গৌতম গম্ভীর। —ফাইল চিত্র।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরেই মুখ খুলেছিলেন গৌতম গম্ভীর। কড়া জবাব দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। তার জন্য খুনের হুমকিও পেয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ। তাতে অবশ্য পিছু হটতে রাজি নন গম্ভীর। জঙ্গি হামলা নিয়ে ভারতকে আরও কড়া পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। ভারতের কোচের মতে, দু’দেশের মধ্যে কোনও সম্পর্ক থাকা উচিত নয়। এমনকি, ক্রিকেট ম্যাচও হওয়ার উচিত নয়।
একটি অনুষ্ঠানে গম্ভীরকে প্রশ্ন করা হয়, পহেলগাঁও হামলার পরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কি ক্রিকেট ম্যাচ হওয়ার উচিত? জবাবে গম্ভীর বলেন, “আমার ব্যক্তিগত জবাব, না। ক্রিকেট ম্যাচ, বলিউডের ছবি বা শিল্প, কোনও কিছুই দেশের মানুষ ও জওয়ানদের জীবনের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনও সম্পর্ক থাকা উচিত নয়। তার মধ্যে ক্রিকেটও পড়ে। আমি সরকারের কাছে এই আবেদনই করব। কড়া জবাব দিতে হবে।”
গম্ভীরের এই কথা থেকে স্পষ্ট, তিনি দু’দেশের মধ্যে ক্রিকেটীয় সম্পর্কও বন্ধ করে দিতে চান। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আইসিসির কাছে আবেদন করেছে, আইসিসি প্রতিযোগিতায় ভারত-পাকিস্তানকে এক গ্রুপে যাতে না রাখা হয়। অর্থাৎ, শুধু দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় নয়, আইসিসি প্রতিযোগিতাতেও পাকিস্তানের সঙ্গে খেলতে চাইছে না ভারত। গম্ভীরও সেই কথাই বললেন। তবে কি এ বার পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট? তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরেই প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন গম্ভীর। সমাজমাধ্যমে নিন্দা করেছিলেন। লিখেছিলেন, “মৃতদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা। যারা এই কাজের জন্য দায়ী তাদের মূল্য চোকাতেই হবে। ভারত পাল্টা আঘাত হানবেই।” পর দিনই হুমকি পান ভারতীয় দলের প্রধান কোচ। তাঁকে ইমেলে হুমকিবার্তা পাঠায় ‘আইসিস কাশ্মীর’। দুপুরে প্রথম ইমেল পান গম্ভীর। দ্বিতীয়টি পান বিকেলে। দু’টি ইমেলেই লেখা ছিল, ‘আইকিলইউ’। যার অর্থ, আমি তোমায় মেরে ফেলব। গম্ভীর দেরি করেননি। সঙ্গে সঙ্গে রাজেন্দ্র নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার কথা জানিয়েছেন মধ্য দিল্লির ডিসিপিকেও। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন তিনি। তাঁর পরিবার যাতে সুরক্ষিত এবং নিরাপদে থাকে তার জন্যও পুলিশকে উদ্যোগী হতে বলেন তিনি।
সেই ঘটনারই তদন্ত করতে গিয়ে গুজরাতের বাসিন্দা জিগ্নেশ পারমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট পুলিশ। তাঁর কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়ায় তাঁকে আটক করা হয়েছে। সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট পুলিশের ডেপুটি কমিশনার এম হর্ষবর্ধন বলেন, “তদন্ত করতে গিয়ে জিগ্নেশের নাম উঠে আসে। উনি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া। আপাতত ওঁকে আটক করা হয়েছে। জিগ্নেশের পরিবার জানিয়েছে, ওঁর মানসিক সমস্যা রয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে।” এই ঘটনার নেপথ্যে জঙ্গি যোগ রয়েছে কি না, তা জিগ্নেশকে জেরা করে খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গম্ভীর ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।