IPL 2025 Match Report Today

গোয়েন্‌কার আবদার রাখলেন পন্থেরা, শীর্ষে থাকা গুজরাতকে ধাক্কা বিদায় নেওয়া লখনউয়ের

আইপিএলের প্লে-অফ থেকে বিদায় নিলেও সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটালেন ঋষভ পন্থেরা। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা গুজরাত টাইটান্সকে হারাল লখনউ সুপার জায়ান্টস।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২৫ ২৩:৪১
Share:

হাসি ফিরল ঋষভ পন্থের মুখে। —ফাইল চিত্র।

আইপিএলের প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ার পর দলের ক্রিকেটারদের কাছে একটি আবদার করেছিলেন সঞ্জীব গোয়েন্‌কা। লখনউ সুপার জায়ান্টসের মালিকের আবদার ছিল, বাকি দু’টি ম্যাচে নিজেদের সেরাটা দিতে। জিতে মাথা উঁচু করে ঘরে ফিরতে। সেই আবদার রাখলেন ঋষভ পন্থেরা। শীর্ষে থাকা গুজরাত টাইটান্সকে তাঁদেরই ঘরে মাঠে হারাল লখনউ। পচা শামুকে পা কাটল শুভমন গিলদের। লখনউকে হারাতে পারলে প্রথম দুই দলে শেষ করার পথে অনেকটা এগিয়ে যেতেন তাঁরা। কিন্তু এই হারের ফলে ধাক্কা খেল গুজরাতের বিজয়রথ।

Advertisement

ঘরের মাঠকে দুর্গে পরিণত করেছে গুজরাত। অহমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামেই হবে এ বারের ফাইনাল। এই মাঠ ব্যাটারদের স্বর্গরাজ্য। প্রায় প্রতি ম্যাচে গড়ে ২০০-র বেশি রান হয়। রান তাড়া করতেও বিশেষ সমস্যা হয় না। বৃহস্পতিবারও সেটাই দেখা গেল।

এ বারের আইপিএলে লখনউয়ের সিংহভাগ রান করেছেন এডেন মার্করাম, মিচেল মার্শ ও নিকোলাস পুরান। কমলা টুপির দৌড়ে উপরের দিকেই রয়েছেন তিন ব্যাটার। যে ম্যাচে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন সেই ম্যাচে সমস্যায় পড়েছে দল। অহমদাবাদের মাঠে আরও এক বার দাপট দেখালেন লখনউয়ের তিন ব্যাটার।

Advertisement

গুজরাতের পেসারেরা এই মরসুমে ভাল বল করেছেন। বিশেষ করে দলের ভারতীয় বোলারদের ভাল দেখিয়েছে। নতুন বলে উইকেট নিয়েছেন মহম্মদ সিরাজ। মাঝের ওভারে ধারাবাহিক ভাবে বল করেছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। তিনিই বর্তমানে বেগনি টুপির মালিক। কিন্তু শুরু থেকে আক্রমণ করলে ভাল বোলারদেরও খেই হারিয়ে যায়। সেটাই দেখা গেল এই ম্যাচে। প্লে-অফ থেকে বিদায় নিয়ে বোধহয় ভালই হল লখনউয়ের। কারণ, শুরু থেকে তাদের ব্যাটিং দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কোনও চিন্তা ছাড়াই খেলছে তারা। উপভোগ করছে। ঘরে ফেরার আগে একটা দাগ রেখে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাতে সফল লখনউ।

এই ম্যাচে নজির গড়লেন মার্শ। আইপিএলে নিজের প্রথম শতরান করলেন তিনি। চলতি আইপিএলে এটি কোনও বিদেশি ব্যাটারের প্রথম শতরান। আইপিএলের শতরানের নিরিখে সাধারণত বিদেশিদেরই দাপট দেখা যায়। কিন্তু এ বারের প্রতিযোগিতা আলাদা। এই ম্যাচের আগে সবগুলি শতরান এসেছিল ভারতীয় ব্যাটারদের ব্যাটে। তাতে ভাগ বসালেন মার্শ। রানে ফিরলেন পুরানও। সেই পুরনো পুরানকে দেখা গেল। তাঁদের দাপটে ২৩৫ রান করল লখনউ। এ বারের প্রতিযোগিতায় এটি তাদের দ্বিতীয় সর্বাধিক রান।

তবে ২৩৫ রান করেও চিন্তা ছিল লখনউয়ের। কারণ, গুজরাতের ওপেনিং জুটি। কয়েক দিন আগে এই মাঠেই দিল্লির বিরুদ্ধে ২০১ রান তাড়া করেছেন শুভমন গিল ও সাই সুদর্শন। কমলা টুপির তালিকায় প্রথম দু’টি নাম তাঁদের। এক বার তাঁরা দাঁড়িয়ে গেলে যে এই রানও রক্ষা করা কঠিন হত তা জানতেন পন্থ। তাই পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই জুটি বাঁধার লক্ষ্য নিয়েছিলেন পন্থ। সেই লক্ষ্যে সফল তিনি।

লখনউয়ের বোলিং আক্রমণে পেসারদের আধিক্য। বলা ভাল ভারতীয় পেসারদের। এই ম্যাচে আরও এক ভারতীয় পেসার নজর কাড়লেন। আকাশ মহারাজ সিংহ। হাতে চোট লাগার পরে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থাতেই জস বাটলারকে বোল্ড করলেন তিনি। ক্রিকেটে বলা হয়, ক্যাচ ম্যাচ জেতায়। সেটা যে কতটা সত্যি তা দেখালেন লখনউয়ের ফিল্ডারেরা। সুদর্শন ও শুভমনের উইকেটের ক্ষেত্রে বোলারদের যতটা কৃতিত্ব তার থেকে অনেক বেশি কৃতিত্ব ফিল্ডারদের। নইলে যে ভাবে শুরুটা তাঁরা করেছিলেন তাতে এই ম্যাচ জেতাও কঠিন হত লখনউয়ের।

এ বারের আইপিএলে গুজরাতকে বেশির ভাগ ম্যাচ জিতিয়েছেন দলের প্রথম তিন ব্যাটার। কমলা টুপির তালিকার দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট। এক নম্বরে সাই সুদর্শন (৬৩৮), দু’নম্বরে শুভমন (৬৩৬) ও ছ’নম্বরে বাটলার (৫৩৩) রয়েছেন। শুভমন, সুদর্শন, বাটলারের মধ্যে কেউ অন্তত ১৬-১৭ ওভার পর্যন্ত খেলেছেন। তাঁরা তাড়াতাড়ি ফিরলে দল জিততে পারে কি না সে দিকে নজর ছিল সকলের। সেই পরীক্ষায় পাশ করতে পারল না গুজরাত। শারফেন রাদারফোর্ড, শাহরুখ খান চেষ্টা করলেন বটে। কিন্তু ২৩৬ রান তাড়া করতে পারলেন না। সে দিক থেকে দেখতে গেলে এই ম্যাচ শিক্ষা দিল শুভমনদের। তবে এই ম্যাচে হারের ফলে প্রথম দুই দলের মধ্যে শেষ করতে সমস্যা হতে পারে গুজরাতের। পঞ্জাব ও বেঙ্গালুরু তাদের বাকি দু’টি ম্যাচ জিতলেই প্রথম কোয়ালিফায়ার আর খেলা হবে না শুভমনদের।

আইপিএল থেকে বিদায় নিয়েও গোয়েন্‌কা বলেছিলেন, দলে বেশি কিছু ইতিবাচক দিক দেখেছেন তিনি। বাকি দুই ম্যাচেও সেটা দেখতে চান। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং— তিনটি বিভাগেই এই ম্যাচে সফল লখনউ। পাশাপাশি উন্নতি দেখা গেল পন্থের অধিনায়কত্বেও। গুজরাতের বিরুদ্ধে তাঁর বোলিং পরিবর্তন নজর কাড়ল। বোঝা গেল, সাফল্যের চাপ সরে গেলে পন্থ কী করতে পারেন। গুজরাতের বিরুদ্ধে যে খেলা লখনউ খেলল, তা আগের কয়েকটি ম্যাচে খেলতে পারলে হয়তো আইপিএল থেকে বিদায় নিতে হত না তাদের। প্লে-অফে দেখা যেত লখনউকে। গুজরাতকে হারিয়েও তাই এই আক্ষেপ থেকেই যাবে পন্থ, গোয়েন্‌কার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement