আসেন সীতাংশু কোটাক-সহ ভারতের বাকি সহকারী কোচেরা। তাঁরা গম্ভীরকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। জানা গিয়েছিল, ওভালের মাঠকর্মীরা হুমকি দিয়েছেন যে, গম্ভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবেন তাঁরা। তাতেও নিজের অবস্থান থেকে সরেননি গম্ভীর। তাঁকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, “আপনারা গিয়ে যা খুশি করতে পারেন। কিন্তু আমরা কী করব সেটা বলতে পারেন না।” যদিও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
পরে ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘মাঠে আইস বক্স রাখার সময় ফর্টিস প্রথমে চিৎকার করে আমাদের সাপোর্ট স্টাফদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর বলার ধরন পছন্দ হয়নি গম্ভীরের। কোচ বিরক্ত হন। তিনি আপত্তি জানান। তা থেকেই প্রথম উত্তেজনা তৈরি হয়। ওভালের পিচ প্রস্তুতকারকের সঙ্গে কথা বলা কঠিন। এটা সকলেই জানে। তবে আমরা সরকারি ভাবে কোনও অভিযোগ জানাব না।’’
কোটাক আরও বলেন, ‘‘আমরা যখন পিচ দেখছিলাম, তখন ফর্টিস এক জন মাঠকর্মীকে পাঠান। তিনি আমাদের আড়াই মিটার দূর থেকে পিচ দেখতে বলেন। মানে আমাদের প্রধান কোচকে দড়ির বাইরে থেকে পিচ দেখতে বলা হয়! আমার ক্রিকেটজীবনে এমন কখনও দেখিনি। আমরা জগার্স পরেছিলাম। রবারের স্পাইক পরে পিচের কাছে যাওয়া যায়। আমরা ভুল কিছু করিনি। ওর বক্তব্য আমাদের অদ্ভুত লেগেছে। আমরা মাঠের কোনও ক্ষতি করতে যাইনি। আমরা পিচ দেখছিলাম। প্রাচীন মূল্যবান কোনও সামগ্রী দেখছিলাম না।’’
ফর্টিস যতই ঝামেলা করুন, ওভালের পিচ যে সিরিজ়ের সেরা ছিল তা অনেকেই স্বীকার করেছেন। ওই মাঠে এই মরসুমে ন’টি ম্যাচ হয়েছে। তার পরেও ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচের পিচ ছিল জীবন্ত। ওভালে ব্যাটিং এবং বোলিং, দুই বিভাগই সাহায্য পেয়েছে। জো রুট, হ্যারি ব্রুক, যশস্বী জয়সওয়ালেরা যেমন শতরান করেছেন, তেমনই মহম্মদ সিরাজ, গাস অ্যাটকিনসনেরা পাঁচ উইকেট পেয়েছেন।
ম্যাচের পর ফর্টিস বলেন, “আমি কখনওই খলনায়ক ছিলাম না। আমাকে জোর করে বানানো হয়েছে। আশা করি ম্যাচটা আপনারা সকলেই উপভোগ করেছেন। পরিবেশ তো আইপিএলের ম্যাচের মতো ছিল। দারুণ ম্যাচ হয়েছে।”