শাহরুখ খান। —ফাইল চিত্র।
আইপিএলের ছোট নিলাম থেকে মোট ১৩ জন ক্রিকেটার কিনল কলকাতা নাইট রাইডার্স। তাঁদের মধ্যে ছ’জন বিদেশি। কেকেআর মোট ৬৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছে। সব দলের আগে দল গোছানো শেষ করেছেন কেকেআর কর্তৃপক্ষ। সবচেয়ে বেশি ক্রিকেটারও নিয়েছেন বেঙ্কি মাইসোরেরা। আইপিএলের ছোট নিলামে ১০টি দলের মধ্যে সবচেয়ে ভাল পারফর্ম করল শাহরুখ খানের দলই।
কেকেআরের নেওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম পেয়েছেন ক্যামেরন গ্রিন। অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডারকে ২৫ কোটি ২০ লাখ টাকায় দলে নিয়েছেন বেঙ্কি মাইসোরেরা। শ্রীলঙ্কার জোরে বোলার মাথিসা পাথিরানাকে কেকেআর কিনেছে ১৮ কোটি টাকা খরচ করে। কেকেআর রেকর্ড দামে কেনায় উচ্ছ্বসিত অজি অলরাউন্ডার। সমাজমাধ্যমে দেওয়া বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘‘হাই, কেকেআর সমর্থকেরা। আগামী আইপিএলে কেকেআরের সদস্য হতে পেরে আমি খুবই উত্তেজিত। ইডেন গার্ডেন্সে বল করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। আশা করি, আপনাদের একটা দুর্দান্ত মরসুম উপহার দিতে পারব। আমাকে শুধু পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে। এখন আমিও কেকেআর।’’ উত্তেজিত শ্রীলঙ্কার জোরে বোলারও। সমাজমাধ্যমে দেওয়া বার্তায় পাথিরানা বলেছেন, ‘‘হ্যালো, এ বারের আইপিএলে বেগনি-সোনালি জার্সি পরে খেলব। খুব উত্তেজিত লাগছে। আবার ডোয়েন ব্র্যাভোর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাব। সকলকে ধন্যবাদ। আমি কেকেআর।’’
বাংলাদেশের মুস্তাফিজ়ুর রহমানকে
৯ কোটি ২০ লক্ষ টাকায় চেন্নাই সুপার কিংসের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে কেকেআর। নিউ
জ়িল্যান্ডের অলরাউন্ডার রাচিন রবীন্দ্রকেও কিনেছে কেকেআর। সিএসকের ছেড়ে দেওয়া
ভারতীয় বংশোদ্ভুত রাচিনকে নিতে খরচ হয়েছে ২ কোটি টাকা। বেশ কয়েক বছর বাদে কেকেআরের
জার্সিতে দেখা যাবে বাংলার এক ক্রিকেটারকেও। আকাশদীপ এ বার খেলবেন শাহরুখের দলের
হয়ে। ভারতীয় দলের জোরে বোলারকে ন্যূনতম ১ কোটি টাকায় দলে নিয়েছে কেকেআর। নিউ জ়িল্যান্ডের
উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ফিন অ্যালেনকেও নিয়েছেন মাইসোরেরা। তাঁর জন্য খরচ হয়েছে ২ কোটি
টাকা। আর এক কিউয়ি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার টিম সেইফার্টকেও দলে নিয়েছে কেকেআর। তাঁকে
ন্যূনতম ১.৫০ কোটি টাকায় পেয়ে গিয়েছে কলকাতা।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ভারতীয় উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসাবে দলে নেওয়া হয়েছে তেজস্বী সিংহ দাহিয়াকে। দিল্লির ক্রিকেটারকে তাঁকে কিনতে কেকেআর কর্তৃপক্ষের খরচ হয়েছে ৩ কোটি টাকা। উইকেটরক্ষক তেজস্বীকে পেতে ঝাঁপিয়ে ছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং রাজস্থান রয়্যালসও। তবু হাল ছাড়েননি কেকেআর কর্তৃপক্ষ। অথচ দিল্লির ২৫ বছরের ক্রিকেটার কখনও আইপিএল খেলেননি। মূলত ভারতীয় উইকেটরক্ষক হিসাবে দলে নেওয়া হয়েছে তেজস্বীকে। তবে ন্যূনতম মূল্যের ১০গুণ টাকা খরচ করার নেপথ্যে রয়েছে অন্য কারণ। আগ্রাসী ব্যাটার হিসাবে পরিচিত তেজস্বী। দিল্লির হয়ে চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫৬.৫ গড়ে করেছেন ১১৩ রান। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল তেজস্বীর স্ট্রাইক রেট। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৭০। দিল্লি প্রিমিয়ার লিগে ১২ বলে অর্ধশতরান করে নজর কাড়েন। এই প্রতিযোগিতায় তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৯০। করেছেন ৩৩৯ রান। এই প্রতিযোগিতায় তিনি ২০টি চার এবং ২৯টি ছক্কা মারেন। এ ছাড়া দিল্লির একটি প্রতিযোগিতায় ওভারের ছয় বলে ছ’টি ছক্কা মারারও নজির রয়েছে তেজস্বীর। তাঁকে দলের রিজার্ভ ফিনিশার হিসাবে নেওয়া হয়েছে।
দলে এসেছেন উত্তরপ্রদেশের ২৫ বছরের জোরে বোলার কার্তিক ত্যাগী। তাঁকে ন্যূনতম ৩০ লাখ টাকায় পেয়েছেন মাইসোরেরা। গুজরাত টাইটান্স, রাজস্থান রয়্যালস এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে আইপিএলে ২০টি ম্যাচ খেলে ১৫টি উইকেট রয়েছে তাঁর। এ বারের সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে ইডেন গার্ডেন্সে দু’টি ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছেন।
ন্যূনতম ৩০ লাখ টাকায় কেকেআর কিনেছে প্রশান্ত সোলাঙ্কিকেও। মুম্বইয়ের ২৫ বছরের লেগ স্পিনার ২০২২ সালে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে দু’টি ম্যাচ খেলে ২ উইকেট নিয়েছিলেন। তাঁকেও দলে নেওয়া হয়েছে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। ইডেনে তিনটি ম্যাচ খেলে ৩ উইকেট পেয়েছেন। বেশি রান খরচ করেননি।
মহারাষ্ট্রের ৩৪ বছরের ব্যাটার রাহুল ত্রিপাঠীকে ৭৫ লক্ষ টাকায় নিয়েছে কেকেআর। ২০২০ এবং ২০২১ সালে কেকেআরের হয়ে ২৮টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। আইপিএলে সব মিলিয়ে পাঁচটি দলের হয়ে ১০০টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে রাহুলের। তাঁকেও কেনা হয়েছে ন্যূনতম মূল্যে। ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে দিল্লির অলরাউন্ডার স্বার্থক রঞ্জন এবং হায়দরাবাদের অলরাউন্ডার দক্ষ কামরাকে দলে নেওয়া হয়েছে।