ICC Women\'s ODI World Cup 2025

জলে গেল স্মৃতি-হরমনপ্রীতের লড়াই, বিশ্বকাপে হারের হ্যাটট্রিক, ৪ রানে হেরে আরও কোণঠাসা ভারত, সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড

মহিলাদের বিশ্বকাপে ইনদওরে ইংল্যান্ডের কাছে ৪ রানে হেরে গেল ভারত। হারের হ্যাটট্রিকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও ধাক্কা খেল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৫ ২২:১৪
Share:

জুটি গড়ার মুহূর্তে স্মৃতি মন্ধানা (বাঁ দিকে) এবং হরমনপ্রীত কৌর। দিনের শেষে তা কাজে লাগল না। ছবি: পিটিআই।

ক্রিকেটে ম্যাচ শেষ করে আসতে না পারলে শতরান, অর্ধশতরান, পাঁচ উইকেট— কিছুই কাজে আসে না। রবিবার ঠিক সেটাই হল স্মৃতি মন্ধানা, হরমনপ্রীত কৌর, দীপ্তি শর্মাদের ক্ষেত্রে। প্রথম দু’জন চাপের মুখে লড়াই করে অর্ধশতরান করলেন। পরের জন অর্ধশতরানের পাশাপাশি চারটি উইকেটও নিলেন। কোনও কিছুই শেষ পর্যন্ত কাজে লাগল না। মহিলাদের বিশ্বকাপে ইনদওরে ইংল্যান্ডের কাছে ৪ রানে হেরে গেল ভারত।

Advertisement

হারের হ্যাটট্রিকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও ধাক্কা খেল। বাকি দু’টি ম্যাচ জেতা ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই ভারতের সামনে। ইংল্যান্ড নিশ্চিত করে ফেলল সেমিফাইনালের টিকিট। অর্থাৎ আর মাত্র একটিই জায়গা বাকি। লড়াই ভারত এবং নিউ জ়িল্যান্ডের।

রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি ভারতের। আবার ব্যর্থ হয় ওপেনিং জুটি। প্রথম ওভারেই প্রতিকা রাওয়ালের ক্যাচ ফেলেছিলেন চার্লি ডিন। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি প্রতিকা। তৃতীয় ওভারেই লরেন বেলের বলে অ্যামি জোন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। স্মৃতির সঙ্গে জুটি বেধে হরলীন দেওল প্রাথমিক ধাক্কা সামলে দেন। কিন্তু তিনিও বেশি ক্ষণ ক্রিজ়ে টিকতে পারেননি। ডিনের অসাধারণ একটি ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান তিনি।

Advertisement

স্মৃতির সঙ্গে যোগ দেন হরমনপ্রীত। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই ব্যাটার বুঝে গিয়েছিলেন, এই অবস্থায় আর একটি উইকেট পড়লেই ম্যাচ থেকে হারিয়ে যাবে ভারত। কারণ এমনিতেই একজন ব্যাটার কম নিয়ে খেলতে নেমেছিল ভারত। স্মৃতি এবং হরমনপ্রীতের জোড়া লক্ষ্য ছিল— ক্রিজ়ে টিকে থাকা এবং রানের গতি বজায় রাখা। দু’টি কাজেই সফল হন তাঁরা। চেষ্টা করছিলেন প্রতিটি ওভারে অন্তত একটি চার মারার। সফলও হন।

দুই ব্যাটারকে কিছুতেই আউট করতে পারছিল না ইংল্যান্ড। পেস বা স্পিন, কোনও ধরনের বোলিংয়েই সফল হয়নি তারা। স্মৃতি এবং হরমন পর পর অর্ধশতরান করেন। ১২৫ রানের জুটি ভাঙে ৩১তম ওভারে এসে। শিভার-ব্রান্টের বলে কাট করেছিলেন হরমনপ্রীত। সামনে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নেন এমা ল্যাম্ব। ৭০ রানে ফিরে যান হরমনপ্রীত।

দীপ্তি যোগ দেন স্মৃতির সঙ্গে। যত ক্ষণ এই দু’জন ক্রিজ়‌ে ছিলেন, রানের গতি বিশেষ কমেনি। ওভারপ্রতি প্রায় ৬ রান করেই তুলছিল ভারত। ৪২তম ওভারে স্মৃতি (৮৮) আউট হতেই ভারতের খারাপ খেলা শুরু। আশা করা হয়েছিল দীপ্তির সঙ্গে জুটি বেধে রিচা ঘোষ অন্তত বৈতরণী পার করে দেবেন। রিচা আউট হওয়ার পর সেই সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যায়। অর্ধশতরান করলেও একা বেশি লড়াই করতে পারেননি দীপ্তি (৫০)। ৪৭তম ওভারে তিনি আউট হতেই বোঝা গিয়েছিল ম্যাচ ভারতের হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। সেটাই হয়।

এ দিন টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ইংল্যান্ড। ভারতের পিচে যেখানে বোলারেরা বেশি সাফল্য পাচ্ছেন, সেখানে প্রথম চারটি ম্যাচে মাত্র পাঁচ জন বোলার খেলানোয় সমালোচিত হয়েছিল ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হয়েছিল স্রেফ একটা বাড়তি বোলার না থাকার জন্যই। তাই এ দিন জেমাইমা রদ্রিগেসকে বসিয়ে রেণুকা সিংহকে খেলায় ভারত।

রেণুকাই বোলিং শুরু করেন। প্রথম বলেই ক্যাচের আবেদন করেছিলেন। তবে নো বল হওয়ায় এমনিতেই লাভ হত না রিভিউ নিয়ে। পরের বলেই চার মেরে ইংল্যান্ডের রণনীতি স্পষ্ট করে দেন ট্যামি বিউমন্ট। পাওয়ার প্লে-তে ইংরেজ ব্যাটারদের আগ্রাসী হতে দেননি ভারতের বোলারেরা। তবে উইকেটও পাননি।

জলপানের বিরতির পর বিউমন্টকে (২২) ফেরান দীপ্তি। আটকানো যাচ্ছিল না অ্যামিকে। ভারতীয় বোলারদের শাসন করে ধারাবাহিক ভাবে রান করে যাচ্ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সেই দীপ্তিকেই আসরে নামতে হয়। ৫৬ করে ফেরেন জোন্স।

ভারতের মতো দ্বিতীয় উইকেটে লমম্বা জুটি গড়ে ইংল্যান্ডও। ইংল্যান্ডের সেরা দুই ব্যাটার হিদার নাইট এবং ন্যাট শিভার-ব্রান্ট ক্রিজ়ে ছিলেন। তাঁদের আটকাতে নাজেহাল হতে হয় ভারতীয় বোলারদের। অতিরিক্ত একজন বোলার খেলালেও যদি তাঁরা ঠিকঠাক জায়গায় বল না রাখতে পারেন, বলে গতি এবং নিয়ন্ত্রণ না থাকে তা হলে যে কোনও লাভ হয় না তা স্পষ্ট হয়ে যায় এ দিনও। নাইট এবং শিভার-ব্রান্টের রান করতে সমস্যাই হচ্ছিল না। অনায়াসে খেলছিলেন ভারতের বোলারদের। নাইটই আক্রমণ করছিলেন। শিভার-ব্রান্ট ধরে খেলছিলেন।

দু’জনের ১১৩ রানের জুটি ভাঙে ৩৯তম ওভারে। শ্রী চরণী ফেরান শিভার-ব্রান্টকে (৩৮)। তবে নাইটকে থামানো যায়নি। তিনি শতরান করেন ৪৫তম ওভারে। মহিলাদের বিশ্বকাপে তাঁর এটি তৃতীয় শতরান। তার পরেই আউট হন নাইট (১০৯)।

শেষ বেলায় পর পর কয়েকটি উইকেট ফেলে ভারত। সোফিয়া ডাঙ্কলে (১৫), এমা ল্যাম্ব (১১), অ্যালিস ক্যাপসে (২), সোফি একলেস্টোন (৩) খেলতে পারেননি। যে ইংল্যান্ডের রান এক সময় ৩৫০-য় পৌঁছে যাবে মনে হচ্ছিল, তাদের ইনিংস শেষ হয় ২৮৮ রানে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement