জেমাইমা রদ্রিগেজ়। —ফাইল চিত্র।
এক দিনের বিশ্বকাপের সময় অবসাদ গ্রাস করেছিল জেমাইমা রদ্রিগেজ়কে। সমস্যা নিয়েই বিশ্বকাপ খেলেছেন। পরিস্থিতি এতটাই কঠিন হয়ে গিয়েছিল, তাঁর মা তাঁকে বিশ্বকাপ না খেলেই বাড়ি ফিরে আসার পরামর্শ দেন। এক সাক্ষাৎকারে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ভারতের মহিলা দলের মিডল অর্ডার ব্যাটার।
একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেমাইমা বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপের শুরু থেকেই খুব অবসাদের মধ্যে ছিলাম। তেমন কোনও কারণ ছিল না। তবু যে কোনও কারণেই হোক ওই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে পারছিলাম না। একটা মানসিক অস্বস্তি হচ্ছিল।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘প্রতিযোগিতা যত এগোচ্ছিল, তত অস্বস্তিটা বাড়ছিল। পারফরম্যান্সেও প্রভাব পড়ছিল। ফিল্ডিং করতেও সমস্যা হচ্ছিল। ব্যাট করতে পারছিলাম না। খেলাটা উপভোগই করতে পারছিলাম না।’’
অবসাদ থেকে হতাশা বাড়ছিল জেমাইমার। ভারতীয় ব্যাটার মেনে নিয়েছেন, নিজেকে সামলাতে পারতেন না একেক সময়। কখনও কখনও অনুভূতিগুলিও ঠিক ভাবে প্রকাশ করতে পারতেন না। জেমাইমা বলেছেন, ‘‘পরিস্থিতিটা বলে ঠিক বোঝাতে পারব না। যাঁরা এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন, তাঁরাই শুধু বুঝতে পারবেন। কেমন একটা অসাড় বোধ হত। কিছুই করতে ইচ্ছে করত না।’’
কী ভাবে সমস্যা মুক্ত হলেন? জেমাইমা বলেছেন, ‘‘একটা সময় মনে হল, একা চেষ্টা করে হবে না। কারও সঙ্গে কথা বলতে হবে সমস্যাটা নিয়ে। সঙ্কোচ করে লাভ নেই।’’ ভারতীয় দলের সতীর্থেরাই তাঁকে সাহায্য করেছিলেন। অরুন্ধতী রেড্ডি, স্মৃতি মান্ধানাদের সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। জেমাইমা বলেছেন, ‘‘অরু প্রতি দিন আমার খোঁজ নিত। ও আমার পরিস্থিতিটা সবচেয়ে ভাল বুঝতে পেরেছিল। স্মৃতিও আমাকে নানা ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে। আমাকে শান্ত রাখার চেষ্টা করে।’’
মায়ের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন জেমাইমা। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময় কেঁদেও ফেলেছিলেন। জেমাইমা বলেছেন, ‘‘আমার কথা শুনে মা বলেছিলেন, ‘তুমি যদি বিশ্বকাপ না খেলে বাড়ি ফিরে আসতে চাও, চলে আসতে পার। কারণ আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল তোমার আনন্দ।’ মায়ের কথা শুনে বলেছিলাম, তুমি যে আমাকে এই সাহসটা দিলে, সেটাই আমার কাছে অনেক কিছু। আসলে মা আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। মা আমাকে কখনও পারফরম্যান্স দিয়ে বিচার করেনি।’’
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালের আগে অরুন্ধতীকে নিয়ে চার্চে গিয়েছিলেন জেমাইমা। চার্চে প্রার্থনা করার পর মানসিক ভাবে কিছুটা শান্তি পান। সেমিফাইনালে ১২৭ রানের ইনিংস খেলার পর স্বাভাবিক হয়েছিলেন। দলকে জিতিয়েও কেঁদে ফেলেছিলেন ২৫ বছরের ক্রিকেটার।